ঢাকা ০৫:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ৩০ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কেন্দুয়া সাবরেজিস্ট্রি অফিসে জাল দলিল আটক

 নেত্রকোণা জেলার কেন্দুয়া উপজেলা সাবরেজিস্ট্রি অফিসে জালিয়াতির মাধ্যমে তৈরি একটি দলিল আটক করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৪/০৮/২০২৫) দুপুরে দলিলটি রেজিস্ট্রেশনের জন্য জমা দেওয়ার সময় কর্মকর্তারা নথিতে অসঙ্গতি শনাক্ত করেন।

অফিস সূত্রে জানা যায়, এস এম রোবিনা আলী, দিলুয়ারা, স্ব্ররুপা আক্তার,মো:মোখলেছ মিয়া,এস এম সিদ্দিক আলী, মোছাম্মত আলেহা খাতুন সর্ব পিতা কিতাব আলী গ্রাম- সোনাখালি, গড়াডোবা তাদের পিতার নামে থাকা সম্পত্তি আপন এক ভাইকে সম্প্রদান করতে গেলে দলিলের এই অসঙ্গতি ধরা পরে। কেন্দুয়া উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি দলিল লেখক নাসির খন্দকার এর জমা দেয়া সেই দলিলটিতে খতিয়ান ও দাগ নম্বর সঠিকভাবে উল্লেখ থাকলেও জমির মালিকের নাম, স্বাক্ষর এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ভুয়া ছিল। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, জমি দখলের উদ্দেশ্যে একটি সংঘবদ্ধ চক্র কৌশলে দলিলটি প্রস্তুত করেছিল।

এ প্রসঙ্গে নাসির খন্দকার বলেন – সংস্লিষ্ঠ দলিল দাতাগন গতকাল ১৩/০৮/২০২৫ ইং যখন আমাকে দ্বীগুন অর্থ দেয়ার অঙ্গীকার করে তখনই আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে এই কাজে কোন ঘাপলা রয়েছে। কেউ হয়তো আমাকে ফাসানোর উদ্দ্যেশ্যে পরিকল্পিত ভাবেই এই দলিল টি সম্পাদনের জন্য আমার কাছে পাঠিয়েছেন।

গতকাল রাতেই এই বিষয়টা নিয়ে আমি রেজেস্টার মহোদয়ের সাথে শেয়ার করেছি এবং তার পরামর্শ ক্রমেই এই জালিয়াত চক্রটিকে হাতেনাতে ধরার জন্যই দলিল টি আজ সম্পাদনের জন্য সাবমিট করেছি। কেন্দুয়া সাবরেজিস্ট্রার কায়েদে আজম সোহাগ বলেন, “দলিলটি হাতে পাওয়ার পরই আমাদের সন্দেহ হয়।

পরে বিস্তারিত যাচাই-বাছাই করে নিশ্চিত হই যে এটি জাল। দলিল লেখক নাসির খন্দকারের কোন দোষ নেই বলেন দলিলের মালিক তিনি নিজেই সকল দায় স্বীকার করেছেন। দলিলটি জব্দ করা হয়েছে। বিভিন্ন সূত্রে আমরা জেনেছি যে,নেত্রকোনা জেলা সদরে জালজালিয়াতির একটি চক্র রয়েছে যারা দীর্ঘদিন ধরেই এধরণের কর্মকাণ্ড করে আসছে।

কিছুদিন পূর্বে বারহাট্টা উপজেলায় এরকম একটি ঘটনা ঘটেছিলো। বিষয়টি আমার উর্ধতন কতৃপক্ষ ,উপজেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করা হয়েছে এবং আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে।” এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয় সচেতন মহল অভিযোগ করেছেন, দীর্ঘদিন ধরেই একটি চক্র জাল দলিল তৈরি করে প্রতারণার মাধ্যমে জমি হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। তারা দ্রুত এই চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

প্রশাসন সাধারণ মানুষকে জমি কেনাবেচার ক্ষেত্রে দলিল ও খতিয়ান যাচাই-বাছাই করে লেনদেন করার আহ্বান জানিয়েছে, যাতে এ ধরনের জালিয়াতির শিকার না হতে হয়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Gojnobi biplob

