
নেত্রকোণার আটপাড়ায় উপজেলার তেলিগাতী ইউনিয়নে কাছারপুর গ্রামের অটো চালক কাঞ্চন মিয়া (৪২) কে পূর্ব শত্রুতায় নতুন করে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে মিথ্যা মামলা দায়েরের অভিযোগ উঠেছে বদিনীর বিরুদ্বে।
মলার বিবরণে উল্লেখ করা হয়, গত জুলাই মাসের ৭ তারিখ দিবাগত ভোর রাত ৪.০০ ঘটিকায় তার ছেলে ভিকটিম আমিনুল ইসলাম অরফে আমীন খানকে পাশের বাড়ির কাঞ্চন মিয়া ও অজ্ঞাত আরও তিন জন বাদিনীর বসত ঘরে ডুকিয়া হাত-পা বেঁেধে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর নীলা ফুলা ও হাড় ভাংগা জখম করে। তার ডাক চিৎকারে প্রতিবেশীরা এসে অজ্ঞান অবস্থায় ভিকটিমকে অটোরিক্সায় করিয়া নেত্রকোণা অধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হয় চিকিৎসার জন্য। চিকিৎসা শেষে তাকে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয় প্রতিপক্ষের কাঞ্চন মিয়ার বিরুদ্বে। আটপাড়া থানা মামলা নং ০৯ তারিখ ২০ জুলাই ২০২৫, ধারা ৪৪৭,৩২৩,৩২৫, ৩০৭,৫০৬
সর জমিনে গিয়ে দেখা যায় তার ভিন্ন চিত্র। কাছারপুর গ্রামের মৃত আব্দুল কাদিরের স্ত্রী জোসনা বেগমের সাথে প্রতিবেশী কাঞ্চন মিয়া গংদের জমি সক্রান্ত বিরুধ চলে আসছিল ধীর্ঘদিন ধরে। এরই জেরে প্রতিবেশীকে মানসিক ও অর্থীক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করার জন্য মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানান ভোক্তভোগী ও গ্রামের সাধারণ মানুষ।
মামলায় প্রধান অভিযোক্ত কাঞ্চন মিয়া জানান, ঘটনায় যে দিন ও তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে তা সম্পুর্ণ মিথ্যা ভিত্তিহীন ও বানুয়াট। তাদের সাথে বাড়ির জায়গা নিয়ে ধীর্ঘদিন ধরে বিরুধ চলে আসছে, আমাদেরকে সামাজিক, আর্থীক ও মানসিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করার জন্যই একের পর এক মিথ্যা মামলা দায়ের করা হচ্ছে। ২০১৬ সালে কাঞ্চন মিয়ার বড় ভাইয়ের নামে এই মামলার বাদিনী আটপাড়া থানায় নারী ও শিশু আইনে একটি মামলা দায়ের করেছিল যার নং ৮৪৩/১৫ পরবর্তীতে মামলাটি মিথ্যা প্রমানীত হয়।
প্রতিবেশী হায়দার মিয়া বলেন, যদি রাতে মারপিটের মত কোন ঘটনা কোন ঘটনা ঘটতো তা হলে আমরা প্রতিবেশীরা শুনতাম। সকালে যখন বাদিনী চিৎকার, কান্নাকাটি শুরুকওে তখন আমরা গিয়ে দেখি আমীন খান মাঠিতে অজ্ঞান হয়ে শুয়ে আছে। কি হয়েছে আমাদেরকে কিছু বলেনি। তাকে সুস্থ করার জন্য এই মামলার প্রধান আসামী কাঞ্চন মিয়ার অটোরিক্সায় করিয়া চিকিৎসার জন্য নেত্রকোণা আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়া যাই। তখন কর্তব্যরত ডাক্তার বলে ছেলেটি নেশাগ্রস্থ। নেশার ঘোর কেটে গেলে সে সুস্থ হয়ে যাবে। এ ধরণের রুগী প্রায়ই আমাদের হাসপাতালে আসে। ঘন্টা দুয়েক পর আমিন খান সুস্থ হয়ে উঠে। আমার দেখা মতে তার শরীরে কোন আঘাতের চিহ্ন ছিল না, আমি ভিডিও করে রেখেছি ভিডিওতে তার প্রমাণ রয়েছে। কাঞ্চন মিয়া যদি এধরণের ঘটনা ঘটিয়ে থাকত তাহলে সে তার অটোরিক্সা করে আমিন খানকে নেত্রকোণা হাসপাতালে নিয়ে যাইত না।
