ঢাকা ১২:৩১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

একজন ভোটার ৪০টি পদে ভোট দেবেন

ছবি সংগৃহিত

আসন্ন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে এবার একজন ভোটার ৪০টি পদে ভোট দেবেন। কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের ২৬টি ও হল সংসদের ১৪টি পদে ভোট দিতে সময় নির্ধারণ করা হয়েছে সর্বোচ্চ ১০ মিনিট। ফলে একজন শিক্ষার্থীকে গড়ে প্রতি ২০ সেকেন্ডে একটি করে ভোট দিতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ১৫ অক্টোবর সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। পাঁচটি অনুষদ ভবনে ভোটকেন্দ্র থাকবে ১৫টি ও বুথ থাকবে ৭০০টি।

প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের জন্য আলাদা বুথ থাকবে। তবে পদ বেশি হওয়ায় ভোট দিতে সময় লাগতে পারে। নির্বাচন পরিচালনা কমিটি বলছে, সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ভোটকেন্দ্রের ভিড় ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে।

নির্বাচন পরিচালনা কমিটি বলছে, একজন শিক্ষার্থীকে পাঁচটি ব্যালট পেপার দেওয়া হবে। এর মধ্যে চারটিতে থাকবে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের প্রার্থীদের নাম ও ব্যালট নম্বর। অন্য একটিতে থাকবে হল সংসদের প্রার্থীদের নাম ও ব্যালট নম্বর। এতে ভোটাররা দ্রুত বুঝতে পারবেন কোন ব্যালটে কোন পদ রয়েছে। ভোট গণনা হবে অপটিক্যাল মার্ক রিডার বা ওএমআর পদ্ধতিতে।

প্রকৌশল অনুষদে ভোট দেবেন ৪ হাজার ৩৬ জন। তাঁরা সোহরাওয়ার্দী হলের শিক্ষার্থী। কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের নতুন ভবন শহীদ হৃদয় চন্দ্র তরুয়া ভবনে ভোট দেবেন ৫ হাজার ২৬৩ শিক্ষার্থী। এর মধ্যে শাহজালাল হলের ২ হাজার ৬৬৬ জন, এ এফ রহমান হলের ১ হাজার ৩০৭ ও আলাওল হলের ১ হাজার ২৯০ জন ভোটার রয়েছেন।

বিজ্ঞান অনুষদ ভবনে ভোট দেবেন ৪ হাজার ৫৩৮ শিক্ষার্থী। এর মধ্যে শাহ আমানত হলের ২ হাজার ২৪৭ জন, শহীদ আবদুর রব হলের ১ হাজার ৭৭৫ ও মাস্টারদা সূর্য সেন হলের ৫১৬ জন।

সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভবনে ভোট দেবেন ৬ হাজার ৬০৬ শিক্ষার্থী। যার মধ্যে নবাব ফয়জুন্নেছা হলের ১ হাজার ১৭৯ জন, শামসুন নাহার হলের ২ হাজার ২৯১, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া হলের ২ হাজার ৪৮৭ ও অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান হলের ৬৪৯ জন।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনির উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা প্রতিটি বুথে সর্বোচ্চ ৫০০ শিক্ষার্থীর ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। প্রত্যেক শিক্ষার্থী কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের জন্য ২৬টি ও হল সংসদের জন্য ১৪টিসহ মোট ৪০টি ভোট দিতে পারবেন। আমরা যাচাই করে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জন্য ১০ মিনিট সময় বরাদ্দ করেছি। তবে দুই থেকে তিন মিনিট সময় বেশি লাগলেও সমস্যা হবে না।’

শেষ সময়ে প্রচারণায় ব্যস্ত প্রার্থীরা

নির্বাচনের বাকি আর মাত্র দুই দিন। প্রচারণার সময় আছে মাত্র ৩৬ ঘণ্টা। শেষ সময়ে তাই প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা। আজ রোববার দুপুর ১২টায় দেখা গেছে, রেলস্টেশন থেকে ঝুপড়ি—সবখানেই প্রার্থীরা প্রচারপত্র বিলি করছেন এবং ভোটারদের সমর্থন চাইছেন।

