ঢাকা ০৪:২৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ধারের টাকা ফেরত না দিয়ে উল্টো ভাতিজার নামে নারী নির্যাতনের মামলা

 নেত্রকোণার কেন্দুয়ার চিরাং ইউনিয়নের ছিলিমপুর গ্রামের তুষার আপন চাচার বাড়ি রক্ষায় ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা ধার দিয়েও আজ চরম বিপাকে পড়েছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রতিবেশীর সঙ্গে জমি-সংক্রান্ত বিরোধে মামলা হেরে নুরুজ্জামান নামের ওই চাচার বাড়ি আদালতের নির্দেশে ভাঙার প্রস্তুতি চলছিল। এ সময় কেন্দুয়া রিপোর্টার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোঃ লাইমুন হোসেন ভূঁইয়ার মধ্যস্থতায় সমঝোতার উদ্যোগ হয়। উপস্থিত সরকারি কর্মকর্তাদের সামনেই ১০ লাখ টাকার বিনিময়ে বিরোধ নিষ্পত্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

অর্থ সংকটে থাকা নুরুজ্জামানের হয়ে তার ভাতিজা তুষার মানবিক কারণে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা জোগাড় করে দেন। শর্ত ছিল—এ টাকা পরে ফেরত দেওয়া হবে। কিন্তু পরবর্তীতে বাদীপক্ষ সমঝোতা মানতে অস্বীকৃতি জানালে জায়গার দলিল হস্তান্তরও আর হয়নি। এদিকে ধার দেওয়া টাকা ফেরত চাইলে নুরুজ্জামান তালবাহানা শুরু করেন।

অভিযোগ রয়েছে, তার ছেলেরা তুষারের অনুপস্থিতিতে বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করে এবং তার বাবাকে মারধর করে ৭/৮ লাখ টাকার ক্ষতি সাধন করে। পরে গ্রাম্য সালিসে এক মাসের মধ্যে টাকা ফেরতের নির্দেশ দেওয়া হলেও তা মানেননি নুরুজ্জামান, উল্টো তুষারের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের মামলা করেন।

শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) পুনরায় গ্রামবাসী দুলাল মেম্বারের সভাপতিত্বে সালিস ডেকে সিদ্ধান্ত নেয়—নুরুজ্জামানকে আজই ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা ফেরত দিতে হবে, অন্যথায় পরিবারসহ গ্রাম ছাড়তে হবে।

টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে গ্রামবাসী তার বাড়িতে তালা ঝুলিয়ে দেয়। চিরাং ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের মেম্বার বিল্লাল মিয়া বলেন, “তুষারের উপকারের পরও নুরুজ্জামান টাকা ফেরত না দিয়ে উল্টো মিথ্যা মামলা ও ভাঙচুর করেছে। তাই গ্রামবাসী বাধ্য হয়েই কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এ বিষয়ে কেন্দুয়া রিপোর্টার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোঃ লাইমুন হোসেন ভূঁইয়া বলেন, “আমি ছিলিমপুর গ্রামের সম্মানার্থে গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে বিষয়টি সমঝোতার চেষ্টা করেছিলাম। এমনকি সফলও হয়েছিলাম।

সকলেই সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছিল। কিন্তু পরবর্তীতে জানতে পারি- শহরের দুয়েকজন পদধারী ব্যক্তির ইন্ধনে বা অসহযোগিতায় সেটি পূর্ণ বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি।

এখনও ছিলিমপুর গ্রামের মামলার বাদিনীর (ভদ্র মহিলা) কাছে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে আমার দেওয়া সাড়ে ৬ লাখ টাকার চেক রয়ে গেছে।” আশা করি প্রশাসন ও এলাকাবাসীর পুনঃ প্রচেষ্টায় বিষয়টি সমাধান হবে ইনশাআল্লাহ।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Gojnobi biplob