প্রতিবেশী ইকরামূল বলেন, তাদের এ ঘটনা সম্পুর্ণ মিথ্যা। তারা পূর্ব পরিকল্পিত ভাবেই এ নাটকের জন্ম দিয়েছে, তার প্রমাণ, আমিন খার ঘটনার এক মাস আগে সে তার ফেইসবুকে পোষ্ট করে আজকের মামলার নাটকয়তা। ছবিতে হাত পা ও মুখ বাধাঁ যে মানুষটিকে দেখা যায় সে আমীন খান না, এটা তার বড় ভাই। ঘটনা দেখানো হয়েছে রাতে কিন্তু এই ছবিটি দিনের। কাঞ্চন মিয়াকে ফাঁসাতে এই নাটক তৈরী করে মা- ছেলে মিলে। এ ধরণের মিত্য ঘটনা সাজিয়ে কাঞ্চন মিয়াকে হয়রানী করার তিব্র নিন্দা জানাই।
প্রতিবেশী ইকরামূল বলেন, কি ঘটনা হয়েছে আমাদেরকে বলে নাই। পাঁচদিন পর এক দরবার শালিশে আমাদেরকে জানানো হয় এ ঘটনা। আমরা গ্রামের মানুষ ঘটনটির সত্যতা না পাওয়ায় দরবারে কোন সুরাহা দিতে পারিনি। পরবর্তীতে তারা থানায় গিয়ে মামলা দায়ের করেছে। আমি যতটুকু বুঝতে পারলাম ঘটনাটি সম্পুর্ণ মিত্যা।
প্রতিবেশী মোফাজ্জল বলেন, ফজরের নামাজ শেষে বাড়িতে আসার পর আমীন খানের মায়ের কান্না শুনে গিয়ে দেখি আমিন খান মাটিতে শুয়ে রয়েছে, তার হাত, পা, মুখে কোন বাধাঁ নেই। আমরা তাকে চিকিৎসার জন্য কাঞ্চনের আটো করেই হাসপাতালে নিয়ে যাই। তখন ডাক্তার বলে নেশা টেশা করেছে হয়তো কিছুক্ষণ পরেই জ্ঞান ফিরে আসবে। আসলেই কিছুক্ষণ পর জ্ঞান ফিরে এসেছে।
প্রতিবেশী মঞ্জুরুল হক বলেন, দুই পক্ষ ধীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে মামলা মোকদ্দমায় লিপ্ত আমার গ্রামবাসী মিমাংশা করতে পারিনি। এখন যে মামলা করেছে কাঞ্চনের বিরুদ্বে তা সম্পুর্ন মিথ্যা এ ধরণের কোন ঘটনা ঘটেছে বলে আমরা জানিনা।
মামলার বাদিনী জোছনা আক্তার বলেন, কাঞ্চন গংদের সাথে ধীর্ঘদিন ধরে আমারজমি নিয়ে বিরোধ রয়েছে। আমার ছেলেকে তারা মারপিট করে অজ্ঞান করে ফেলে রেখেছে। আমি প্রথমে গ্রামের মানুষের কাছে সালিশের মাধ্যমে বিচার চেয়েছি। গ্যামবাসী কোন সুরাহা দিতে না পারায় আমি থানায় মামলা দায়ের করেছি সুবিচার পাওয়ার আশায়।
আটপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা আশরাফুজ্জামান বলেন, আমাদের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছে যথারীতি একজন উপ পরিদর্শককে তদন্ত ভার দেওয়া হয়েছে তিনি সঠিক তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করিবেন।
এলাকাবাসী মনে করেন এটি একটি মিথ্যা মামলা। এ মিথ্যা মামলা থেকে অভিযোক্তকে রেহাই দিয়ে মিথ্য মামলা দিয়ে হয়রানীর কারণে বাদিনীর বিরুদ্বে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নিবে আইন শৃংখালা বাহিনী এমনটিই প্রত্যাশা গ্রামবাসীর।