Popular Post

পায়ের নূপুর দেখে বোনের লাশ শনাক্ত

কেন্দুয়া সাবরেজিস্ট্রি অফিসে জাল দলিল আটক

প্রকাশের সময় : ১০:৩৩:১৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৫

 নেত্রকোণা জেলার কেন্দুয়া উপজেলা সাবরেজিস্ট্রি অফিসে জালিয়াতির মাধ্যমে তৈরি একটি দলিল আটক করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৪/০৮/২০২৫) দুপুরে দলিলটি রেজিস্ট্রেশনের জন্য জমা দেওয়ার সময় কর্মকর্তারা নথিতে অসঙ্গতি শনাক্ত করেন।

অফিস সূত্রে জানা যায়, এস এম রোবিনা আলী, দিলুয়ারা, স্ব্ররুপা আক্তার,মো:মোখলেছ মিয়া,এস এম সিদ্দিক আলী, মোছাম্মত আলেহা খাতুন সর্ব পিতা কিতাব আলী গ্রাম- সোনাখালি, গড়াডোবা তাদের পিতার নামে থাকা সম্পত্তি আপন এক ভাইকে সম্প্রদান করতে গেলে দলিলের এই অসঙ্গতি ধরা পরে। কেন্দুয়া উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি দলিল লেখক নাসির খন্দকার এর জমা দেয়া সেই দলিলটিতে খতিয়ান ও দাগ নম্বর সঠিকভাবে উল্লেখ থাকলেও জমির মালিকের নাম, স্বাক্ষর এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ভুয়া ছিল। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, জমি দখলের উদ্দেশ্যে একটি সংঘবদ্ধ চক্র কৌশলে দলিলটি প্রস্তুত করেছিল।

এ প্রসঙ্গে নাসির খন্দকার বলেন – সংস্লিষ্ঠ দলিল দাতাগন গতকাল ১৩/০৮/২০২৫ ইং যখন আমাকে দ্বীগুন অর্থ দেয়ার অঙ্গীকার করে তখনই আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে এই কাজে কোন ঘাপলা রয়েছে। কেউ হয়তো আমাকে ফাসানোর উদ্দ্যেশ্যে পরিকল্পিত ভাবেই এই দলিল টি সম্পাদনের জন্য আমার কাছে পাঠিয়েছেন।

গতকাল রাতেই এই বিষয়টা নিয়ে আমি রেজেস্টার মহোদয়ের সাথে শেয়ার করেছি এবং তার পরামর্শ ক্রমেই এই জালিয়াত চক্রটিকে হাতেনাতে ধরার জন্যই দলিল টি আজ সম্পাদনের জন্য সাবমিট করেছি। কেন্দুয়া সাবরেজিস্ট্রার কায়েদে আজম সোহাগ বলেন, “দলিলটি হাতে পাওয়ার পরই আমাদের সন্দেহ হয়।

পরে বিস্তারিত যাচাই-বাছাই করে নিশ্চিত হই যে এটি জাল। দলিল লেখক নাসির খন্দকারের কোন দোষ নেই বলেন দলিলের মালিক তিনি নিজেই সকল দায় স্বীকার করেছেন। দলিলটি জব্দ করা হয়েছে। বিভিন্ন সূত্রে আমরা জেনেছি যে,নেত্রকোনা জেলা সদরে জালজালিয়াতির একটি চক্র রয়েছে যারা দীর্ঘদিন ধরেই এধরণের কর্মকাণ্ড করে আসছে।

কিছুদিন পূর্বে বারহাট্টা উপজেলায় এরকম একটি ঘটনা ঘটেছিলো। বিষয়টি আমার উর্ধতন কতৃপক্ষ ,উপজেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করা হয়েছে এবং আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে।” এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয় সচেতন মহল অভিযোগ করেছেন, দীর্ঘদিন ধরেই একটি চক্র জাল দলিল তৈরি করে প্রতারণার মাধ্যমে জমি হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। তারা দ্রুত এই চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

প্রশাসন সাধারণ মানুষকে জমি কেনাবেচার ক্ষেত্রে দলিল ও খতিয়ান যাচাই-বাছাই করে লেনদেন করার আহ্বান জানিয়েছে, যাতে এ ধরনের জালিয়াতির শিকার না হতে হয়।