ঢাকা ০৫:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ১ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাকসু নির্বাচন নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ নেই শিবিরের

  • রাজশাহি প্রতিনিধী
  • প্রকাশের সময় : ১১:৪১:৩১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫
  • ২০৩ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহিত

রাকসুতে ভোটগ্রহণ শুরুর পর জুবেরী ভবনে স্থাপিত সৈয়দ আমীর আলী হলের কেন্দ্রে ঢুকতে বাধা পান সাংবাদিকেরা। কেন্দ্রের ফটকে দায়িত্বরত পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় কথা বলেও ভেতরে ঢোকার অনুমতি মিলেনি। সকাল ৯টা ২০ মিনিটের দিকে ফটকে উপস্থিত হলে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ হারুনুর রশীদ সাংবাদিকদের তোপের মুখে পড়েন।

এ সময় সাংবাদিকেরা প্রিসাইডিং কর্মকর্তার কাছে এর কারণ জানতে চান। এমনকি দায়িত্বরত সাংবাদিকেরা কেন্দ্রে ঢুকতে পারবেন, রাকসুর নির্বাচন কমিশনের এমন নির্দেশনার লিখিত কপিও তাঁকে দেখানো হয়। সাংবাদিকেরা তাঁর কাছে জানতে চান, কেন তিনি কেন্দ্রে সাংবাদিকদের ঢুকতে দিচ্ছেন না? কেন্দ্রের ভেতরে যে অনিয়ম হচ্ছে না, তাঁর নিশ্চয়তা কী?

তোপের মুখে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা হারুনুর রশীদ দুজন করে সাংবাদিককে কেন্দ্রে ঢোকার অনুমতি দেন। যদিও একই ভবনে স্থাপিত শাহ মখদুম হলের ভোটকেন্দ্রে সাংবাদিকেরা নিয়ম অনুযায়ী ঢুকতে পারছিলেন।

জুবেরী ভবনে দুটি হলের শিক্ষার্থীরা ভোট দিচ্ছেন। এ ভবনের পূর্ব হল রুমে সৈয়দ আমীর আলী হলের শিক্ষার্থীরা ভোট দিচ্ছেন। এখানে মোট ভোটার ১ হাজার ২৩০ জন। আর পশ্চিম হল রুমে শাহ মখদুম হলের শিক্ষার্থীরা ভোট দিচ্ছেন। এখানে ভোটার ১ হাজার ৪০৯ জন জন।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবেরী ভবনে স্থাপিত সৈয়দ আমীর আলী হলের কেন্দ্রে ভোট দেন ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের সহসভাপতি (ভিপি) প্রার্থী মোস্তাকুর রহমান জাহিদছবি: শহীদুল ইসলাম

রাকসুতে ভোট গ্রহণের দিনে বেলা ১১টা পর্যন্ত পরিস্থিতি নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট প্যানেলের সহসভাপতি (ভিপি) প্রার্থী মোস্তাকুর রহমান জাহিদ। তিনি বলেন, ‘আজকের নির্বাচন নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ নেই। আমরা (পরিস্থিতি) পর্যবেক্ষণে রাখছি। তবে প্রশাসনকে বলব, কোনো দলের প্রতি পক্ষপাতমূলক আচরণ যেন না করা হয়।’

আজ বৃহস্পতিবার সকালে ক্যাম্পাসে জুবেরী ভবনে স্থাপিত সৈয়দ আমীর আলী হলের কেন্দ্রে ভোট দিয়ে বেরিয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

মোস্তাকুর রহমান বলেন, ‘আজকে শিক্ষার্থীরা ভোট দিয়ে যে আনন্দটা পাচ্ছে, এই আনন্দটা আমরা আমাদের জীবনে কখনো পাইনি৷ আমরা আশা করছি, আল্লাহ তাআলা আমাদের ভালো ফলাফল দেবেন, ইনশাআল্লাহ৷ শিক্ষার্থীরা আমাদের গ্রহণ করবে৷ শিক্ষার্থীরা আমাদের গ্রহণ করলে আমরা প্রদত্ত ইশতেহার অনুযায়ী সর্বোচ্চ চেষ্টা করে কাজ করব, ইনশাআল্লাহ৷’

নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করতে বহিরাগতরা যেন কোনোভাবে ক্যাম্পাসে ঢুকতে না পারে, সে আহ্বান জানিয়ে শিবিরের এ প্রার্থী বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনকে বলব, নির্বাচনী যে ধারা, বহিরাগত প্রবেশ নিষেধ, সেটা সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে তারা যেন ভূমিকা রাখে।’

নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হওয়ার প্রত্যাশার কথা জানিয়ে মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, প্রশাসনের বিষয়ে পর্যবেক্ষণ আমরা এখনই দেব না। সুষ্ঠুভাবে ফলাফল না হওয়া পর্যন্ত প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের ব্যাপারে আমরা কোনো কিছুই বলতে চাই না। তারা কোনো দলের প্রতি পক্ষপাতমূলক আচরণ যদি কিছু সময়ের জন্যও করে, সেটার ব্যাপারে আমরা অভিযোগ জানাব এবং পদক্ষেপ নেব।

ভোট দিতে পেরে উচ্ছ্বসিত তাঁরা। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টায় স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু প্রশাসনিক ভবনের সামনেছবি: সাজিদ হোসেনঘষা দিলেই অমোচনীয় কালি উঠে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ভোটাররাছবি: প্রথম আলো

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেটে ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনে ভোট দেওয়ার পর হাতের আঙুলে দেওয়া কালি উঠে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ভোটারেরা।

প্রথম অভিযোগ আসে বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ প্রশাসনিক ভবনের কেন্দ্র থেকে।এই কেন্দ্রে শিক্ষার্থী আবু আল হেলাল ভোট দিয়ে বেরিয়ে বলেন, ‘ঘষা দিলে কালি উঠে যাচ্ছে। পানি দিয়ে ঘষা দিলে উঠে যাবে। তবে বেশ কয়েকটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে ভোট দিতে হচ্ছে। তাই জালিয়াতির সুযোগ থাকবে না।’

ভোট দিয়ে বেরিয়ে আইন বিভাগের শিক্ষার্থী শাহ পরান বলেন, ‘কালিটা উঠে যাচ্ছে। এটা পার্মানেন্ট হলে ভালো হতো। ভোট জালিয়াতির সুযোগ কম। তারপরও এই বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা দরকার ছিল। সবচে ভালো কালিটা আনা দরকার ছিল। আমরা জেনেছি কালিটি আমদানি করা হয়েছে।’

এই কেন্দ্রে ভোট দেন ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী ফজলে রাব্বি মো. ফাহিম রেজা। তিনি বলেন, ‘অনেক শিক্ষার্থী অমোচনীয় কালির ব্যাপারে অভিযোগ করছেন। এটা মুছে যাচ্ছে। এটা মুছে যাওয়ার কথা ছিল না। আমরা এ ব্যাপারে কমিশনকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেছি।’

শহীদুল্লাহ্ প্রশাসনিক ভবনের শহীদ জিয়াউর রহমান হলের কেন্দ্রের দায়িত্বে আছে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা অধ্যাপক নুরুল ইসলাম। কালি উঠে যাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটা আমরা ভেরিফাই করবো। কালি উঠে যায় কি না এটা চেক করা হয়নি। এটা আমাদের দায়িত্ব না।’

এর আগে গতকাল বুধবার দুপুরে সিনেট ভবনে নির্বাচন কমিশন সংবাদ সম্মেলন করে। সেখানে অমোচনীয় কালির প্রসঙ্গ উঠে।নির্বাচন কমিশনার মোস্তফা কামাল আকন্দ তখন বলেন, তাঁরা শুধু অমোচনীয় কালির ওপর নির্ভর করছেন না। তাঁরা থ্রিডি লেভেলের (ত্রিমাত্রিক পর্যায়) নিরাপত্তাব্যবস্থা রেখেছেন। যে শিক্ষার্থী পরিচয়পত্র নিয়ে আসবেন, প্রথমে সেটির অথেন্টিসিটি যাচাই করা হবে। শুধু পরিচয়পত্র হলেই হবে না, তাঁর ভোটার আইডির জন্য একটি ইউনিক আইডি দেওয়া হয়েছে। সেটিও যাচাই করা হবে। এরপর তাঁর ছবিযুক্ত ভোটার আইডি আছে

। সেটি তাঁরা মিলিয়ে ভোটারের পরিচয় নিশ্চিত করবেন। এ বিষয়ে কোনো ধরনের সন্দেহ তৈরি হলে একটি বিশেষ গোপনীয় কিউআর কোডও আছে। পুরো প্রক্রিয়াকে তাঁরা বলছেন, থ্রি ডাইমেনশনাল সিকিউরিটি (ত্রিমাত্রিক নিরাপত্তা)। এটিকে অগ্রাহ্য করে কোনো অবস্থাতেই ভোট জালিয়াতি করার সুযোগ নেই।

