ঢাকা ০৭:৩৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রংপুরের পীরগাছায় সরকারি অর্থ আত্মসাৎসহ নানা দুর্নীতির অভিযোগ সমন্বয়কের বিরুদ্ধে

ছবি সংগৃহীত

রংপুরের পীরগাছায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্থানীয় সমন্বয়ক ফারদিন এহসান মাহিমের বিরুদ্ধে সরকারি অর্থ আত্মসাৎসহ নানা দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ হয়ে তাকে অবরুদ্ধ করে বিচারের দাবি জানিয়েছে তারই সহযোদ্ধারা।

গতকাল  ১৬ জুন সোমবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটেছে। সেখানে অবস্থান করা ফারদিন এহসান মাহিমকে ৪০-৫০ জন শিক্ষার্থী অবরুদ্ধ করে রাখেন।

এসময় তারা মাহিমের বিচারের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন। প্রায় দুই ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আমিনুল ইসলাম রাঙ্গার হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক ।

বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা জানান, চব্বিশের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে তারা সক্রিয় ভূমিকা রেখেছে। ৫ আগস্টের পর তাদের প্রতিনিধি বা মুখপাত্র হিসেবে ফারদিন এহসান মহিমকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এই সুযোগে অনিয়ম-দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, মামলা বাণিজ্যে জড়িয়ে পড়েন সে।

বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরে ছাত্ররা আরও জানান, পীরগাছা জেএন হাইস্কুল মাঠে ক্রিকেট খেলা আয়োজনকে কেন্দ্র করে সরকারিভাবে দেওয়া এক লাখ ১০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছে মাহিম। টাকা বুঝে পেয়েছেন বলে কয়েকজন খেলোয়াড়ের স্বাক্ষর নেওয়া হলেও কাউকে কোনো টাকা বা খেলাধুলার সামগ্রী দেওয়া হয়নি। এছাড়া শীতের কম্বল, ভিজিএফ চাল সহায়তা নিয়েও অনিয়ম দুর্নীতি করেছে। ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজের বোনকে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলারশিপ নিয়ে দিয়েছে। তার এসব অপকর্মের সঙ্গে পরিবারের লোকজনও জড়িত।

অভিযোগকারীরা জানান, মাহিম দীর্ঘদিন ধরে এসব অপকর্ম করছেন। আজকে এসবের প্রতিবাদ জানানোসহ বিচারের দাবিতে তারা ইউএনও কার্যালয়ে অভিযুক্ত মাহিমকে অবরুদ্ধ করে অবস্থান করেন। পরে ইউএনও অভিযোগ তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মাহিম বলেন, যখন কোনো ব্যক্তি দায়িত্বে থাকেন, তার বিরুদ্ধে নানা ধরনের অভিযোগ থাকবেই। আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উঠেছে, তা লিখিতভাবে তারা দিক। সেটা তদন্ত হোক, তা আমিও চাই। আমার হয়তো কিছু ভুল আছে। আমি সাংগঠনিকভাবে সবার সঙ্গে প্রথম দিকে যোগাযোগ রাখলেও পরে রাখতে পারিনি। এ জন্য ভুল-বোঝাবুঝি ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

খেলার টাকা প্রসঙ্গে মাহিম বলেন, যাদের স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে, তাদের টাকা দেওয়া হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে করা অভিযোগের বিষয়ে কমিটি গঠন করে তদন্ত করা হোক। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে যেকোনো শাস্তি আমি মাথা পেতে নেব।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রংপুর জেলার আহ্বায়ক ইমরান আহমেদ বলেন, আমরা আজকের ঘটনা সম্পর্কে জানতে পেরেছি। কিন্তু মাহিমের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগের কথা বলা হচ্ছে, তা লিখিতভাবে কেউ আমাদেরকে অবগত করেনি। তারপরও অভিযোগগুলো নিয়ে আমরা সাংগঠনিকভাবে আলোচনা করেছি।

পীরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নাজমুল হক সুমন বলেন, ফারদিন এহসান মাহিমের বিরুদ্ধে ছাত্রদের অভিযোগের বিষয়গুলো লিখিত আকারে দিতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে কমিটি গঠনের মাধ্যমে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Gojnobi biplob

