ঢাকা ০৪:০৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কিশোরগঞ্জে জমি-সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ঘরে আগুন দিয়ে জমি দখল চেষ্টার অভিযোগ

কিশোরগঞ্জে জমি-সংক্রান্ত বিরোধের জেরে বসতঘর পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অগ্নিসংযোগে ঘরের মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ঘর হারিয়ে অসহায় পরিবারটি খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছে।
বুধবার ১৮ জুন রাত ৯টার দিকে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার যশোদল বাহ্মণকান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মো. রুবেল মিয়া ৬ জনসহ অজ্ঞাত আরও ৭-৮ জনকে অভিযুক্ত করে কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযুক্তরা হলেন—বাহ্মণকান্দি গ্রামের এলাই নেওয়াজের ছেলে মো. সুমন মিয়া, মো. এমাইদুল, গ্রামের মো. কাশেম ও তার স্ত্রী মোছা. শাহিনা আক্তার, মো. চুন্নু মিয়া ও তার স্ত্রী মোছা. রোজিনা।

অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী রুবেল মিয়ার সঙ্গে অভিযুক্তদের জমিজমা নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত মামলা মোকাদ্দমার বিরোধ চলছে। গত ১৬ জুন অভিযুক্তরা রুবেল মিয়ার পৈতৃক সূত্রে প্রাপ্ত বসতবাড়িতে জায়গা পাওয়ার দাবিতে জোরপূর্বক একটি ঝুপড়ি ঘর নির্মাণ করে এবং জায়গা থেকে বসতঘর সরিয়ে ফেলার হুমকি দেয়। পরবর্তীতে বাড়ির সম্পূর্ণ জমি দখলে নিতে বাড়িতে আগুন দেয় তারা।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী রুবেলের চাচা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, রুবেল বর্তমানে যে বাড়িটিতে বসবাস করছে সেই জায়গাটি প্রায় ৬০ থেকে ৭০ বছর আগে আমার বাবা জামাল উদ্দিন অভিযুক্ত সুমনের বাবা এলাইনেওয়াজের কাছ থেকে ক্রয় করে। পরে ভোগদখলে থাকাকালীন বাবা মারা গেলে আমি ও রুবেলের বাবা আমার সহোদর ছোট ভাই দ্বীন ইসলাম ভোগদখলে থাকাকালীন সে মারা যায়। পরবর্তীতে পৈতৃক সূত্রে জায়গাটির মালিক হয়ে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে আসছে রুবেল। ২০২২ সালে অভিযুক্তরা আদালতে রেকর্ড সংশোধনের একটি মামলা দায়ের করে। সেই মামলা চলাকালে গতকাল রাতের আধারে ঘরটিতে আগুন দিয়ে সবকিছু পুড়ে ফেলে।

প্রতিবেশী আজিজুল ইসলাম বলেন, ঘটনার দিন রাতে আগুন লাগার খবর পেয়ে আমরা স্থানীয়রা আগুন নেভানোর চেষ্টা করি কিন্তু কোনো অবস্থায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন দীর্ঘক্ষণ চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে ধারণা করা হচ্ছে প্রায় ৩ থেকে ৪ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

অভিযুক্ত সুমনের পক্ষে তার ফুফাতো ভাই মুমিন বলেন, রুবেলদের কাছে আমরা জায়গা পাবো। তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে আমরা ডিক্রি পেয়েছি। ‍উকিল আমাদের জায়গায় যেতে বলেছে তাই ওইখানে আমরা একটি ঘর তৈরি করেছি। কিন্তু এখন তারা নিজেরা আগুন দিয়ে আমাদের ফাঁসাতে চাচ্ছে। আমরা কারও ঘরে আগুন দিইনি। সবই মিথ্যা অভিযোগ।

 

এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তাদের মধ্যে আগের দ্বন্দ্ব ছিল। আগুন কারা দিয়েছে তা কেউ দেখেনি। বাকিটা তদন্ত শেষে জানানো হবে।

 