এ ব্যাপারে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এফ নজরুল ইসলামকে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। তবে শহীদুল্লাহ্ একাডেমিক ভবন পরিদর্শনে এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদার সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের কয়েকটি লেভেলে চেক করা হচ্ছে। কালি হচ্ছে শেষ ধাপ।

নির্বাচনে ভোট গ্রহন শুরু হয়েছে সকাল নয়টা থেকে। ভোট প্রদানের ক্ষেত্রে নারী ভোটারদের উপস্থিতি ছিল বেশ। কয়েকজনকে দেখা যায় মুখে আলপনা করে ভোট উৎসবে যোগ দিতে। বেগম খালেদা জিয়া হল, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ১৬ অক্টোবরছবি: হাসান মাহমুদ

রবীন্দ্র ভবনের সামনে আজ বৃহস্পতিবার সকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী শেখ নূর উদ্দিন আবিরছবি: প্রথম আলো

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ভিপি (সহসভাপতি) প্রার্থী শেখ নূর উদ্দিন আবির অভিযোগ করেছেন, ভোটকেন্দ্রে তাঁর পোলিং এজেন্টরা ছবিসহ ভোটার তালিকা দেখতে পারছেন না৷ ছবিসহ ভোটার তালিকা দেখতে না পারলে ভোটের স্বচ্ছতা কীভাবে নিশ্চিত হবে বলেও প্রশ্ন তোলেন তিনি।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল নয়টার একটু পরে ভোট গ্রহণ শুরু হওয়ার পরপর জুবেরী ভবন কেন্দ্রের সামনে আসেন ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী। সেখানে দাঁড়িয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন তিনি। এরপর তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গেও কথা বলেন।

শেখ নূর উদ্দিন আবির বলেন, ‘আমার পোলিং এজেন্টরা ফোন করে জানাচ্ছেন, কেন্দ্রগুলোয় তাঁদের ছবিসহ ভোটার তালিকা দেখতে দেওয়া হচ্ছে না। তালিকায় ছবি থাকলেও সেটা শুধু রিটার্নিং কর্মকর্তারা দেখতে পারছেন। ছবিসহ ভোটার তালিকা যদি এজেন্টরা দেখতে না পান, তাহলে তাঁরা কীভাবে ভোটার শনাক্ত করবেন। জাল ভোট হচ্ছে কি না, সেটা কীভাবে শনাক্ত করবেন?’

ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী আরও বলেন, ‘বিষয়টা নিয়ে আমি রাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার এফ নজরুল ইসলাম স্যারের সঙ্গে কথা বললাম। তিনি বললেন যে, এটা তিনি ব্যবস্থা করছেন।’তিনি আরও বলেন, নির্বাচন ঘিরে পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এর পরও কোনো পক্ষ বা প্রার্থী ক্যাম্পাসে বহিরাগত ঢোকানোর চেষ্টা করলে আমরা অবশ্যই প্রতিহত করব। শিক্ষার্থীরা সেটা মেনে নেবে না।

শেখ নূর উদ্দিন আবির আরও বলেন, ‘দীর্ঘ এক মাস প্রচার করলাম। আমরা জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। শিক্ষার্থীরা যথেষ্ট ইতিবাচকভাবে আমাদের সাড়া দিয়েছেন।’জুবেরী ভবনের সামনে ভোট দিতে সারিবদ্ধভাবে লাইনে দাঁড়িয়েছেন শিক্ষার্থীরাছবি: প্রথম আলো

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে।আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা ১০ মিনিটে শুরু হওয়া এই ভোট চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। ভোট দিতে সারিবদ্ধভাবে লাইনে দাঁড়িয়েছেন শিক্ষার্থীরা। প্রথমবারের মতো ভোট দিতে পেরে উচ্ছ্বাসপ্রকাশ করেছেন তাঁরা।

সকাল ৮টা ৫০ মিনিটে ভোটকেন্দ্র জাবির ইবনে হাইয়ান প্রশাসনিক ভবনের সামনে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী সুমন মিয়া। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটাই আমার জীবনের প্রথম ভোট। উৎসবমুখর পরিবেশের মধ্য দিয়ে ভোট দিতে যাচ্ছি, খুবই ভালো লাগছে।’

পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী স্বপ্নীল তালুকদার প্রথম আলোকে বলেন, দীর্ঘ ৩৫ বছর ভোট হচ্ছে। আমার জীবনের এটিই প্রথম ভোট। এখনও শিক্ষার্থীরা তেমন আসেনি। আশা করছি, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোটগ্রহণ হবে।

জাবির ইবনে হাইয়ান ভবনের ভোট কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মোতাহার হোসেন বলেন, নয়টায় ভোট শুরু হওয়ার কথা থাকলেও ১০ মিনিট পর ভোট শুরু হচ্ছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবেই ভোট গ্রহণ হবে।ভোট শুরুর আগে জুবেরী ভবনে এসে অভিযোগ জানান স্বতন্ত্র এক প্রার্থী। আজ বৃহস্পতিবার সকালেছবি: প্রথম আলো

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শুরুর আগে সকাল সাড়ে আটটার দিকে জুবেরী ভবন কেন্দ্রের সামনে এসে পুলিশ ও নির্বাচনী দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছিলেন স্বতন্ত্র ভিপি প্রার্থী আবদুল্লাহ আল ফাহাদ৷

জানতে চাইলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘জুবেরী ভবনে স্থাপিত দুটি কেন্দ্রে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে শুধু কমিউনিটি পুলিশকে দায়িত্বে রাখা হয়েছে৷ বিএনসিসি, রোভার স্কাউটসহ অন্য স্বেচ্ছাসেবক সংগঠনের কাউকে জুবেরী ভবন কেন্দ্রে রাখা হয়নি৷ কমিউনিটি পুলিশ সংগঠনের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ফেরদৌস ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোটের প্যানেল থেকে শহীদ শামসুজ্জোহা হল সংসদে সদস্য পদে নির্বাচন করছেন৷ ফলে শুধু কমিউনিটি পুলিশের সদস্যরা এই কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করলে নির্বাচন প্রভাবিত হওয়ার আশঙ্কা আছে৷ আমরা চাই, এখানে মিশ্র স্বেচ্ছাসেবক দেওয়া হোক৷ অর্থাৎ, বিএনসিসি, রোভার স্কাউট থেকেও স্বেচ্ছাসেবক রাখা হোক৷ এ বিষয়টিই জানাতে এসেছি৷’

পরে সকাল পৌনে নয়টার দিকে জুবেরী ভবনে স্থাপিত শাহমখদুম হল কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা সৈয়দ সরওয়ার জাহান ফটকে এলে তাঁর কাছে বিষয়টি তুলে ধরেন আবদুল্লাহ আল ফাহাদ৷ কিছুক্ষণ কথা বলার পর প্রিসাইডিং কর্মকর্তা এই প্রার্থীকে বলেন, ‘আমরা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চাই না৷ যাঁরা স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করতে চান, তাঁদের কেন্দ্রের নির্দিষ্ট সীমানার বাইরে থাকতে হবে৷ কেন্দ্রের সীমানার মধ্যে সাংবাদিক, পুলিশ ও নির্বাচনী কর্মকর্তারা ছাড়া অন্য কেউ নির্দিষ্ট সীমানার মধ্যে থাকতে পারবেন না৷’ প্রিসাইডিং কর্মকর্তার কথায় আশ্বস্ত হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী ফাহাদ চলে যান৷

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ , হল সংসদ ও সিনেটে ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনে ভোট দিতে সকাল থেকে দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষা করছেন ভোটাররা। শহীদ হবিবুর রহমান হল, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী, ১৬ অক্টোবরছবি: হাসান মাহমুদব্যালট বাক্স সিলগালা করা হচ্ছে। মাদার বখ্শ হল, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, ১৬ অক্টোবরছবি: হাসান মাহমুদ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের ভোট গ্রহণ আর কিছুক্ষণ পরেই শুরু হওয়ার কথা।ভোর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছোট-বড় সব ফটকে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সরবরাহ করা পরিচয়পত্র ছাড়া কাউকে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাতটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনোদপুর গেটে পুলিশের উপস্থিতি দেখা গেছে।এই ফটক দিয়ে সকালেই পরিচয়পত্র দেখিয়ে ঢুকছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী রুহুল আমিন। তিনি বলেন, সকাল সকাল ভোট দিতে চান। তাই আগেই যাচ্ছেন।

সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত টানা ভোট গ্রহণ চলবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮টি প্রশাসনিক ভবন এবং একটি গেস্টহাউজের মোট ১৭টি কেন্দ্রে ভোট চলবে। মোট বুথ ৯৯০টি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Gojnobi biplob