Popular Post

মাহিন হত্যা মামলায় আরো এক আসামি গ্রেফতার হলো ফটিকছড়িতে

রংপুরের পীরগাছায় সরকারি অর্থ আত্মসাৎসহ নানা দুর্নীতির অভিযোগ সমন্বয়কের বিরুদ্ধে

প্রকাশের সময় : ১১:৪৩:৩২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫

ছবি সংগৃহীত

রংপুরের পীরগাছায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্থানীয় সমন্বয়ক ফারদিন এহসান মাহিমের বিরুদ্ধে সরকারি অর্থ আত্মসাৎসহ নানা দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ হয়ে তাকে অবরুদ্ধ করে বিচারের দাবি জানিয়েছে তারই সহযোদ্ধারা।

গতকাল  ১৬ জুন সোমবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটেছে। সেখানে অবস্থান করা ফারদিন এহসান মাহিমকে ৪০-৫০ জন শিক্ষার্থী অবরুদ্ধ করে রাখেন।

এসময় তারা মাহিমের বিচারের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন। প্রায় দুই ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আমিনুল ইসলাম রাঙ্গার হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক ।

বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা জানান, চব্বিশের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে তারা সক্রিয় ভূমিকা রেখেছে। ৫ আগস্টের পর তাদের প্রতিনিধি বা মুখপাত্র হিসেবে ফারদিন এহসান মহিমকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এই সুযোগে অনিয়ম-দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, মামলা বাণিজ্যে জড়িয়ে পড়েন সে।

বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরে ছাত্ররা আরও জানান, পীরগাছা জেএন হাইস্কুল মাঠে ক্রিকেট খেলা আয়োজনকে কেন্দ্র করে সরকারিভাবে দেওয়া এক লাখ ১০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছে মাহিম। টাকা বুঝে পেয়েছেন বলে কয়েকজন খেলোয়াড়ের স্বাক্ষর নেওয়া হলেও কাউকে কোনো টাকা বা খেলাধুলার সামগ্রী দেওয়া হয়নি। এছাড়া শীতের কম্বল, ভিজিএফ চাল সহায়তা নিয়েও অনিয়ম দুর্নীতি করেছে। ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজের বোনকে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলারশিপ নিয়ে দিয়েছে। তার এসব অপকর্মের সঙ্গে পরিবারের লোকজনও জড়িত।

অভিযোগকারীরা জানান, মাহিম দীর্ঘদিন ধরে এসব অপকর্ম করছেন। আজকে এসবের প্রতিবাদ জানানোসহ বিচারের দাবিতে তারা ইউএনও কার্যালয়ে অভিযুক্ত মাহিমকে অবরুদ্ধ করে অবস্থান করেন। পরে ইউএনও অভিযোগ তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মাহিম বলেন, যখন কোনো ব্যক্তি দায়িত্বে থাকেন, তার বিরুদ্ধে নানা ধরনের অভিযোগ থাকবেই। আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উঠেছে, তা লিখিতভাবে তারা দিক। সেটা তদন্ত হোক, তা আমিও চাই। আমার হয়তো কিছু ভুল আছে। আমি সাংগঠনিকভাবে সবার সঙ্গে প্রথম দিকে যোগাযোগ রাখলেও পরে রাখতে পারিনি। এ জন্য ভুল-বোঝাবুঝি ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

খেলার টাকা প্রসঙ্গে মাহিম বলেন, যাদের স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে, তাদের টাকা দেওয়া হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে করা অভিযোগের বিষয়ে কমিটি গঠন করে তদন্ত করা হোক। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে যেকোনো শাস্তি আমি মাথা পেতে নেব।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রংপুর জেলার আহ্বায়ক ইমরান আহমেদ বলেন, আমরা আজকের ঘটনা সম্পর্কে জানতে পেরেছি। কিন্তু মাহিমের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগের কথা বলা হচ্ছে, তা লিখিতভাবে কেউ আমাদেরকে অবগত করেনি। তারপরও অভিযোগগুলো নিয়ে আমরা সাংগঠনিকভাবে আলোচনা করেছি।

পীরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নাজমুল হক সুমন বলেন, ফারদিন এহসান মাহিমের বিরুদ্ধে ছাত্রদের অভিযোগের বিষয়গুলো লিখিত আকারে দিতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে কমিটি গঠনের মাধ্যমে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।