
ফাইল ছবি
জুলাই অভ্যুত্থানে এক শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে হত্যাচেষ্টা, বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর, গাড়িতে আগুন, ছাত্রজনতার সঙ্গে মারামারিতে জড়িত থাকা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিভঙ্গ করে পদোন্নতি নেওয়ার অভিযোগে ৩৯ চিকিৎসক, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী চাকরি হারাচ্ছেন। একই অভিযোগে আরও ৯ চিকিৎসক ও এক কর্মচারীকে তিরস্কার করে সতর্ক করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া এডহক ভিত্তিতে নিয়োগপ্রাপ্ত ৯৬ কর্মচারীর চাকরি স্থায়ীকরণ এবং ২২ কর্মচারীর পদোন্নতি প্রদান করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষতা ও শৃঙ্খলা অধ্যাদেশ এর ৮(ক)(২) ধারায় গঠিত কমিটির আংশিক প্রতিবেদনে এই সুপারিশ করা হয়েছে। গতকাল শনিবার (৩১ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় এই প্রতিবেদন উপস্থাপন হয়।
অধ্যাপক ডা. মুজিবুর রহমান হাওলাদারের সভাপতিত্বে গঠিত এই কমিটি সুপারিশে উল্লেখ করেন অভিযুক্ত ১৫ জনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষতা ও শৃঙ্খলা অধ্যাদেশের ৫ এর (ঘ, ঝ, ট) ধারায় আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় একই অধ্যাদেশের ৬ (ঠ) অনুযায়ী চাকরি হতে পদচ্যুতি (ডিসমিসাল) করার সুপারিশ করা হলো। এছাড়া ২৩ জন চিকিৎসকের মধ্যে ১৯ জনের বিষয়ে কমিটি উল্লেখ করে ছাত্রজনতার সাথে মারামারি, ভাঙচুর ও গাড়িতে অংগ্নিসংযোগের ঘটনায়সরাসরি জড়িত থাকার বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষতা ও শৃঙ্খলা অধ্যাদেশের ৬ (ঠ) অনুযায়ী চাকরি হতে পদচ্যুতি (ডিসমিসাল) করার সুপারিশ করা হলো। তদন্ত কমিটির এই সুপারিশ গতকালকের সিন্ডিকেট সভায় অনুমদিত হয়। এর ফলে এই বিপুল সংখ্যক চিকিৎসক, কর্মকর্তা, কর্মচারী পবিত্র ঈদুল আজহার আগ মুহূর্তে চাকরি হারালেন।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ৪ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সংঘটিত হত্যা প্রচেষ্টা, মারামারি, ভাঙচুর, গাড়িতে আগুনের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি প্রাথমিক তদন্ত (ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং) কমিটি গঠন করে। কমিটির প্রতিবেদন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৪তম সিন্ডিকেট সভায় উপস্থাপন করা হয়। এরপর বিষয়টি অধিকতর তদন্ত করে সুপারিশ সংবলিত প্রতিবেদন পেশ করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষতা ও শৃঙ্খলা অধ্যাদেশের ৮ (ক) (২) ধারা মোতাবেক এবং কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির কার্যক্রম চলমান আছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নির্দেশক্রম আংশিক প্রতিবেদন তৈরি করা হয়।
এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডকেট সভায় যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিক হয়েছে তাদের শাস্তি নিশ্চির করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে যাদের তদন্ত বাকি আছে তাদের ক্ষেত্রে তদন্ত শেষে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।