ঢাকা ০৪:৩২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কেন্দুয়ায় বিজয় র‍্যালিতে ‘ফেরারী আসামি’, পুলিশ পায়না খুঁজে

নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় ৫ আগস্টের র‍্যালিতে খোকন আহমেদ নামে একজন পলাতক আসামিকে দেখা গেছে।

সরকারি চাল নিজের গুদামে অবৈধভাবে মজুদ রাখার মামলায় বিএনপি নেতা খোকন আহমেদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। পুলিশের খাতায় তিনি পলাতক আসামি। পলাতক আসামি হয়ে প্রকাশ্য মিছিলে অংশ নেওয়ায় এলাকায় নানান সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

অভিযুক্ত মো. খোকন আহমেদ (৫০) কেন্দুয়া পৌর বিএনপির সভাপতি। তিনি কেন্দুয়া পৌরসভার বাদে আঠারো বাড়ি এলাকার বাসিন্দা এবং ওই এলাকায় তার মালিকানাধীন মেসার্স নাহার ট্রেডার্স নামে একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, সরকার বাদী মামলার আসামি হলেও খোকন আহমেদ বিএনপি নেতা হওয়ায় পুলিশ তাকে ধরছে না। অনায়াসে তিনি এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান চালাচ্ছেন। পুলিশ দেখেও না দেখার ভান করছে।

এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবি ও ভিডিওতে খোকন আহমেদকে গতকাল ৫ আগস্টের বিজয় র‍্যালিতে সামনের সারিতে ব্যানার হাতে দেখা গেছে। ওই মিছিলে তার কাছাকাছি ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ড. রফিকুল ইসলাম হিলালী।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপি নেতা খোকন আহমেদ বলেন, গতকাল ৫ আগস্ট বিজয় র‍্যালিতে ছিলাম। আজকেও জেলায় রয়েছি। তবে জামিন নিয়েছেন কিনা এ ধরনের প্রশ্নে কিছুটা নীরব থেকে বলেন, এ বিষয়টা পরে জানাবো।

এ বিষয়ে কেন্দুয়া থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, খোকন আহমেদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। তিনি জামিন নেননি, পলাতক রয়েছেন। তিনি গতকালের র‍্যালিতে ছিলেন, এটা আমাদের চোখে পড়েনি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২০ জুন রাত ৮টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কেন্দুয়া পৌর-শহরের আঠারো বাড়ি এলাকায় খোকনের মালিকানাধীন মেসার্স নাহার ট্রেডার্সে অভিযান চালায় সেনাবাহিনী। গুদাম থেকে অবৈধভাবে মজুদ করা ৩০৪ বস্তা আতব চাল জব্দ করা হয়, যার ওজন প্রায় ১৩ হাজার ৮৫৪ কেজি। এসব চালের বাজারমূল্য আনুমানিক পাঁচ লাখ ৫৪ হাজার ১৬০ টাকা।

অভিযানের সময় খোকন আহমেদকে একাধিকবার মোবাইল ফোনে কল করে ডাকা হলেও তিনি উপস্থিত হননি। একপর্যায়ে তিনি মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেন। এ ঘটনায় আদালতের নির্দেশে ১ জুলাই খোকনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করা হয়। তারপর থেকে তিনি এলাকায় ঘোরাঘুরি করলেও অদৃশ্য কারণে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কেন্দুয়া  উপজেলার বিএনপিরি এক নতা বলেন, কেন্দুয়ায়  কিছু কিছু নেতার কারণে বিএনপি  ধ্বংশের কারণ হয়ে দাঁড়াবে।  সংসদ সদস্য না হয়েও  সংসদ সদস্যের চেয়েও বেশী প্রভাব বিস্তার করছেন  সর্ব মহলে।  যা দলটির জন্য হুমকির কারণে। কেন্দুয়ার সাধারণ মানুষ আস্তা হারাচ্ছে তাদের প্রতি। নেতারা এইসব অপরাধিদের আশ্রয় দিয়ে  অপরাধের জন্ম দিচ্ছে। তাদের আশ্রয় প্রশ্রয়েই  কেন্দুয়ায় বিএনপির নেতাকর্মীরা বেপরোয়া হয়ে উঠছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Gojnobi biplob

