ঢাকা ০৪:০০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কেন্দুয়ায় গর্ভবতী নারীকে নির্যাতন ও মিথ্যা মামলায় জড়ানোর অভিযোগ

নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলায় এক গর্ভবতী নারীকে মিথ্যা চুরির মামলায় ফাঁসিয়ে জেল খাটানো এবং একাধিকবার শারীরিক নির্যাতনের মাধ্যমে গর্ভপাত ঘটানোর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর স্বামী মো. শহিদুল (৪৫) দুই প্রতিবেশীকে আসামি করে বিজ্ঞ আমলী আদালত, কেন্দুয়ায় একটি নালিশি মামলা দায়ের করেছেন। মামলাটির সি.আর. নং (০১) ২০২৫।

বাদী শহিদুল জানান, আসামিদের সঙ্গে তার পরিবারের দীর্ঘদিনের শত্রুতা রয়েছে। এর জের ধরে গত ১০ জুন ২০২৫ বিকাল ৩টার দিকে আসামিরা তার গর্ভবতী স্ত্রী সেলিনা আক্তারের ওপর হামলা চালায়। এসময় তাকে মাটিতে ফেলে হাঁটু ও লাথি মেরে গুরুতর জখম করা হয়, ফলে তার রক্তক্ষরণ শুরু হয়। পরে আসামিরা ক্ষমতাবলে পুলিশ ডেকে এনে মিথ্যা চুরির অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করায়। জামিনে মুক্তি পেলেও সেলিনার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে।

পরে ২৩ জুলাই ২০২৫ সন্ধ্যায় আসামিরা পুনরায় বাদীর ঘরে প্রবেশ করে সেলিনার ওপর নির্মম নির্যাতন চালায়। এতে পুনরায় রক্তক্ষরণ শুরু হলে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার গর্ভপাত ঘটে।

বাদীর দাবি, আসামিরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে তার গর্ভবতী স্ত্রীকে আঘাত করে গর্ভপাত ঘটিয়েছে। আদালতে দায়েরকৃত মামলায় দণ্ডবিধির ৪৪৭/৩১৩/৩১৬/৩৪ ধারায় আসামিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানানো হয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, গত ৪ জুন দিবাগত রাতে বিদেশ ফেরত আলামিনের ঘরে চুরি হলে, তার ভাগিনা জিহাদ হাসান ও শহিদুলের স্ত্রী সেলিনা আক্তারকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে এবং পরদিন জেল হাজতে পাঠায়। এ ঘটনাকেও কেন্দ্র করে শত্রুতা আরও ঘনীভূত হয়।

ভুক্তভোগীর স্বামী শহিদুল বলেন, “মিথ্যা চুরির অভিযোগে আমার স্ত্রী জেল খেটেছে। আবার আসামিরা তাকে মারধর করে গর্ভপাত ঘটিয়েছে। মেডিকেল কাগজপত্রও আমার কাছে রয়েছে।”

ভুক্তভোগী সেলিনা আক্তার জানান, “জিহাদ হাসান আগেও একাধিকবার চুরি করেছে, সবাই জানে। আমাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে জেল কাটিয়েছে ওরা। শুধু তাই নয়, তাদের মারধরে আমার পেটের বাচ্চাটাও মারা গেছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।”

অন্যদিকে আসামিদের স্বজন আলামিনের মা হালিমা আক্তার দাবি করেন, “চুরির অভিযোগে পুলিশ তাকে নিয়ে গেছে, এতে আমাদের হাত নেই। আর আমরা কাউকে মারিনি।”

এ বিষয়ে কেন্দুয়া থানার এসআই ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম বলেন, “ইতোমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। খুব শিগগিরই সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিজ্ঞ আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।”
You sent

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Gojnobi biplob

Popular Post

বিয়ে বাড়িতে গিয়ে পুকুরে ডুবে তিন শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হবিগঞ্জে

কেন্দুয়ায় গর্ভবতী নারীকে নির্যাতন ও মিথ্যা মামলায় জড়ানোর অভিযোগ

প্রকাশের সময় : ০২:২৮:২০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৫

নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলায় এক গর্ভবতী নারীকে মিথ্যা চুরির মামলায় ফাঁসিয়ে জেল খাটানো এবং একাধিকবার শারীরিক নির্যাতনের মাধ্যমে গর্ভপাত ঘটানোর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর স্বামী মো. শহিদুল (৪৫) দুই প্রতিবেশীকে আসামি করে বিজ্ঞ আমলী আদালত, কেন্দুয়ায় একটি নালিশি মামলা দায়ের করেছেন। মামলাটির সি.আর. নং (০১) ২০২৫।

বাদী শহিদুল জানান, আসামিদের সঙ্গে তার পরিবারের দীর্ঘদিনের শত্রুতা রয়েছে। এর জের ধরে গত ১০ জুন ২০২৫ বিকাল ৩টার দিকে আসামিরা তার গর্ভবতী স্ত্রী সেলিনা আক্তারের ওপর হামলা চালায়। এসময় তাকে মাটিতে ফেলে হাঁটু ও লাথি মেরে গুরুতর জখম করা হয়, ফলে তার রক্তক্ষরণ শুরু হয়। পরে আসামিরা ক্ষমতাবলে পুলিশ ডেকে এনে মিথ্যা চুরির অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করায়। জামিনে মুক্তি পেলেও সেলিনার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে।

পরে ২৩ জুলাই ২০২৫ সন্ধ্যায় আসামিরা পুনরায় বাদীর ঘরে প্রবেশ করে সেলিনার ওপর নির্মম নির্যাতন চালায়। এতে পুনরায় রক্তক্ষরণ শুরু হলে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার গর্ভপাত ঘটে।

বাদীর দাবি, আসামিরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে তার গর্ভবতী স্ত্রীকে আঘাত করে গর্ভপাত ঘটিয়েছে। আদালতে দায়েরকৃত মামলায় দণ্ডবিধির ৪৪৭/৩১৩/৩১৬/৩৪ ধারায় আসামিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানানো হয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, গত ৪ জুন দিবাগত রাতে বিদেশ ফেরত আলামিনের ঘরে চুরি হলে, তার ভাগিনা জিহাদ হাসান ও শহিদুলের স্ত্রী সেলিনা আক্তারকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে এবং পরদিন জেল হাজতে পাঠায়। এ ঘটনাকেও কেন্দ্র করে শত্রুতা আরও ঘনীভূত হয়।

ভুক্তভোগীর স্বামী শহিদুল বলেন, “মিথ্যা চুরির অভিযোগে আমার স্ত্রী জেল খেটেছে। আবার আসামিরা তাকে মারধর করে গর্ভপাত ঘটিয়েছে। মেডিকেল কাগজপত্রও আমার কাছে রয়েছে।”

ভুক্তভোগী সেলিনা আক্তার জানান, “জিহাদ হাসান আগেও একাধিকবার চুরি করেছে, সবাই জানে। আমাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে জেল কাটিয়েছে ওরা। শুধু তাই নয়, তাদের মারধরে আমার পেটের বাচ্চাটাও মারা গেছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।”

অন্যদিকে আসামিদের স্বজন আলামিনের মা হালিমা আক্তার দাবি করেন, “চুরির অভিযোগে পুলিশ তাকে নিয়ে গেছে, এতে আমাদের হাত নেই। আর আমরা কাউকে মারিনি।”

এ বিষয়ে কেন্দুয়া থানার এসআই ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম বলেন, “ইতোমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। খুব শিগগিরই সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিজ্ঞ আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।”
You sent