বৈচিত্র্যের ঐক্য প্যানেলের সহসভাপতি (ভিপি) প্রার্থী ধ্রুব বড়ুয়াকে পাওয়া গেল কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ঝুপড়িতে। তিনি শিক্ষার্থীদের নানা প্রশ্নের জবাব দিচ্ছিলেন। এক ফাঁকে প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা সব শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন। নিজেদের প্রতিশ্রুতিগুলো তুলে ধরছেন। শিক্ষার্থীরাও আগ্রহী হয়ে প্রশ্ন ছুড়ে দিচ্ছেন। সব মিলিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশ।

নাট্যকলা বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী বিশ্বনাথ ভৌমিক প্রথম আলোকে বলেন, পরিবেশ এখন পর্যন্ত উৎসবমুখর। দীর্ঘদিন পর নির্বাচন হচ্ছে। তাই শিক্ষার্থীরাও উচ্ছ্বসিত।

কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদে ছাত্রীকল্যাণ সম্পাদক পদে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী উম্মুল আখয়ার। সার্বভৌম শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেল থেকে নির্বাচন করছেন এ শিক্ষার্থী। তাঁর ভাষ্য, নিজস্বতা বজায় রেখে তিনি প্রচারণা চালাচ্ছেন। ভোটারদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া যাচ্ছে।

একই প্যানেলে ভিপি প্রার্থী তাওসিফ মুত্তাকী চৌধুরীকে ব্যস্ত পাওয়া গেল। বিজ্ঞান অনুষদের নিচে প্রচারণা চালাচ্ছিলেন তিনি। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা একটি আধুনিক ক্যাম্পাস গড়তে চান। এ প্রতিশ্রুতি সবাইকে দিচ্ছেন।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বশেষ চাকসু নির্বাচন হয়েছিল ১৯৯০ সালে। দীর্ঘ ৩৫ বছর পর আবার ভোট হতে যাচ্ছে। এবার মোট ভোটার প্রায় ২৭ হাজার, যার মধ্যে ছাত্রী প্রায় সাড়ে ১১ হাজার। তবে ভোটের দিনে ৪০টি ব্যালট হাতে নিয়ে শিক্ষার্থীদের ‘সময়ের সঙ্গে দৌড়’ দেখার অপেক্ষায় সবাই।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Gojnobi biplob

Popular Post

আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যা দিয়ে শিক্ষা বোর্ডের এক কর্মকর্তাকে হেনস্তা

একজন ভোটার ৪০টি পদে ভোট দেবেন

প্রকাশের সময় : ০৩:১৫:২২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৫

ছবি সংগৃহিত

আসন্ন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে এবার একজন ভোটার ৪০টি পদে ভোট দেবেন। কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের ২৬টি ও হল সংসদের ১৪টি পদে ভোট দিতে সময় নির্ধারণ করা হয়েছে সর্বোচ্চ ১০ মিনিট। ফলে একজন শিক্ষার্থীকে গড়ে প্রতি ২০ সেকেন্ডে একটি করে ভোট দিতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ১৫ অক্টোবর সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। পাঁচটি অনুষদ ভবনে ভোটকেন্দ্র থাকবে ১৫টি ও বুথ থাকবে ৭০০টি।

প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের জন্য আলাদা বুথ থাকবে। তবে পদ বেশি হওয়ায় ভোট দিতে সময় লাগতে পারে। নির্বাচন পরিচালনা কমিটি বলছে, সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ভোটকেন্দ্রের ভিড় ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে।

নির্বাচন পরিচালনা কমিটি বলছে, একজন শিক্ষার্থীকে পাঁচটি ব্যালট পেপার দেওয়া হবে। এর মধ্যে চারটিতে থাকবে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের প্রার্থীদের নাম ও ব্যালট নম্বর। অন্য একটিতে থাকবে হল সংসদের প্রার্থীদের নাম ও ব্যালট নম্বর। এতে ভোটাররা দ্রুত বুঝতে পারবেন কোন ব্যালটে কোন পদ রয়েছে। ভোট গণনা হবে অপটিক্যাল মার্ক রিডার বা ওএমআর পদ্ধতিতে।

প্রকৌশল অনুষদে ভোট দেবেন ৪ হাজার ৩৬ জন। তাঁরা সোহরাওয়ার্দী হলের শিক্ষার্থী। কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের নতুন ভবন শহীদ হৃদয় চন্দ্র তরুয়া ভবনে ভোট দেবেন ৫ হাজার ২৬৩ শিক্ষার্থী। এর মধ্যে শাহজালাল হলের ২ হাজার ৬৬৬ জন, এ এফ রহমান হলের ১ হাজার ৩০৭ ও আলাওল হলের ১ হাজার ২৯০ জন ভোটার রয়েছেন।