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Gojnobi biplob

Popular Post

মাহিন হত্যা মামলায় আরো এক আসামি গ্রেফতার হলো ফটিকছড়িতে

কিশোরগঞ্জে জমি-সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ঘরে আগুন দিয়ে জমি দখল চেষ্টার অভিযোগ

প্রকাশের সময় : ০১:০২:১৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫

কিশোরগঞ্জে জমি-সংক্রান্ত বিরোধের জেরে বসতঘর পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অগ্নিসংযোগে ঘরের মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ঘর হারিয়ে অসহায় পরিবারটি খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছে।
বুধবার ১৮ জুন রাত ৯টার দিকে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার যশোদল বাহ্মণকান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মো. রুবেল মিয়া ৬ জনসহ অজ্ঞাত আরও ৭-৮ জনকে অভিযুক্ত করে কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযুক্তরা হলেন—বাহ্মণকান্দি গ্রামের এলাই নেওয়াজের ছেলে মো. সুমন মিয়া, মো. এমাইদুল, গ্রামের মো. কাশেম ও তার স্ত্রী মোছা. শাহিনা আক্তার, মো. চুন্নু মিয়া ও তার স্ত্রী মোছা. রোজিনা।

অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী রুবেল মিয়ার সঙ্গে অভিযুক্তদের জমিজমা নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত মামলা মোকাদ্দমার বিরোধ চলছে। গত ১৬ জুন অভিযুক্তরা রুবেল মিয়ার পৈতৃক সূত্রে প্রাপ্ত বসতবাড়িতে জায়গা পাওয়ার দাবিতে জোরপূর্বক একটি ঝুপড়ি ঘর নির্মাণ করে এবং জায়গা থেকে বসতঘর সরিয়ে ফেলার হুমকি দেয়। পরবর্তীতে বাড়ির সম্পূর্ণ জমি দখলে নিতে বাড়িতে আগুন দেয় তারা।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী রুবেলের চাচা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, রুবেল বর্তমানে যে বাড়িটিতে বসবাস করছে সেই জায়গাটি প্রায় ৬০ থেকে ৭০ বছর আগে আমার বাবা জামাল উদ্দিন অভিযুক্ত সুমনের বাবা এলাইনেওয়াজের কাছ থেকে ক্রয় করে। পরে ভোগদখলে থাকাকালীন বাবা মারা গেলে আমি ও রুবেলের বাবা আমার সহোদর ছোট ভাই দ্বীন ইসলাম ভোগদখলে থাকাকালীন সে মারা যায়। পরবর্তীতে পৈতৃক সূত্রে জায়গাটির মালিক হয়ে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে আসছে রুবেল। ২০২২ সালে অভিযুক্তরা আদালতে রেকর্ড সংশোধনের একটি মামলা দায়ের করে। সেই মামলা চলাকালে গতকাল রাতের আধারে ঘরটিতে আগুন দিয়ে সবকিছু পুড়ে ফেলে।

প্রতিবেশী আজিজুল ইসলাম বলেন, ঘটনার দিন রাতে আগুন লাগার খবর পেয়ে আমরা স্থানীয়রা আগুন নেভানোর চেষ্টা করি কিন্তু কোনো অবস্থায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন দীর্ঘক্ষণ চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে ধারণা করা হচ্ছে প্রায় ৩ থেকে ৪ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

অভিযুক্ত সুমনের পক্ষে তার ফুফাতো ভাই মুমিন বলেন, রুবেলদের কাছে আমরা জায়গা পাবো। তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে আমরা ডিক্রি পেয়েছি। ‍উকিল আমাদের জায়গায় যেতে বলেছে তাই ওইখানে আমরা একটি ঘর তৈরি করেছি। কিন্তু এখন তারা নিজেরা আগুন দিয়ে আমাদের ফাঁসাতে চাচ্ছে। আমরা কারও ঘরে আগুন দিইনি। সবই মিথ্যা অভিযোগ।

 

এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তাদের মধ্যে আগের দ্বন্দ্ব ছিল। আগুন কারা দিয়েছে তা কেউ দেখেনি। বাকিটা তদন্ত শেষে জানানো হবে।