ঢাকা ১২:৩৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিএনপি–জামায়াতের সঙ্গে জোটে লাভ-ক্ষতি নিয়ে নির্বাহী কাউন্সিলের আলোচনায় এনসিপি

ছবি সংগৃহিত

বিএনপি বা জামায়াতের সঙ্গে নির্বাচনী জোটে গেলে লাভ-ক্ষতি কী হতে পারে, তা নিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নির্বাহী কাউন্সিলের সভায় আলোচনা হয়েছে। সভায় নেতাদের একটি অংশ জামায়াতের সঙ্গে নির্বাচনী জোটে যাওয়ার ব্যাপারে মত দিয়েছে। কেউ কেউ বিএনপির সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতায় যাওয়ার পক্ষে কথা বলেছেন। তবে নির্বাহী কাউন্সিলের সভায় অংশ নেওয়া বেশির ভাগ নেতা বিএনপি ও জামায়াতের বাইরে তৃতীয় কোনো জোট করে নির্বাচনে যাওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন।

নির্বাচনী জোটের হিসাবনিকাশ নিয়ে নির্বাহী কাউন্সিলের সভায় আলোচনা হওয়ার বিষয়টি এনসিপির একাধিক সূত্র প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছে। গত শুক্রবার বিকেল সাড়ে চারটা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সভা হয়। এনসিপির নির্বাহী কাউন্সিলের সদস্য এখন ৫১ জন।

দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্যসচিব আখতার হোসেনসহ বেশির ভাগ নেতা শুক্রবারের সভায় অংশ নেন।সভায় অংশ নেওয়া নেতাদের মধ্যে ছয়জনের সঙ্গে কথা বলেছে প্রথম আলো। তাঁরা বলেছেন, বিএনপি ও জামায়াত—দুই দলই আগামী নির্বাচনে এনসিপিকে সঙ্গে রাখতে চায়। বিএনপি বা জামায়াতের সঙ্গে কোনো নির্বাচনী জোট বা সমঝোতায় গেলে লাভ–ক্ষতি কী হতে পারে, তা নিয়ে নেতারা মতামত দিয়েছেন।

বিএনপি ও জামায়াতের বাইরে তৃতীয় কোনো জোটে যাওয়া নিয়েও সভায় কথা হয়েছে।‘নির্বাহী কাউন্সিলের সভায় নির্বাচনকেন্দ্রিক তৎপরতার পাশাপাশি সাংগঠনিক কার্যক্রমে মনোযোগ দেওয়ার কথা হয়েছে। আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহীদের সঙ্গে কথা বলে শিগগিরই দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করবে এনসিপিএনসিপির মিডিয়া সেলের সম্পাদক মুশফিক উস সালেহীন

গণতন্ত্র মঞ্চের ছয় দল হলো গণসংহতি আন্দোলন, নাগরিক ঐক্য, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) ও ভাসানী জনশক্তি পার্টি। এই দলগুলো আওয়ামী লীগ (এখন কার্যক্রম নিষিদ্ধ) সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে ছিল। আসন ছাড় দেওয়ার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বিএনপি সম্প্রতি গণতন্ত্র মঞ্চের সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা চেয়েছে।

গণতন্ত্র মঞ্চের সঙ্গে এনসিপির জোট বা সমঝোতার সম্ভাবনা নিয়েও রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা আছে। গত ৯ অক্টোবর জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রবের বাসায় গণতন্ত্র মঞ্চের নেতাদের সঙ্গে এনসিপি, এবি পার্টি ও গণ অধিকার পরিষদের নেতাদের বৈঠক হয়। এই বৈঠকে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতির পাশাপাশি সম্ভাব্য নির্বাচনী জোট নিয়েও কথা হয়।কারও সঙ্গে নির্বাচনী জোট বা সমঝোতার বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এ বিষয়ে সামনে আরও আলোচনা হবে।

এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরা শারমিনগণতন্ত্র মঞ্চের পাশাপাশি ইসলামপন্থী দলগুলোর সঙ্গেও যোগাযোগ বাড়িয়েছে এনসিপি। সর্বশেষ ৪ অক্টোবর ঢাকার কামরাঙ্গীরচরে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যান এনসিপির নেতারা। দুই দলের বৈঠকে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি, সংসদের প্রস্তাবিত উচ্চকক্ষে পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতি, জুলাই গণহত্যা ও শাপলা হত্যাকাণ্ডের দায়ে আওয়ামী লীগের বিচার এবং জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলের কার্যক্রম স্থগিত করার বিষয়ে ঐকমত্য হয়।
এ ছাড়া বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, মানবাধিকার রক্ষায় যেকোনো আধিপত্যের বিরুদ্ধে একসঙ্গে কাজ করার বিষয়েও আলোচনা হয়। সামনে আরও কয়েকটি দলের সঙ্গে এনসিপি মতবিনিময় করতে পারে।এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরা শারমিন প্রথম আলোকে বলেন, কারও সঙ্গে নির্বাচনী জোট বা সমঝোতার বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এ বিষয়ে সামনে আরও আলোচনা হবে।
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Gojnobi biplob

