ঢাকা ১২:৩৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে সারা শরির ঝাঁঝরা মিলছে না সরকারি কোন সুবিধা।

নেত্রকোনার মদনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে মহিন নামের স্কুল ছাত্রের সারা শরীর ঝাঁঝরা হয়েছিল এখন দুটি গুলি রয়েছে শরীরের ভিতরে ব্যাথা যন্ত্রণায় ভুগছেন মিলছে না সরকারি সুবিধা।

নেত্রকোনা সদর আধুনিক হসপিটালে চিকিৎসায় রাবার বুলেট বের করা সহ সকল কাগজপত্র রয়েছে স্কুল ছাত্র মহীনের। পুলিশের গুলিতে ঝাঁঝরা স্কুল ছাত্র মহিনের বাড়ি নেত্রকোনা জেলার আটপাড়া উপজেলা সুখারী ইউনিয়নের নীলকন্ঠপুর গ্রামের বাসিন্দা।

গুলিবিদ্ধ স্কুল ছাত্র মহীনকে প্রশাসন থেকে সহযোগিতার আশ্বাসও দিয়েছেন। আহত পরিবারের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, গত ১৮ জুলাই সকাল ১১টা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে উত্তাল মদন পৌর শহরের মগড়া নদীর ব্রিজ পাশে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলন চলাকালীন সময়ে গুলিবিদ্ধ হন স্কুল ছাত্র মহিন। একদিকে শিক্ষার্থী, অন্যদিকে তৎকালীন সরকার সমর্থিত ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও পুলিশ বাহিনী।

তিন ঘণ্টাব্যাপী চলে ধাওয়া, পাল্টা ধাওয়া। এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা কোণঠাসা হয়ে পড়লে পুলিশ ব্যাপক গুলি ছুড়তে থাকে। এতে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়। এদের মধ্যে আটপাড়া উপজেলা সুখারী ধর্মরায় উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণী শিক্ষার্থীর মহিনের শরীরে একাধিক স্থানে গুলিবিদ্ধ হয়। 

পরে মদন হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে গুলি বের করতে না পারায়, নিয়ে যায় আটপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ওখানেও গুলি বের করতে অসমত প্রকাশ করায় পরে নিয়ে যাওয়া হয় নেত্রকোনা জেলা সদর হাসপাতালে সেখানে চিকিৎসকরা গুলি বের করতে সম্মত হয় তারপরও দুইটি গুলি তার শরীরে রয়ে যায়। সেখানে কিছু দিন চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে চলে আসে।

গলার ডানপাশে এখনো গুলি আছে চিকিৎসকরা বলেছেন অপারেশন করে গুলি বের করতে হবে। ফলে সঠিক চিকিৎসা না করায় ছেলে নিয়ে রয়েছে দুশ্চিন্তা পরিবারের আর্থিক দৈন্যতার জন্যে উন্নত চিকিৎসাও করাতে পারছে না পরিবারটি।

আহত মহিন এর মা বলেন, প্রাথমিকভাবে সদর হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়েছি অনেকটি গুলি বের করেছে শরীর থেকে। এরই মধ্যে কয়েকটি সংগঠন থেকে কিছু সহযোগিতা করেছে কিন্তু সেটা পর্যাপ্ত না। শুনছি, সরকারিভাবে চিকিৎসা করবে কিন্তু সেটার কোন প্রতিফলন দেখছি না।

আমাদের আর্থিক তেমন সচ্ছলতা নেই, তাই সরকারি সহযোগিতা কামনা করছি। ১৫ বছর বয়সী মহিন এর কৃষক বাবা মোঃ কামাল মিয়া বলেন, অন্যের বাড়িতে দিনমজুরি কাজ করে কোনরকম সংসার চালাই তার পক্ষেও ছেলের উন্নত চিকিৎসা করানো সম্ভব না। ছাত্র আন্দোলনের আহত ছাত্র মহিন বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে জীবনের মায়া ত্যাগ করে যারা গুলির সামনে নিজেদের বুক উঁচিয়ে দিয়েছেন, তাদের সুচিকিৎসার জন্যে এগিয়ে আসতে হবে সরকারকে।

না হলে অধরাই থেকে যাবে আমাদের স্বপ্ন। ডাক্তারের কাগজপত্র সঠিক থাকার পরও মিলছে না ১৮ জুলাই ২০২৪ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পুলিশের গুলিতে আহত ছাত্র মহীনের সরকারি সুযোগ সুবিধা। মদন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইউএনও মোঃ অলিদুজ্জামান জানান, ঘটনাটি মদন উপজেলা ঘটেছে কিন্তু তার বাড়ি আটপাড়া উপজেলা সে তার নিজ উপজেলায় আবেদন করতে বলেন।

এরপরও আমরা তাকে সহযোগিতা করব যদি মদন উপজেলা থেকে কোন সুযোগ থাকে দেখি। আটপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ শাহনূর রহমান বলেন, জেলা প্রশাসক স্যার মাধ্যমে আবেদন করেছে তো, নির্দেশনা মোতাবেক যাচাই-বাছাই করে দেখে আমরা জেলায় রিপোর্ট পাঠিয়ে দিব।

এ বিষয়ে নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক বলেন, আমার কাছে আবেদন করেছ যাচাই-বাছাই করে দেখি। ডাক্তারি পরীক্ষা যাচাই বাছাইয়ের জন্য আমি সিভিল সার্জন এর কাছে তার কাগজ পাঠানো হবে। তারপর আহত জুলাই যুদ্ধ হিসাবে তাকে সহযোগিতা করা হবে।[

