ঢাকা ১২:১০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মদনে ১০দিন ধরে অবরুদ্ধ ইউপি সদস্যের পরিবার

 নেত্রকোনার মদনে জায়গা কেনা নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে এক ইউপি সদস্যসহ তার পরিবারকে ১০দিন ধরে অবরুদ্ধ করে রেখেছে প্রতিবেশী প্রভাবশালীর লোকজন।

এ নিয়ে ইউপি সদস্য কুহিনুর আক্তার প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তরে একটি লিখি অভিযোগ দায়ের করেন।   অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গোবিন্দশ্রী ইউনিয়নের ১.২.৩ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী সদস্য কূহিনূর আক্তারের সাথে পাশের বাড়ির প্রতিবেশী প্রভাবশালী সাব্বির, শাহাজান,আলমঙ্গীর, আজাহান ও ফরিদ মিয়ার লোকজনের মধ্যে বাড়ির জায়গা নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত বিরোধ চলে আসছে।

এরই জের ধরে  গত ১১ আগষ্ট ২০২৫ ইং তারিখে ইউপি সদস্য কূহিনুরের সাথে এ নিয়ে সাব্বির মিয়া, শাহজাহান, আলমঙ্গীর, আজাহান,ফরিদ,নাজমা,কাসেম,হাজু,গাজী মিয়া, হাজু মিয়া,ভুলনা,সাব্বুল মিয়া,সোমা, হাসনা আক্তারের সাথে কথা কাটাকাটি হয়।  এক পর্যায়ে ইউপি সদস্য কূহিনুর আক্তারের বাড়ি থেকে বের হওয়ার একমাত্র যাতায়াতের রাস্তাটি বন্ধ করে দেয় তারা। গত ১০ দিন যাবত অবরুদ্ধ করে রেখেছে ইউপি সদস্য কূহিনুর আক্তারের পরিবারকে।

কূহিনুর আক্তার অভিযোগে আরও উল্লেখ করেন, আমার একটি মেয়ে গর্ভবতী সে চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের নিকট যেতে পারছে না, একটি মেয়ে মাদ্রাসায় চাকুরি করে সেখানেও যেতে পারতেছে না। আমার একটি নাতি তার মাদ্রাসা যাওয়া বন্ধ রয়েছে। এর প্রতিকার চেয়ে ওই নারী সদস্য নিরুপায় হয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।

এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে বুধবার ইউপি সদস্যের বাড়িতে গেলে বাড়ির উঠুন বরাবর রাস্তা বন্ধ করে রাখার দৃশ্য পাওয়া যায়।  এ সময় স্থানীয় সাংবাদিকগণ তাদের পরিচয় দিয়ে কূহিনুরের বাড়ি যেতে চাইলেও ২০ মিনিট অপেক্ষা করেও কূহিনূরের বাড়িতে প্রবেশ করতে পারেনি। তারপর বিকল্প ভাবে তাদের বাড়িতে প্রবেশ করেন সাংবাদিকরা।

তবে অভিযোগের বিষয়টি সাংবাদিকদের নিকট শুনে এলাকার বিএনপির দলীয় নেতৃবৃন্দ বিষয়টি নিস্পতির জন্য কূহিনুরের বাড়িতে যান এবং চলাচল করার জন্য সামান্য রাস্তা খোলে দেন। এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য কূহিনুর আক্তার জানান, কয়েকজন সাংবাদিক আমাদের বাড়িতে আসার পর স্থানীয় কয়েক জন বিএনপি নেতা আমাদের বাড়িতে আসে। আমাদের এমন অবস্থা দেখে তারা এক-দেড় হাত বেড়া খুলে দেয় যাতায়াত করার জন্য।তবে নেতারা বাড়ি থেকে চলে যেতেই তারা আবার চলাচলের জন্য নিষেধ দেয় এবং বলে লজ্জা থাকলে আমাদের  বাড়ি দিয়ে তরা আইবে না।

 থানা থেকে লোকজন আইছিল। উনারা আমাদেরকে ইউএনও স্যারের সাথে দেখা করতে বলেছে। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত সাব্বুল মিয়া বলেন, মহিলা মহিলাদের মধ্যে ঝগড়া হয়েছে। কিন্তু কি নিয়ে হয়েছে এ বিষয়ে আমি বলতে পারব না। রাস্তা বন্ধ করলেন কেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি কোন সদুত্তর দেয়নি।  

ইউনিয়ন বিএনপি নেতা মোবারক হোসেন জানান, আপনারা চলে যাওয়ার সাথে সাথেই তারা যেন চলাচল করতে পারে এতটুকু রেখে বেড়া উঠিয়ে দিয়েছি দুই পক্ষকে বলেছি আর যেন বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি না করে। তবে আজকে কেন আবার পুলিশ আসল বুঝতে পারতেছি না। এ ব্যাপারে এ এস আই সাদেকুর রহমান বলেন, ভিটটিম ইউএনও স্যারের নিকট একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিল।

ঘটনা গিয়ে ছিলাম। আপাদত চলাচলে যেন কোন বাধাঁ সৃষ্টি না করে বিষয়টি বলে এসেছি। আগামীকাল দুই পক্ষকেই ইউএনও স্যার ডেকেছেন। এ ব্যাপারে ইউএনও অলিদুজ্জামান বলেন, ওসি সাহেব আমাকে জানিয়েছেন আপাদত চলাচলের রাস্তা খোলে দেয়া হয়েছে।

তবে এ বিষয়টি নিয়ে আগামীকাল উভয় পক্ষকে ডেকেছি। বিষয়টি তাদের নিকট থেকে জেনে পরবর্তি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Gojnobi biplob

