
নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার সান্দিকোনা ইউনিয়নের ডাউকী গ্রামে পূর্ব বিরোধের জেরে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ মারামারির পর, বিবাদিদের বাড়িঘরে হামলা, ভাংচুর, লুটপাট, ও ফিসারির মাছ নিধনের অভিযোগে নেত্রকোণা আমলী আদালতে মামলা দায়ের করেছেন ভোক্তভোগীরা ।
ঘটনার জেরে একপক্ষ থানায় ও অপরপক্ষ নেত্রকোণা আমলি আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। ভুক্তভোগী মোছাঃ সুলতানা আক্তার তার স্বামীর অনুমতিক্রমে ১ জুলাই নেত্রকোণার বিজ্ঞ আইন শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) দমন ট্রাইব্যুনালে একটি মামলার আবেদন করেন।
মামলার বিবরনে উল্লেখ করা হয় , গত মাসের ২২ তারিখ রবিবার বিকেলে ও ২৩ জুন সোমবার সকালে সংঘবদ্ধ একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী তার ও তার দেবর ও ভাসুরের বাড়ি ঘরে দুই দফায় হামলা চালায়। হামলায় ভাঙচুর, লুটপাট, গরু-ছাগল, মোটর সাইকেল, মাছ এবং স্বর্ণালংকারসহ প্রায় ৮০ লক্ষাধিক টাকার সম্পদের ক্ষতি করে রুকন গংরা। মামলার বাদি সুলতানা আক্তার অভিযোগ করেন, বিবাদীরা তার স্বামী, ভাশুর ও জ্যায়ের ঘরে হামলা চালিয়ে ঘরের মালামাল লুটে নেয় এবং অস্ত্রের মহড়া দিয়ে ভয়ভীতি দেখায়। প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসলে তাদের প্রাণনাশের হুমকিও দেয় বিবাদীরা । এমনকি তাদের বসতঘরের আসবাবপত্র ও বিছানাপত্র আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
অন্যদিকে, একই গ্রামের রুকন উদ্দিন ভূঁইয়া পক্ষ পাল্টা অভিযোগে জানান, ডাউকী জামে মসজিদের রাস্তা পরিবর্তনকে কেন্দ্র করে জানুয়ারি মাস থেকে তাজুল ইসলাম গংদের সঙ্গে তাদের বিরোধ চলে আসছিল। ২২ জুন দুপুরে ডাউকি মসজিদের সামনে রুকন গংদের ওপর হামলার ঘটনায় রুকন উদ্দিন ভূঁইয়া গুরুতর আহত হন এখনও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। এই ঘটনার পর সুবিচারের দাবিতে আহত রুকন উদ্দিন ভূইয়ার মেয়ে বাদী হয়ে কেন্দুয়া থানায় আটজনকে বিবাদী করে একটি মারামারির মামলা দায়ের করেন।
মামলা দায়েরের পর তাজুল গংরা গ্রেপ্তারের ভয়ে পলাতক থাকায়, ঘটনার দিন রাতে অর্থাৎ ২২ জুন তাদের বাড়িতে রুকন গংরা হামলা চালিয়ে , ঘরে বসবাদরত মহিলাদের মারধর করে, ঘরের আসবাবপত্র ভাঙচুর ও লুটপাট করে এবং দুটি ফিসারিতে বিষ প্রয়োগে প্রায় ৩৫ লাখ টাকার শিং মাছ নিধন করে।
এ প্রসঙ্গে অভিযুক্ত তাজুল ইসলাম বলেন, “আমি নিজের জায়গা দিয়েছি রাস্তার পাশে নতুন মসজিদ নির্মাণের জন্য। পূর্বের রাস্তাটি সরিয়ে অন্য দিক দিয়ে পথ করে দিয়েছি। মূলত এ নিয়েই রুকন গংদের সঙ্গে বিরোধ দেখা দেয়। আমাদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, অথচ আমার বাবা ছিলেন সান্দিকোণা ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য, আমরাও সেই ধারার অনুসারী।
এ বিষয়ে কেন্দুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, “রাস্তা ও পূর্ব বিরোধকে কেন্দ্র করে ঘটনাটি ঘটেছে। পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। হামলা, ভাঙচুর বা মাছ নিধনের বিষয়ে এখনো লিখিত কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” স্থানীয় সচেতন মহল উভয় পক্ষকে আইনের আশ্রয় নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন এবং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।