বিজ্ঞান অনুষদ ভবনে ভোট দেবেন ৪ হাজার ৫৩৮ শিক্ষার্থী। এর মধ্যে শাহ আমানত হলের ২ হাজার ২৪৭ জন, শহীদ আবদুর রব হলের ১ হাজার ৭৭৫ ও মাস্টারদা সূর্য সেন হলের ৫১৬ জন।

সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভবনে ভোট দেবেন ৬ হাজার ৬০৬ শিক্ষার্থী। যার মধ্যে নবাব ফয়জুন্নেছা হলের ১ হাজার ১৭৯ জন, শামসুন নাহার হলের ২ হাজার ২৯১, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া হলের ২ হাজার ৪৮৭ ও অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান হলের ৬৪৯ জন।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনির উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা প্রতিটি বুথে সর্বোচ্চ ৫০০ শিক্ষার্থীর ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। প্রত্যেক শিক্ষার্থী কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের জন্য ২৬টি ও হল সংসদের জন্য ১৪টিসহ মোট ৪০টি ভোট দিতে পারবেন। আমরা যাচাই করে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জন্য ১০ মিনিট সময় বরাদ্দ করেছি। তবে দুই থেকে তিন মিনিট সময় বেশি লাগলেও সমস্যা হবে না।’

শেষ সময়ে প্রচারণায় ব্যস্ত প্রার্থীরা

নির্বাচনের বাকি আর মাত্র দুই দিন। প্রচারণার সময় আছে মাত্র ৩৬ ঘণ্টা। শেষ সময়ে তাই প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা। আজ রোববার দুপুর ১২টায় দেখা গেছে, রেলস্টেশন থেকে ঝুপড়ি—সবখানেই প্রার্থীরা প্রচারপত্র বিলি করছেন এবং ভোটারদের সমর্থন চাইছেন।

বৈচিত্র্যের ঐক্য প্যানেলের সহসভাপতি (ভিপি) প্রার্থী ধ্রুব বড়ুয়াকে পাওয়া গেল কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ঝুপড়িতে। তিনি শিক্ষার্থীদের নানা প্রশ্নের জবাব দিচ্ছিলেন। এক ফাঁকে প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা সব শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন। নিজেদের প্রতিশ্রুতিগুলো তুলে ধরছেন। শিক্ষার্থীরাও আগ্রহী হয়ে প্রশ্ন ছুড়ে দিচ্ছেন। সব মিলিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশ।

নাট্যকলা বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী বিশ্বনাথ ভৌমিক প্রথম আলোকে বলেন, পরিবেশ এখন পর্যন্ত উৎসবমুখর। দীর্ঘদিন পর নির্বাচন হচ্ছে। তাই শিক্ষার্থীরাও উচ্ছ্বসিত।

কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদে ছাত্রীকল্যাণ সম্পাদক পদে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী উম্মুল আখয়ার। সার্বভৌম শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেল থেকে নির্বাচন করছেন এ শিক্ষার্থী। তাঁর ভাষ্য, নিজস্বতা বজায় রেখে তিনি প্রচারণা চালাচ্ছেন। ভোটারদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া যাচ্ছে।

একই প্যানেলে ভিপি প্রার্থী তাওসিফ মুত্তাকী চৌধুরীকে ব্যস্ত পাওয়া গেল। বিজ্ঞান অনুষদের নিচে প্রচারণা চালাচ্ছিলেন তিনি। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা একটি আধুনিক ক্যাম্পাস গড়তে চান। এ প্রতিশ্রুতি সবাইকে দিচ্ছেন।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বশেষ চাকসু নির্বাচন হয়েছিল ১৯৯০ সালে। দীর্ঘ ৩৫ বছর পর আবার ভোট হতে যাচ্ছে। এবার মোট ভোটার প্রায় ২৭ হাজার, যার মধ্যে ছাত্রী প্রায় সাড়ে ১১ হাজার। তবে ভোটের দিনে ৪০টি ব্যালট হাতে নিয়ে শিক্ষার্থীদের ‘সময়ের সঙ্গে দৌড়’ দেখার অপেক্ষায় সবাই।