
জাতীয় কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্সের প্রফেসার ডক্টর এ এইচ এম কামাল বলেন, আর কেউ নিরাপদ নয়। যেহেতু নিরাপদ নই তাই বাঁচার কৌশল হলো নিজেদের পাল্টা আক্রমণের সক্ষমতা অর্জন করা, এবং প্রয়োজনে আক্রমণ করা। সেজন্যে যে আমেরিকা ইসরাইলের মতো হাতে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র থাকতে হবে তা আর জরুরী নয়।
বরং দামে কম কাজে বেশি প্রকৃতির অস্ত্রই বেশি দরকার। ইরান তার প্রমাণ দিচ্ছে। একটি কম দামি মিসাইল ছুঁড়ে বেশি দামি আয়রন ডোমকে ব্যস্ত রাখছে। আবার শুনা যাচ্ছে দাম বেশি হওয়ায় মজুতও কম, তাই ডোমের অস্ত্র শেষ হয়ে আসছে। অন্য দিকে কমদামি অস্ত্রে ইরান এখনো তাদের গোডাউন মজুত করে রেখেছে। তা আবার কার্যকরও বটে। আমরা বাঙ্গালী, আমরা দেখি আর কথা বলি। শিখি না। দেখুন, একই রকম পরিস্থিতিতে আমাদের কী তার বিন্দু পরিমাণও সক্ষমতা আছে? না, নেই। কারণ আমরা ধরে নিয়েছি, আমরা এসবে জড়াব না। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, না জড়াতে চাইলেও কখনো কখনো তা গায়ের উপর এসে পড়ে। আমরা কী পেরেছি মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ রোধ করতে? পারিনি। কারণ হুংকার দিয়ে বলতে পারিনি আমরা বেলেস্টিক মিসাইল ছুঁড়ব। বলব কী করে, আমাদের তো তা নেই।
অন্যদিকে ভারত ঠেলা দিলে হেলে যাবার মানসিকতা নিয়েই বসে আছি। আর শুধু যে প্রতিবেশী তাতো নয়, আক্রমণ আসতে পারে হাজার মাইল দূর থেকেও। এখন কয়েক হাজার মাইল দূর হতে বিছানা টার্গেট করে মিসাইল ছুঁড়া যায়। কী ভয়ংকর বাস্তবতা। কিন্তু আমাদের প্রস্তু্তি কী আছে? সে উত্তর আপনাদের জানা। বলে আর হাসাতে চাই না। কিন্তু দেরি হলেও বোধ জাগা উচিত। প্রস্তুতির জন্যে প্রস্তুত হওয়া প্রয়োজন। প্রস্তুতি চাই দুই ধরনের।
এক, নিজেদের আক্রমণাত্মক অস্ত্র ও সেসবের কার্যকারিতা বাড়ানো। সে জন্যে অস্ত্র কিনে নিজের গুদাম ভড়ার সক্ষমতা আমাদের নেই। তাই নিজেদেরই বানানো শিখতে হবে। সেজন্যে চাই গবেষণা। চাই গবেষণা খাতে বিনিয়োগ। ২০২৫ সালে এসে বুঝা যদিও দেরির বিষয়, তবুও সেই উপলব্ধি আসুক।
দুই, অন্যের আক্রমণ ঠেকানো সক্ষমতা অর্জন। বর্তমান বিশ্বে আকাশ পথের আক্রমণ ঠেকানোই প্রধানতম বিষয়। সেটাও কেনার চেয়ে নিজেদের বানানো টেকনোলজি নিয়ে কাজ করা উচিত। সেখানেও চাই গবেষণা। আর গবেষণা বৃদ্ধি পেলে সবাই তখন বিসিএস বিসিএস করবে না। তারাই গবেষণার বিভিন্ন পর্যায়ের সাথে সম্পৃক্ত হবে। বেধার যথার্থ প্রয়োগ হবে। এ বিষয়ে বর্তমান ও আগামি সরকারের পদক্ষেপ দেখার অপেক্ষায় রইলাম।