Popular Post

রাকসু নির্বাচন নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ নেই শিবিরের

প্রকাশের সময় : ১১:৪১:৩১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫

ছবি সংগৃহিত

রাকসুতে ভোটগ্রহণ শুরুর পর জুবেরী ভবনে স্থাপিত সৈয়দ আমীর আলী হলের কেন্দ্রে ঢুকতে বাধা পান সাংবাদিকেরা। কেন্দ্রের ফটকে দায়িত্বরত পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় কথা বলেও ভেতরে ঢোকার অনুমতি মিলেনি। সকাল ৯টা ২০ মিনিটের দিকে ফটকে উপস্থিত হলে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ হারুনুর রশীদ সাংবাদিকদের তোপের মুখে পড়েন।

এ সময় সাংবাদিকেরা প্রিসাইডিং কর্মকর্তার কাছে এর কারণ জানতে চান। এমনকি দায়িত্বরত সাংবাদিকেরা কেন্দ্রে ঢুকতে পারবেন, রাকসুর নির্বাচন কমিশনের এমন নির্দেশনার লিখিত কপিও তাঁকে দেখানো হয়। সাংবাদিকেরা তাঁর কাছে জানতে চান, কেন তিনি কেন্দ্রে সাংবাদিকদের ঢুকতে দিচ্ছেন না? কেন্দ্রের ভেতরে যে অনিয়ম হচ্ছে না, তাঁর নিশ্চয়তা কী?

তোপের মুখে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা হারুনুর রশীদ দুজন করে সাংবাদিককে কেন্দ্রে ঢোকার অনুমতি দেন। যদিও একই ভবনে স্থাপিত শাহ মখদুম হলের ভোটকেন্দ্রে সাংবাদিকেরা নিয়ম অনুযায়ী ঢুকতে পারছিলেন।

জুবেরী ভবনে দুটি হলের শিক্ষার্থীরা ভোট দিচ্ছেন। এ ভবনের পূর্ব হল রুমে সৈয়দ আমীর আলী হলের শিক্ষার্থীরা ভোট দিচ্ছেন। এখানে মোট ভোটার ১ হাজার ২৩০ জন। আর পশ্চিম হল রুমে শাহ মখদুম হলের শিক্ষার্থীরা ভোট দিচ্ছেন। এখানে ভোটার ১ হাজার ৪০৯ জন জন।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবেরী ভবনে স্থাপিত সৈয়দ আমীর আলী হলের কেন্দ্রে ভোট দেন ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের সহসভাপতি (ভিপি) প্রার্থী মোস্তাকুর রহমান জাহিদছবি: শহীদুল ইসলাম

রাকসুতে ভোট গ্রহণের দিনে বেলা ১১টা পর্যন্ত পরিস্থিতি নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট প্যানেলের সহসভাপতি (ভিপি) প্রার্থী মোস্তাকুর রহমান জাহিদ। তিনি বলেন, ‘আজকের নির্বাচন নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ নেই। আমরা (পরিস্থিতি) পর্যবেক্ষণে রাখছি। তবে প্রশাসনকে বলব, কোনো দলের প্রতি পক্ষপাতমূলক আচরণ যেন না করা হয়।’

আজ বৃহস্পতিবার সকালে ক্যাম্পাসে জুবেরী ভবনে স্থাপিত সৈয়দ আমীর আলী হলের কেন্দ্রে ভোট দিয়ে বেরিয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

মোস্তাকুর রহমান বলেন, ‘আজকে শিক্ষার্থীরা ভোট দিয়ে যে আনন্দটা পাচ্ছে, এই আনন্দটা আমরা আমাদের জীবনে কখনো পাইনি৷ আমরা আশা করছি, আল্লাহ তাআলা আমাদের ভালো ফলাফল দেবেন, ইনশাআল্লাহ৷ শিক্ষার্থীরা আমাদের গ্রহণ করবে৷ শিক্ষার্থীরা আমাদের গ্রহণ করলে আমরা প্রদত্ত ইশতেহার অনুযায়ী সর্বোচ্চ চেষ্টা করে কাজ করব, ইনশাআল্লাহ৷’

নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করতে বহিরাগতরা যেন কোনোভাবে ক্যাম্পাসে ঢুকতে না পারে, সে আহ্বান জানিয়ে শিবিরের এ প্রার্থী বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনকে বলব, নির্বাচনী যে ধারা, বহিরাগত প্রবেশ নিষেধ, সেটা সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে তারা যেন ভূমিকা রাখে।’

নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হওয়ার প্রত্যাশার কথা জানিয়ে মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, প্রশাসনের বিষয়ে পর্যবেক্ষণ আমরা এখনই দেব না। সুষ্ঠুভাবে ফলাফল না হওয়া পর্যন্ত প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের ব্যাপারে আমরা কোনো কিছুই বলতে চাই না। তারা কোনো দলের প্রতি পক্ষপাতমূলক আচরণ যদি কিছু সময়ের জন্যও করে, সেটার ব্যাপারে আমরা অভিযোগ জানাব এবং পদক্ষেপ নেব।

ভোট দিতে পেরে উচ্ছ্বসিত তাঁরা। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টায় স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু প্রশাসনিক ভবনের সামনেছবি: সাজিদ হোসেনঘষা দিলেই অমোচনীয় কালি উঠে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ভোটাররাছবি: প্রথম আলো

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেটে ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনে ভোট দেওয়ার পর হাতের আঙুলে দেওয়া কালি উঠে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ভোটারেরা।

প্রথম অভিযোগ আসে বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ প্রশাসনিক ভবনের কেন্দ্র থেকে।এই কেন্দ্রে শিক্ষার্থী আবু আল হেলাল ভোট দিয়ে বেরিয়ে বলেন, ‘ঘষা দিলে কালি উঠে যাচ্ছে। পানি দিয়ে ঘষা দিলে উঠে যাবে। তবে বেশ কয়েকটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে ভোট দিতে হচ্ছে। তাই জালিয়াতির সুযোগ থাকবে না।’

ভোট দিয়ে বেরিয়ে আইন বিভাগের শিক্ষার্থী শাহ পরান বলেন, ‘কালিটা উঠে যাচ্ছে। এটা পার্মানেন্ট হলে ভালো হতো। ভোট জালিয়াতির সুযোগ কম। তারপরও এই বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা দরকার ছিল। সবচে ভালো কালিটা আনা দরকার ছিল। আমরা জেনেছি কালিটি আমদানি করা হয়েছে।’

এই কেন্দ্রে ভোট দেন ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী ফজলে রাব্বি মো. ফাহিম রেজা। তিনি বলেন, ‘অনেক শিক্ষার্থী অমোচনীয় কালির ব্যাপারে অভিযোগ করছেন। এটা মুছে যাচ্ছে। এটা মুছে যাওয়ার কথা ছিল না। আমরা এ ব্যাপারে কমিশনকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেছি।’

শহীদুল্লাহ্ প্রশাসনিক ভবনের শহীদ জিয়াউর রহমান হলের কেন্দ্রের দায়িত্বে আছে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা অধ্যাপক নুরুল ইসলাম। কালি উঠে যাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটা আমরা ভেরিফাই করবো। কালি উঠে যায় কি না এটা চেক করা হয়নি। এটা আমাদের দায়িত্ব না।’

এর আগে গতকাল বুধবার দুপুরে সিনেট ভবনে নির্বাচন কমিশন সংবাদ সম্মেলন করে। সেখানে অমোচনীয় কালির প্রসঙ্গ উঠে।নির্বাচন কমিশনার মোস্তফা কামাল আকন্দ তখন বলেন, তাঁরা শুধু অমোচনীয় কালির ওপর নির্ভর করছেন না। তাঁরা থ্রিডি লেভেলের (ত্রিমাত্রিক পর্যায়) নিরাপত্তাব্যবস্থা রেখেছেন। যে শিক্ষার্থী পরিচয়পত্র নিয়ে আসবেন, প্রথমে সেটির অথেন্টিসিটি যাচাই করা হবে। শুধু পরিচয়পত্র হলেই হবে না, তাঁর ভোটার আইডির জন্য একটি ইউনিক আইডি দেওয়া হয়েছে। সেটিও যাচাই করা হবে। এরপর তাঁর ছবিযুক্ত ভোটার আইডি আছে

। সেটি তাঁরা মিলিয়ে ভোটারের পরিচয় নিশ্চিত করবেন। এ বিষয়ে কোনো ধরনের সন্দেহ তৈরি হলে একটি বিশেষ গোপনীয় কিউআর কোডও আছে। পুরো প্রক্রিয়াকে তাঁরা বলছেন, থ্রি ডাইমেনশনাল সিকিউরিটি (ত্রিমাত্রিক নিরাপত্তা)। এটিকে অগ্রাহ্য করে কোনো অবস্থাতেই ভোট জালিয়াতি করার সুযোগ নেই।