Popular Post

মাহিন হত্যা মামলায় আরো এক আসামি গ্রেফতার হলো ফটিকছড়িতে

কেন্দুয়ায় বিজয় র‍্যালিতে ‘ফেরারী আসামি’, পুলিশ পায়না খুঁজে

প্রকাশের সময় : ০৭:০৫:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ অগাস্ট ২০২৫

নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় ৫ আগস্টের র‍্যালিতে খোকন আহমেদ নামে একজন পলাতক আসামিকে দেখা গেছে।

সরকারি চাল নিজের গুদামে অবৈধভাবে মজুদ রাখার মামলায় বিএনপি নেতা খোকন আহমেদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। পুলিশের খাতায় তিনি পলাতক আসামি। পলাতক আসামি হয়ে প্রকাশ্য মিছিলে অংশ নেওয়ায় এলাকায় নানান সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

অভিযুক্ত মো. খোকন আহমেদ (৫০) কেন্দুয়া পৌর বিএনপির সভাপতি। তিনি কেন্দুয়া পৌরসভার বাদে আঠারো বাড়ি এলাকার বাসিন্দা এবং ওই এলাকায় তার মালিকানাধীন মেসার্স নাহার ট্রেডার্স নামে একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, সরকার বাদী মামলার আসামি হলেও খোকন আহমেদ বিএনপি নেতা হওয়ায় পুলিশ তাকে ধরছে না। অনায়াসে তিনি এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান চালাচ্ছেন। পুলিশ দেখেও না দেখার ভান করছে।

এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবি ও ভিডিওতে খোকন আহমেদকে গতকাল ৫ আগস্টের বিজয় র‍্যালিতে সামনের সারিতে ব্যানার হাতে দেখা গেছে। ওই মিছিলে তার কাছাকাছি ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ড. রফিকুল ইসলাম হিলালী।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপি নেতা খোকন আহমেদ বলেন, গতকাল ৫ আগস্ট বিজয় র‍্যালিতে ছিলাম। আজকেও জেলায় রয়েছি। তবে জামিন নিয়েছেন কিনা এ ধরনের প্রশ্নে কিছুটা নীরব থেকে বলেন, এ বিষয়টা পরে জানাবো।

এ বিষয়ে কেন্দুয়া থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, খোকন আহমেদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। তিনি জামিন নেননি, পলাতক রয়েছেন। তিনি গতকালের র‍্যালিতে ছিলেন, এটা আমাদের চোখে পড়েনি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২০ জুন রাত ৮টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কেন্দুয়া পৌর-শহরের আঠারো বাড়ি এলাকায় খোকনের মালিকানাধীন মেসার্স নাহার ট্রেডার্সে অভিযান চালায় সেনাবাহিনী। গুদাম থেকে অবৈধভাবে মজুদ করা ৩০৪ বস্তা আতব চাল জব্দ করা হয়, যার ওজন প্রায় ১৩ হাজার ৮৫৪ কেজি। এসব চালের বাজারমূল্য আনুমানিক পাঁচ লাখ ৫৪ হাজার ১৬০ টাকা।

অভিযানের সময় খোকন আহমেদকে একাধিকবার মোবাইল ফোনে কল করে ডাকা হলেও তিনি উপস্থিত হননি। একপর্যায়ে তিনি মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেন। এ ঘটনায় আদালতের নির্দেশে ১ জুলাই খোকনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করা হয়। তারপর থেকে তিনি এলাকায় ঘোরাঘুরি করলেও অদৃশ্য কারণে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কেন্দুয়া  উপজেলার বিএনপিরি এক নতা বলেন, কেন্দুয়ায়  কিছু কিছু নেতার কারণে বিএনপি  ধ্বংশের কারণ হয়ে দাঁড়াবে।  সংসদ সদস্য না হয়েও  সংসদ সদস্যের চেয়েও বেশী প্রভাব বিস্তার করছেন  সর্ব মহলে।  যা দলটির জন্য হুমকির কারণে। কেন্দুয়ার সাধারণ মানুষ আস্তা হারাচ্ছে তাদের প্রতি। নেতারা এইসব অপরাধিদের আশ্রয় দিয়ে  অপরাধের জন্ম দিচ্ছে। তাদের আশ্রয় প্রশ্রয়েই  কেন্দুয়ায় বিএনপির নেতাকর্মীরা বেপরোয়া হয়ে উঠছে।