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Gojnobi biplob

Popular Post

মাহিন হত্যা মামলায় আরো এক আসামি গ্রেফতার হলো ফটিকছড়িতে

ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে সারা শরির ঝাঁঝরা মিলছে না সরকারি কোন সুবিধা।

প্রকাশের সময় : ১১:২৩:০২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

নেত্রকোনার মদনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে মহিন নামের স্কুল ছাত্রের সারা শরীর ঝাঁঝরা হয়েছিল এখন দুটি গুলি রয়েছে শরীরের ভিতরে ব্যাথা যন্ত্রণায় ভুগছেন মিলছে না সরকারি সুবিধা।

নেত্রকোনা সদর আধুনিক হসপিটালে চিকিৎসায় রাবার বুলেট বের করা সহ সকল কাগজপত্র রয়েছে স্কুল ছাত্র মহীনের। পুলিশের গুলিতে ঝাঁঝরা স্কুল ছাত্র মহিনের বাড়ি নেত্রকোনা জেলার আটপাড়া উপজেলা সুখারী ইউনিয়নের নীলকন্ঠপুর গ্রামের বাসিন্দা।

গুলিবিদ্ধ স্কুল ছাত্র মহীনকে প্রশাসন থেকে সহযোগিতার আশ্বাসও দিয়েছেন। আহত পরিবারের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, গত ১৮ জুলাই সকাল ১১টা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে উত্তাল মদন পৌর শহরের মগড়া নদীর ব্রিজ পাশে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলন চলাকালীন সময়ে গুলিবিদ্ধ হন স্কুল ছাত্র মহিন। একদিকে শিক্ষার্থী, অন্যদিকে তৎকালীন সরকার সমর্থিত ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও পুলিশ বাহিনী।

তিন ঘণ্টাব্যাপী চলে ধাওয়া, পাল্টা ধাওয়া। এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা কোণঠাসা হয়ে পড়লে পুলিশ ব্যাপক গুলি ছুড়তে থাকে। এতে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়। এদের মধ্যে আটপাড়া উপজেলা সুখারী ধর্মরায় উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণী শিক্ষার্থীর মহিনের শরীরে একাধিক স্থানে গুলিবিদ্ধ হয়। 

পরে মদন হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে গুলি বের করতে না পারায়, নিয়ে যায় আটপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ওখানেও গুলি বের করতে অসমত প্রকাশ করায় পরে নিয়ে যাওয়া হয় নেত্রকোনা জেলা সদর হাসপাতালে সেখানে চিকিৎসকরা গুলি বের করতে সম্মত হয় তারপরও দুইটি গুলি তার শরীরে রয়ে যায়। সেখানে কিছু দিন চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে চলে আসে।

গলার ডানপাশে এখনো গুলি আছে চিকিৎসকরা বলেছেন অপারেশন করে গুলি বের করতে হবে। ফলে সঠিক চিকিৎসা না করায় ছেলে নিয়ে রয়েছে দুশ্চিন্তা পরিবারের আর্থিক দৈন্যতার জন্যে উন্নত চিকিৎসাও করাতে পারছে না পরিবারটি।

আহত মহিন এর মা বলেন, প্রাথমিকভাবে সদর হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়েছি অনেকটি গুলি বের করেছে শরীর থেকে। এরই মধ্যে কয়েকটি সংগঠন থেকে কিছু সহযোগিতা করেছে কিন্তু সেটা পর্যাপ্ত না। শুনছি, সরকারিভাবে চিকিৎসা করবে কিন্তু সেটার কোন প্রতিফলন দেখছি না।

আমাদের আর্থিক তেমন সচ্ছলতা নেই, তাই সরকারি সহযোগিতা কামনা করছি। ১৫ বছর বয়সী মহিন এর কৃষক বাবা মোঃ কামাল মিয়া বলেন, অন্যের বাড়িতে দিনমজুরি কাজ করে কোনরকম সংসার চালাই তার পক্ষেও ছেলের উন্নত চিকিৎসা করানো সম্ভব না। ছাত্র আন্দোলনের আহত ছাত্র মহিন বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে জীবনের মায়া ত্যাগ করে যারা গুলির সামনে নিজেদের বুক উঁচিয়ে দিয়েছেন, তাদের সুচিকিৎসার জন্যে এগিয়ে আসতে হবে সরকারকে।

না হলে অধরাই থেকে যাবে আমাদের স্বপ্ন। ডাক্তারের কাগজপত্র সঠিক থাকার পরও মিলছে না ১৮ জুলাই ২০২৪ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পুলিশের গুলিতে আহত ছাত্র মহীনের সরকারি সুযোগ সুবিধা। মদন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইউএনও মোঃ অলিদুজ্জামান জানান, ঘটনাটি মদন উপজেলা ঘটেছে কিন্তু তার বাড়ি আটপাড়া উপজেলা সে তার নিজ উপজেলায় আবেদন করতে বলেন।

এরপরও আমরা তাকে সহযোগিতা করব যদি মদন উপজেলা থেকে কোন সুযোগ থাকে দেখি। আটপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ শাহনূর রহমান বলেন, জেলা প্রশাসক স্যার মাধ্যমে আবেদন করেছে তো, নির্দেশনা মোতাবেক যাচাই-বাছাই করে দেখে আমরা জেলায় রিপোর্ট পাঠিয়ে দিব।

এ বিষয়ে নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক বলেন, আমার কাছে আবেদন করেছ যাচাই-বাছাই করে দেখি। ডাক্তারি পরীক্ষা যাচাই বাছাইয়ের জন্য আমি সিভিল সার্জন এর কাছে তার কাগজ পাঠানো হবে। তারপর আহত জুলাই যুদ্ধ হিসাবে তাকে সহযোগিতা করা হবে।[