ঢাকা ০৩:৪৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নেত্রকোনা জেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন।নেতৃত্ব নির্বাচনে কোন ধারা প্রাধান্য পাবে?

 আগামীকাল নেত্রকোনা জেলা বিএনপির বহুল আলোচিত দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অনুষ্ঠিত এই সম্মেলন ঘিরে নেতাকর্মীদের মাঝে যেমন উৎসাহ-উদ্দীপনা, তেমনি রয়েছে অস্বস্তি ও উৎকণ্ঠা। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে কে নির্বাচিত হবেন, সেটিই এখন আলোচনার মূল কেন্দ্রবিন্দু।

নেত্রকোনা জেলা বিএনপি ঐতিহাসিকভাবেই একটি গুরুত্বপূর্ণ জেলা। এখানকার রাজনীতি প্রায়শই জাতীয় পর্যায়ের রাজনীতিতে প্রতিফলিত হয়। ফলে এ জেলার নেতৃত্ব কার হাতে যাবে, তা কেবল জেলা নয়—কেন্দ্রীয় রাজনীতিতেও তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব ফেলবে। এবারের সম্মেলনকে ঘিরে কেন্দ্রীয় নেতাদের ছায়াপাতও স্পষ্ট।

জেলার বাইরে থেকেও প্রভাবশালী কেন্দ্রীয় নেতাদের সমর্থন কে কতটা পাচ্ছেন, তা প্রার্থীদের অবস্থানকে শক্তিশালী করছে। ফলে স্থানীয় নেতাদের ত্যাগ-তিতিক্ষা ও মাঠ পর্যায়ের গ্রহণযোগ্যতা এবার কতটা মূল্যায়িত হবে, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। সাম্প্রতিক সময়ে সদ্য ঘোষিত কেন্দুয়া উপজেলা ও পৌর বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি নিয়ে দলের ভেতরে দ্বন্দ্ব এখন প্রকাশ্যে এসেছে। বঞ্চিতরা প্রকাশ্যে বিরোধিতা করছে এবং নানা কর্মসূচির মাধ্যমে ক্ষোভ জানাচ্ছে।

এই অভ্যন্তরীণ অসন্তোষ জেলা সম্মেলনকেও সরাসরি প্রভাবিত করছে। নেতৃত্ব নির্বাচনে এ বিরোধ নতুন সমীকরণ তৈরি করবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। একদিকে রয়েছে তৃণমূলের ত্যাগী নেতাদের দাবি—যারা ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় মামলা-হামলা মোকাবিলা করে রাজপথে থেকেছেন। অন্যদিকে, প্রভাবশালী মহলের সমর্থন নিয়ে এগিয়ে আসছেন কিছু প্রার্থী। এই দ্বন্দ্বই সম্মেলনের ভোটের মাঠকে উত্তপ্ত করে তুলেছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, যদি এবারও জেলা বিএনপির নেতৃত্বে “ত্যাগী বনাম প্রভাবশালী” ধারার সংঘাত তীব্র হয়, তবে দলীয় ঐক্য ব্যাহত হওয়ার ঝুঁকি থেকেই যাবে। কিন্তু যদি ত্যাগী, মাঠকর্মীদের আস্থাভাজন নেতৃত্ব উঠে আসে, তবে শুধু জেলা নয়—পুরো ময়মনসিংহ বিভাগেই বিএনপির সাংগঠনিক ভিত্তি মজবুত হবে। অতএব, আগামীকালের সম্মেলন শুধু নেতৃত্ব নির্বাচনের আনুষ্ঠানিকতা নয়—এটি হবে জেলা বিএনপির রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণের এক মাইলফলক।

 

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Gojnobi biplob

Popular Post

গাইবান্ধায় মাদক কারবারি গ্রেফতার

নেত্রকোনা জেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন।নেতৃত্ব নির্বাচনে কোন ধারা প্রাধান্য পাবে?

প্রকাশের সময় : ১১:০৫:৫২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ অগাস্ট ২০২৫

 আগামীকাল নেত্রকোনা জেলা বিএনপির বহুল আলোচিত দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অনুষ্ঠিত এই সম্মেলন ঘিরে নেতাকর্মীদের মাঝে যেমন উৎসাহ-উদ্দীপনা, তেমনি রয়েছে অস্বস্তি ও উৎকণ্ঠা। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে কে নির্বাচিত হবেন, সেটিই এখন আলোচনার মূল কেন্দ্রবিন্দু।

নেত্রকোনা জেলা বিএনপি ঐতিহাসিকভাবেই একটি গুরুত্বপূর্ণ জেলা। এখানকার রাজনীতি প্রায়শই জাতীয় পর্যায়ের রাজনীতিতে প্রতিফলিত হয়। ফলে এ জেলার নেতৃত্ব কার হাতে যাবে, তা কেবল জেলা নয়—কেন্দ্রীয় রাজনীতিতেও তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব ফেলবে। এবারের সম্মেলনকে ঘিরে কেন্দ্রীয় নেতাদের ছায়াপাতও স্পষ্ট।

জেলার বাইরে থেকেও প্রভাবশালী কেন্দ্রীয় নেতাদের সমর্থন কে কতটা পাচ্ছেন, তা প্রার্থীদের অবস্থানকে শক্তিশালী করছে। ফলে স্থানীয় নেতাদের ত্যাগ-তিতিক্ষা ও মাঠ পর্যায়ের গ্রহণযোগ্যতা এবার কতটা মূল্যায়িত হবে, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। সাম্প্রতিক সময়ে সদ্য ঘোষিত কেন্দুয়া উপজেলা ও পৌর বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি নিয়ে দলের ভেতরে দ্বন্দ্ব এখন প্রকাশ্যে এসেছে। বঞ্চিতরা প্রকাশ্যে বিরোধিতা করছে এবং নানা কর্মসূচির মাধ্যমে ক্ষোভ জানাচ্ছে।

এই অভ্যন্তরীণ অসন্তোষ জেলা সম্মেলনকেও সরাসরি প্রভাবিত করছে। নেতৃত্ব নির্বাচনে এ বিরোধ নতুন সমীকরণ তৈরি করবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। একদিকে রয়েছে তৃণমূলের ত্যাগী নেতাদের দাবি—যারা ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় মামলা-হামলা মোকাবিলা করে রাজপথে থেকেছেন। অন্যদিকে, প্রভাবশালী মহলের সমর্থন নিয়ে এগিয়ে আসছেন কিছু প্রার্থী। এই দ্বন্দ্বই সম্মেলনের ভোটের মাঠকে উত্তপ্ত করে তুলেছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, যদি এবারও জেলা বিএনপির নেতৃত্বে “ত্যাগী বনাম প্রভাবশালী” ধারার সংঘাত তীব্র হয়, তবে দলীয় ঐক্য ব্যাহত হওয়ার ঝুঁকি থেকেই যাবে। কিন্তু যদি ত্যাগী, মাঠকর্মীদের আস্থাভাজন নেতৃত্ব উঠে আসে, তবে শুধু জেলা নয়—পুরো ময়মনসিংহ বিভাগেই বিএনপির সাংগঠনিক ভিত্তি মজবুত হবে। অতএব, আগামীকালের সম্মেলন শুধু নেতৃত্ব নির্বাচনের আনুষ্ঠানিকতা নয়—এটি হবে জেলা বিএনপির রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণের এক মাইলফলক।