এ ব্যাপারে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এফ নজরুল ইসলামকে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। তবে শহীদুল্লাহ্ একাডেমিক ভবন পরিদর্শনে এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদার সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের কয়েকটি লেভেলে চেক করা হচ্ছে। কালি হচ্ছে শেষ ধাপ।

নির্বাচনে ভোট গ্রহন শুরু হয়েছে সকাল নয়টা থেকে। ভোট প্রদানের ক্ষেত্রে নারী ভোটারদের উপস্থিতি ছিল বেশ। কয়েকজনকে দেখা যায় মুখে আলপনা করে ভোট উৎসবে যোগ দিতে। বেগম খালেদা জিয়া হল, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ১৬ অক্টোবরছবি: হাসান মাহমুদ

রবীন্দ্র ভবনের সামনে আজ বৃহস্পতিবার সকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী শেখ নূর উদ্দিন আবিরছবি: প্রথম আলো

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ভিপি (সহসভাপতি) প্রার্থী শেখ নূর উদ্দিন আবির অভিযোগ করেছেন, ভোটকেন্দ্রে তাঁর পোলিং এজেন্টরা ছবিসহ ভোটার তালিকা দেখতে পারছেন না৷ ছবিসহ ভোটার তালিকা দেখতে না পারলে ভোটের স্বচ্ছতা কীভাবে নিশ্চিত হবে বলেও প্রশ্ন তোলেন তিনি।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল নয়টার একটু পরে ভোট গ্রহণ শুরু হওয়ার পরপর জুবেরী ভবন কেন্দ্রের সামনে আসেন ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী। সেখানে দাঁড়িয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন তিনি। এরপর তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গেও কথা বলেন।

শেখ নূর উদ্দিন আবির বলেন, ‘আমার পোলিং এজেন্টরা ফোন করে জানাচ্ছেন, কেন্দ্রগুলোয় তাঁদের ছবিসহ ভোটার তালিকা দেখতে দেওয়া হচ্ছে না। তালিকায় ছবি থাকলেও সেটা শুধু রিটার্নিং কর্মকর্তারা দেখতে পারছেন। ছবিসহ ভোটার তালিকা যদি এজেন্টরা দেখতে না পান, তাহলে তাঁরা কীভাবে ভোটার শনাক্ত করবেন। জাল ভোট হচ্ছে কি না, সেটা কীভাবে শনাক্ত করবেন?’

ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী আরও বলেন, ‘বিষয়টা নিয়ে আমি রাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার এফ নজরুল ইসলাম স্যারের সঙ্গে কথা বললাম। তিনি বললেন যে, এটা তিনি ব্যবস্থা করছেন।’তিনি আরও বলেন, নির্বাচন ঘিরে পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এর পরও কোনো পক্ষ বা প্রার্থী ক্যাম্পাসে বহিরাগত ঢোকানোর চেষ্টা করলে আমরা অবশ্যই প্রতিহত করব। শিক্ষার্থীরা সেটা মেনে নেবে না।

শেখ নূর উদ্দিন আবির আরও বলেন, ‘দীর্ঘ এক মাস প্রচার করলাম। আমরা জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। শিক্ষার্থীরা যথেষ্ট ইতিবাচকভাবে আমাদের সাড়া দিয়েছেন।’জুবেরী ভবনের সামনে ভোট দিতে সারিবদ্ধভাবে লাইনে দাঁড়িয়েছেন শিক্ষার্থীরাছবি: প্রথম আলো

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে।আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা ১০ মিনিটে শুরু হওয়া এই ভোট চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। ভোট দিতে সারিবদ্ধভাবে লাইনে দাঁড়িয়েছেন শিক্ষার্থীরা। প্রথমবারের মতো ভোট দিতে পেরে উচ্ছ্বাসপ্রকাশ করেছেন তাঁরা।

সকাল ৮টা ৫০ মিনিটে ভোটকেন্দ্র জাবির ইবনে হাইয়ান প্রশাসনিক ভবনের সামনে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী সুমন মিয়া। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটাই আমার জীবনের প্রথম ভোট। উৎসবমুখর পরিবেশের মধ্য দিয়ে ভোট দিতে যাচ্ছি, খুবই ভালো লাগছে।’

পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী স্বপ্নীল তালুকদার প্রথম আলোকে বলেন, দীর্ঘ ৩৫ বছর ভোট হচ্ছে। আমার জীবনের এটিই প্রথম ভোট। এখনও শিক্ষার্থীরা তেমন আসেনি। আশা করছি, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোটগ্রহণ হবে।

জাবির ইবনে হাইয়ান ভবনের ভোট কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মোতাহার হোসেন বলেন, নয়টায় ভোট শুরু হওয়ার কথা থাকলেও ১০ মিনিট পর ভোট শুরু হচ্ছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবেই ভোট গ্রহণ হবে।ভোট শুরুর আগে জুবেরী ভবনে এসে অভিযোগ জানান স্বতন্ত্র এক প্রার্থী। আজ বৃহস্পতিবার সকালেছবি: প্রথম আলো

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শুরুর আগে সকাল সাড়ে আটটার দিকে জুবেরী ভবন কেন্দ্রের সামনে এসে পুলিশ ও নির্বাচনী দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছিলেন স্বতন্ত্র ভিপি প্রার্থী আবদুল্লাহ আল ফাহাদ৷

জানতে চাইলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘জুবেরী ভবনে স্থাপিত দুটি কেন্দ্রে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে শুধু কমিউনিটি পুলিশকে দায়িত্বে রাখা হয়েছে৷ বিএনসিসি, রোভার স্কাউটসহ অন্য স্বেচ্ছাসেবক সংগঠনের কাউকে জুবেরী ভবন কেন্দ্রে রাখা হয়নি৷ কমিউনিটি পুলিশ সংগঠনের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ফেরদৌস ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোটের প্যানেল থেকে শহীদ শামসুজ্জোহা হল সংসদে সদস্য পদে নির্বাচন করছেন৷ ফলে শুধু কমিউনিটি পুলিশের সদস্যরা এই কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করলে নির্বাচন প্রভাবিত হওয়ার আশঙ্কা আছে৷ আমরা চাই, এখানে মিশ্র স্বেচ্ছাসেবক দেওয়া হোক৷ অর্থাৎ, বিএনসিসি, রোভার স্কাউট থেকেও স্বেচ্ছাসেবক রাখা হোক৷ এ বিষয়টিই জানাতে এসেছি৷’

পরে সকাল পৌনে নয়টার দিকে জুবেরী ভবনে স্থাপিত শাহমখদুম হল কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা সৈয়দ সরওয়ার জাহান ফটকে এলে তাঁর কাছে বিষয়টি তুলে ধরেন আবদুল্লাহ আল ফাহাদ৷ কিছুক্ষণ কথা বলার পর প্রিসাইডিং কর্মকর্তা এই প্রার্থীকে বলেন, ‘আমরা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চাই না৷ যাঁরা স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করতে চান, তাঁদের কেন্দ্রের নির্দিষ্ট সীমানার বাইরে থাকতে হবে৷ কেন্দ্রের সীমানার মধ্যে সাংবাদিক, পুলিশ ও নির্বাচনী কর্মকর্তারা ছাড়া অন্য কেউ নির্দিষ্ট সীমানার মধ্যে থাকতে পারবেন না৷’ প্রিসাইডিং কর্মকর্তার কথায় আশ্বস্ত হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী ফাহাদ চলে যান৷

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ , হল সংসদ ও সিনেটে ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনে ভোট দিতে সকাল থেকে দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষা করছেন ভোটাররা। শহীদ হবিবুর রহমান হল, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী, ১৬ অক্টোবরছবি: হাসান মাহমুদব্যালট বাক্স সিলগালা করা হচ্ছে। মাদার বখ্শ হল, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, ১৬ অক্টোবরছবি: হাসান মাহমুদ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের ভোট গ্রহণ আর কিছুক্ষণ পরেই শুরু হওয়ার কথা।ভোর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছোট-বড় সব ফটকে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সরবরাহ করা পরিচয়পত্র ছাড়া কাউকে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাতটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনোদপুর গেটে পুলিশের উপস্থিতি দেখা গেছে।এই ফটক দিয়ে সকালেই পরিচয়পত্র দেখিয়ে ঢুকছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী রুহুল আমিন। তিনি বলেন, সকাল সকাল ভোট দিতে চান। তাই আগেই যাচ্ছেন।

সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত টানা ভোট গ্রহণ চলবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮টি প্রশাসনিক ভবন এবং একটি গেস্টহাউজের মোট ১৭টি কেন্দ্রে ভোট চলবে। মোট বুথ ৯৯০টি।