Popular Post

মাহিন হত্যা মামলায় আরো এক আসামি গ্রেফতার হলো ফটিকছড়িতে

ধারের টাকা ফেরত না দিয়ে উল্টো ভাতিজার নামে নারী নির্যাতনের মামলা

প্রকাশের সময় : ১১:৩০:৩০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

 নেত্রকোণার কেন্দুয়ার চিরাং ইউনিয়নের ছিলিমপুর গ্রামের তুষার আপন চাচার বাড়ি রক্ষায় ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা ধার দিয়েও আজ চরম বিপাকে পড়েছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রতিবেশীর সঙ্গে জমি-সংক্রান্ত বিরোধে মামলা হেরে নুরুজ্জামান নামের ওই চাচার বাড়ি আদালতের নির্দেশে ভাঙার প্রস্তুতি চলছিল। এ সময় কেন্দুয়া রিপোর্টার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোঃ লাইমুন হোসেন ভূঁইয়ার মধ্যস্থতায় সমঝোতার উদ্যোগ হয়। উপস্থিত সরকারি কর্মকর্তাদের সামনেই ১০ লাখ টাকার বিনিময়ে বিরোধ নিষ্পত্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

অর্থ সংকটে থাকা নুরুজ্জামানের হয়ে তার ভাতিজা তুষার মানবিক কারণে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা জোগাড় করে দেন। শর্ত ছিল—এ টাকা পরে ফেরত দেওয়া হবে। কিন্তু পরবর্তীতে বাদীপক্ষ সমঝোতা মানতে অস্বীকৃতি জানালে জায়গার দলিল হস্তান্তরও আর হয়নি। এদিকে ধার দেওয়া টাকা ফেরত চাইলে নুরুজ্জামান তালবাহানা শুরু করেন।

অভিযোগ রয়েছে, তার ছেলেরা তুষারের অনুপস্থিতিতে বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করে এবং তার বাবাকে মারধর করে ৭/৮ লাখ টাকার ক্ষতি সাধন করে। পরে গ্রাম্য সালিসে এক মাসের মধ্যে টাকা ফেরতের নির্দেশ দেওয়া হলেও তা মানেননি নুরুজ্জামান, উল্টো তুষারের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের মামলা করেন।

শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) পুনরায় গ্রামবাসী দুলাল মেম্বারের সভাপতিত্বে সালিস ডেকে সিদ্ধান্ত নেয়—নুরুজ্জামানকে আজই ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা ফেরত দিতে হবে, অন্যথায় পরিবারসহ গ্রাম ছাড়তে হবে।

টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে গ্রামবাসী তার বাড়িতে তালা ঝুলিয়ে দেয়। চিরাং ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের মেম্বার বিল্লাল মিয়া বলেন, “তুষারের উপকারের পরও নুরুজ্জামান টাকা ফেরত না দিয়ে উল্টো মিথ্যা মামলা ও ভাঙচুর করেছে। তাই গ্রামবাসী বাধ্য হয়েই কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এ বিষয়ে কেন্দুয়া রিপোর্টার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোঃ লাইমুন হোসেন ভূঁইয়া বলেন, “আমি ছিলিমপুর গ্রামের সম্মানার্থে গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে বিষয়টি সমঝোতার চেষ্টা করেছিলাম। এমনকি সফলও হয়েছিলাম।

সকলেই সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছিল। কিন্তু পরবর্তীতে জানতে পারি- শহরের দুয়েকজন পদধারী ব্যক্তির ইন্ধনে বা অসহযোগিতায় সেটি পূর্ণ বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি।

এখনও ছিলিমপুর গ্রামের মামলার বাদিনীর (ভদ্র মহিলা) কাছে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে আমার দেওয়া সাড়ে ৬ লাখ টাকার চেক রয়ে গেছে।” আশা করি প্রশাসন ও এলাকাবাসীর পুনঃ প্রচেষ্টায় বিষয়টি সমাধান হবে ইনশাআল্লাহ।