Popular Post

ফুটবল খেলা ঘিরে সংঘর্ষে চার শিক্ষার্থী আহত

বিএনপি–জামায়াতের সঙ্গে জোটে লাভ-ক্ষতি নিয়ে নির্বাহী কাউন্সিলের আলোচনায় এনসিপি

প্রকাশের সময় : ১১:৩২:৫৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৫

ছবি সংগৃহিত

বিএনপি বা জামায়াতের সঙ্গে নির্বাচনী জোটে গেলে লাভ-ক্ষতি কী হতে পারে, তা নিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নির্বাহী কাউন্সিলের সভায় আলোচনা হয়েছে। সভায় নেতাদের একটি অংশ জামায়াতের সঙ্গে নির্বাচনী জোটে যাওয়ার ব্যাপারে মত দিয়েছে। কেউ কেউ বিএনপির সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতায় যাওয়ার পক্ষে কথা বলেছেন। তবে নির্বাহী কাউন্সিলের সভায় অংশ নেওয়া বেশির ভাগ নেতা বিএনপি ও জামায়াতের বাইরে তৃতীয় কোনো জোট করে নির্বাচনে যাওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন।

নির্বাচনী জোটের হিসাবনিকাশ নিয়ে নির্বাহী কাউন্সিলের সভায় আলোচনা হওয়ার বিষয়টি এনসিপির একাধিক সূত্র প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছে। গত শুক্রবার বিকেল সাড়ে চারটা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সভা হয়। এনসিপির নির্বাহী কাউন্সিলের সদস্য এখন ৫১ জন।

দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্যসচিব আখতার হোসেনসহ বেশির ভাগ নেতা শুক্রবারের সভায় অংশ নেন।সভায় অংশ নেওয়া নেতাদের মধ্যে ছয়জনের সঙ্গে কথা বলেছে প্রথম আলো। তাঁরা বলেছেন, বিএনপি ও জামায়াত—দুই দলই আগামী নির্বাচনে এনসিপিকে সঙ্গে রাখতে চায়। বিএনপি বা জামায়াতের সঙ্গে কোনো নির্বাচনী জোট বা সমঝোতায় গেলে লাভ–ক্ষতি কী হতে পারে, তা নিয়ে নেতারা মতামত দিয়েছেন।

বিএনপি ও জামায়াতের বাইরে তৃতীয় কোনো জোটে যাওয়া নিয়েও সভায় কথা হয়েছে।‘নির্বাহী কাউন্সিলের সভায় নির্বাচনকেন্দ্রিক তৎপরতার পাশাপাশি সাংগঠনিক কার্যক্রমে মনোযোগ দেওয়ার কথা হয়েছে। আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহীদের সঙ্গে কথা বলে শিগগিরই দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করবে এনসিপিএনসিপির মিডিয়া সেলের সম্পাদক মুশফিক উস সালেহীন

গণতন্ত্র মঞ্চের ছয় দল হলো গণসংহতি আন্দোলন, নাগরিক ঐক্য, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) ও ভাসানী জনশক্তি পার্টি। এই দলগুলো আওয়ামী লীগ (এখন কার্যক্রম নিষিদ্ধ) সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে ছিল। আসন ছাড় দেওয়ার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বিএনপি সম্প্রতি গণতন্ত্র মঞ্চের সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা চেয়েছে।

গণতন্ত্র মঞ্চের সঙ্গে এনসিপির জোট বা সমঝোতার সম্ভাবনা নিয়েও রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা আছে। গত ৯ অক্টোবর জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রবের বাসায় গণতন্ত্র মঞ্চের নেতাদের সঙ্গে এনসিপি, এবি পার্টি ও গণ অধিকার পরিষদের নেতাদের বৈঠক হয়। এই বৈঠকে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতির পাশাপাশি সম্ভাব্য নির্বাচনী জোট নিয়েও কথা হয়।কারও সঙ্গে নির্বাচনী জোট বা সমঝোতার বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এ বিষয়ে সামনে আরও আলোচনা হবে।

এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরা শারমিনগণতন্ত্র মঞ্চের পাশাপাশি ইসলামপন্থী দলগুলোর সঙ্গেও যোগাযোগ বাড়িয়েছে এনসিপি। সর্বশেষ ৪ অক্টোবর ঢাকার কামরাঙ্গীরচরে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যান এনসিপির নেতারা। দুই দলের বৈঠকে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি, সংসদের প্রস্তাবিত উচ্চকক্ষে পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতি, জুলাই গণহত্যা ও শাপলা হত্যাকাণ্ডের দায়ে আওয়ামী লীগের বিচার এবং জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলের কার্যক্রম স্থগিত করার বিষয়ে ঐকমত্য হয়।
এ ছাড়া বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, মানবাধিকার রক্ষায় যেকোনো আধিপত্যের বিরুদ্ধে একসঙ্গে কাজ করার বিষয়েও আলোচনা হয়। সামনে আরও কয়েকটি দলের সঙ্গে এনসিপি মতবিনিময় করতে পারে।এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরা শারমিন প্রথম আলোকে বলেন, কারও সঙ্গে নির্বাচনী জোট বা সমঝোতার বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এ বিষয়ে সামনে আরও আলোচনা হবে।