Popular Post

মাহিন হত্যা মামলায় আরো এক আসামি গ্রেফতার হলো ফটিকছড়িতে

মদনে ১০দিন ধরে অবরুদ্ধ ইউপি সদস্যের পরিবার

প্রকাশের সময় : ০৫:১৮:৪৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫

 নেত্রকোনার মদনে জায়গা কেনা নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে এক ইউপি সদস্যসহ তার পরিবারকে ১০দিন ধরে অবরুদ্ধ করে রেখেছে প্রতিবেশী প্রভাবশালীর লোকজন।

এ নিয়ে ইউপি সদস্য কুহিনুর আক্তার প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তরে একটি লিখি অভিযোগ দায়ের করেন।   অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গোবিন্দশ্রী ইউনিয়নের ১.২.৩ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী সদস্য কূহিনূর আক্তারের সাথে পাশের বাড়ির প্রতিবেশী প্রভাবশালী সাব্বির, শাহাজান,আলমঙ্গীর, আজাহান ও ফরিদ মিয়ার লোকজনের মধ্যে বাড়ির জায়গা নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত বিরোধ চলে আসছে।

এরই জের ধরে  গত ১১ আগষ্ট ২০২৫ ইং তারিখে ইউপি সদস্য কূহিনুরের সাথে এ নিয়ে সাব্বির মিয়া, শাহজাহান, আলমঙ্গীর, আজাহান,ফরিদ,নাজমা,কাসেম,হাজু,গাজী মিয়া, হাজু মিয়া,ভুলনা,সাব্বুল মিয়া,সোমা, হাসনা আক্তারের সাথে কথা কাটাকাটি হয়।  এক পর্যায়ে ইউপি সদস্য কূহিনুর আক্তারের বাড়ি থেকে বের হওয়ার একমাত্র যাতায়াতের রাস্তাটি বন্ধ করে দেয় তারা। গত ১০ দিন যাবত অবরুদ্ধ করে রেখেছে ইউপি সদস্য কূহিনুর আক্তারের পরিবারকে।

কূহিনুর আক্তার অভিযোগে আরও উল্লেখ করেন, আমার একটি মেয়ে গর্ভবতী সে চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের নিকট যেতে পারছে না, একটি মেয়ে মাদ্রাসায় চাকুরি করে সেখানেও যেতে পারতেছে না। আমার একটি নাতি তার মাদ্রাসা যাওয়া বন্ধ রয়েছে। এর প্রতিকার চেয়ে ওই নারী সদস্য নিরুপায় হয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।

এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে বুধবার ইউপি সদস্যের বাড়িতে গেলে বাড়ির উঠুন বরাবর রাস্তা বন্ধ করে রাখার দৃশ্য পাওয়া যায়।  এ সময় স্থানীয় সাংবাদিকগণ তাদের পরিচয় দিয়ে কূহিনুরের বাড়ি যেতে চাইলেও ২০ মিনিট অপেক্ষা করেও কূহিনূরের বাড়িতে প্রবেশ করতে পারেনি। তারপর বিকল্প ভাবে তাদের বাড়িতে প্রবেশ করেন সাংবাদিকরা।

তবে অভিযোগের বিষয়টি সাংবাদিকদের নিকট শুনে এলাকার বিএনপির দলীয় নেতৃবৃন্দ বিষয়টি নিস্পতির জন্য কূহিনুরের বাড়িতে যান এবং চলাচল করার জন্য সামান্য রাস্তা খোলে দেন। এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য কূহিনুর আক্তার জানান, কয়েকজন সাংবাদিক আমাদের বাড়িতে আসার পর স্থানীয় কয়েক জন বিএনপি নেতা আমাদের বাড়িতে আসে। আমাদের এমন অবস্থা দেখে তারা এক-দেড় হাত বেড়া খুলে দেয় যাতায়াত করার জন্য।তবে নেতারা বাড়ি থেকে চলে যেতেই তারা আবার চলাচলের জন্য নিষেধ দেয় এবং বলে লজ্জা থাকলে আমাদের  বাড়ি দিয়ে তরা আইবে না।

 থানা থেকে লোকজন আইছিল। উনারা আমাদেরকে ইউএনও স্যারের সাথে দেখা করতে বলেছে। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত সাব্বুল মিয়া বলেন, মহিলা মহিলাদের মধ্যে ঝগড়া হয়েছে। কিন্তু কি নিয়ে হয়েছে এ বিষয়ে আমি বলতে পারব না। রাস্তা বন্ধ করলেন কেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি কোন সদুত্তর দেয়নি।  

ইউনিয়ন বিএনপি নেতা মোবারক হোসেন জানান, আপনারা চলে যাওয়ার সাথে সাথেই তারা যেন চলাচল করতে পারে এতটুকু রেখে বেড়া উঠিয়ে দিয়েছি দুই পক্ষকে বলেছি আর যেন বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি না করে। তবে আজকে কেন আবার পুলিশ আসল বুঝতে পারতেছি না। এ ব্যাপারে এ এস আই সাদেকুর রহমান বলেন, ভিটটিম ইউএনও স্যারের নিকট একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিল।

ঘটনা গিয়ে ছিলাম। আপাদত চলাচলে যেন কোন বাধাঁ সৃষ্টি না করে বিষয়টি বলে এসেছি। আগামীকাল দুই পক্ষকেই ইউএনও স্যার ডেকেছেন। এ ব্যাপারে ইউএনও অলিদুজ্জামান বলেন, ওসি সাহেব আমাকে জানিয়েছেন আপাদত চলাচলের রাস্তা খোলে দেয়া হয়েছে।

তবে এ বিষয়টি নিয়ে আগামীকাল উভয় পক্ষকে ডেকেছি। বিষয়টি তাদের নিকট থেকে জেনে পরবর্তি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।