ঢাকা ০৭:৪৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাজশাহীর চারঘাটে যাত্রাবিরতির দাবিতে রেলপথ অবরোধ

রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার নন্দনগাছী রেলস্টেশনে আন্তঃনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতির (স্টপেজ) দাবিতে রেলপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন স্থানীয় লোকজন। এতে রাজশাহীর সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।

 ১১ জুন বুধবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে স্টেশনের অদূরে সাগরদাড়ি এক্সপ্রেস থামিয়ে বিক্ষোভ করেন আন্দোলনকারীরা। তারা স্টেশন সংস্কার ও আন্তঃনগর ট্রেন থামানোর দাবি-সম্পর্কিত বিভিন্ন ব্যানার ও ফেস্টুন তুলে ধরেন। দাবির মধ্যে ছিল-সিল্কসিটি এক্সপ্রেস, সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস, বরেন্দ্র এক্সপ্রেস ও ঢালার চর এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রাবিরতি এবং স্টেশনের সংস্কার।

জানা গেছে, ১৯২৯ সালে উপজেলার নন্দনগাছী স্টেশনটি স্থাপিত হয় নিমপাড়া ইউনিয়নের বরকতপুর এলাকায়, যা নন্দনগাছী স্টেশন নামে পরিচিত। শতবর্ষী স্টেশনটির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায় ২০১৫ সালের শেষের দিকে। নিয়ম অনুযায়ী এই স্টেশনে স্টেশনমাস্টার, টিকিট মাস্টার, পোর্টারম্যান, পয়েন্টসম্যান, গেটম্যানসহ জনবল ছিল ১২ জন। বর্তমানে শুধু পোর্টারম্যান পদে একজন কর্মরত আছেন। শুধু দুটি লোকাল ট্রেন সেখানে থামে।

আন্দোলনকারীদের মধ্যে সুমন নামে একজন বলেন, রেলওয়ে স্টেশনটি অনেক পুরানো। ট্রেন থামবে বলে লাইন সংস্কার করা হয়েছে। কিন্তু একটি মাত্র নোকাল ট্রেন ছাড়া কোনো ট্রেন থামে না। এর আগে গত ১ মে স্টেশনে ট্রেন থামার দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়েছিল। পরে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ১ জুন থেকে ট্রেন থামানোর আশ্বাস দিয়েছিল। কিন্তু তারা কথা রাখেনি।সাগরদাড়ি ট্রেনের যাত্রী সুজন আলী বলেন, ট্রেন নির্ধারিত সময় ছেড়েছিল রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন থেকে। এরপর নন্দনগাছি স্টেশনে এলাকায় এসে থেমে যায়। ট্রেন থেকে নিচে এসে দেখি, রেললাইনে একটি লাল পতাকা টানিয়ে অবরোধ করছে এলাকাবাসী। এই অবরোধের ফলে দীর্ঘ এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে ট্রেন থেমে আছে। এতে করে ট্রেনের যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েছেন।

সাইফুল ইসলাম নামে আরেক যাত্রী বলেন, এই ট্রেন রাজশাহী-খুলনা রুটে চলাচল করে। ট্রেনের বেশিরভাগ যাত্রী চিকিৎসা কাজে রাজশাহীতে আসেন। বগিগুলোতে অনেক অসুস্থ যাত্রী এবং নারী, শিশুরা রয়েছে। তারা গরমে কষ্ট পাচ্ছে। আমাদের দাবি দ্রুত রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ একটি ব্যবস্থা নিক।এর আগে, গেল ১ মে আন্তঃনগর এক্সপ্রেসের স্টপেজের দাবিতে ট্রেন থামিয়ে বিক্ষোভ করেছে রাজশাহীর চারঘাট ও বাঘা উপজেলার হাজারও মানুষ। এ সময় রাজশাহী ও চিলাহাটির মধ্যে চলাচল করা বরেন্দ্র এক্সপ্রেস ও লোকাল মেল ট্রেন থামিয়ে বিক্ষোভ করা হয়। এতে কিছু সময়ের জন্য ট্রেনটি নন্দনগাছি স্টেশনে থেমে ছিল।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ২০ বছর ধরে বন্ধ এই স্টেশনের কোনো কার্যক্রম নেই। লোকাল ও আন্তঃনগর ট্রেন থামে না। পুরো স্টেশনের প্লাটফর্মে ছাউনি আছে। তবে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকে। স্টপেজ না থাকলেও অনেক সময় ক্রসিংয়ের জন্য দাঁড়ায় ট্রেন।

এ বিষয়ে সাগরদাঁড়ি ট্রেনের গার্ড মজিবুদ দৌল্লা বলেন, এ বিষয় কিছু জানা ছিল না। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।পাকশী জিআরপি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউর রহমান বলেন, একটি ট্রেন থেমে আছে স্টেশন এলাকায়। কোনো ধরনের অপ্রীতিকার ঘটনা না ঘটে সেজন্য আমরা এখানে রয়েছি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Gojnobi biplob

Popular Post

মাহিন হত্যা মামলায় আরো এক আসামি গ্রেফতার হলো ফটিকছড়িতে

রাজশাহীর চারঘাটে যাত্রাবিরতির দাবিতে রেলপথ অবরোধ

প্রকাশের সময় : ০৯:৪২:৫৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১১ জুন ২০২৫

রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার নন্দনগাছী রেলস্টেশনে আন্তঃনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতির (স্টপেজ) দাবিতে রেলপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন স্থানীয় লোকজন। এতে রাজশাহীর সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।

 ১১ জুন বুধবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে স্টেশনের অদূরে সাগরদাড়ি এক্সপ্রেস থামিয়ে বিক্ষোভ করেন আন্দোলনকারীরা। তারা স্টেশন সংস্কার ও আন্তঃনগর ট্রেন থামানোর দাবি-সম্পর্কিত বিভিন্ন ব্যানার ও ফেস্টুন তুলে ধরেন। দাবির মধ্যে ছিল-সিল্কসিটি এক্সপ্রেস, সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস, বরেন্দ্র এক্সপ্রেস ও ঢালার চর এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রাবিরতি এবং স্টেশনের সংস্কার।

জানা গেছে, ১৯২৯ সালে উপজেলার নন্দনগাছী স্টেশনটি স্থাপিত হয় নিমপাড়া ইউনিয়নের বরকতপুর এলাকায়, যা নন্দনগাছী স্টেশন নামে পরিচিত। শতবর্ষী স্টেশনটির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায় ২০১৫ সালের শেষের দিকে। নিয়ম অনুযায়ী এই স্টেশনে স্টেশনমাস্টার, টিকিট মাস্টার, পোর্টারম্যান, পয়েন্টসম্যান, গেটম্যানসহ জনবল ছিল ১২ জন। বর্তমানে শুধু পোর্টারম্যান পদে একজন কর্মরত আছেন। শুধু দুটি লোকাল ট্রেন সেখানে থামে।

আন্দোলনকারীদের মধ্যে সুমন নামে একজন বলেন, রেলওয়ে স্টেশনটি অনেক পুরানো। ট্রেন থামবে বলে লাইন সংস্কার করা হয়েছে। কিন্তু একটি মাত্র নোকাল ট্রেন ছাড়া কোনো ট্রেন থামে না। এর আগে গত ১ মে স্টেশনে ট্রেন থামার দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়েছিল। পরে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ১ জুন থেকে ট্রেন থামানোর আশ্বাস দিয়েছিল। কিন্তু তারা কথা রাখেনি।সাগরদাড়ি ট্রেনের যাত্রী সুজন আলী বলেন, ট্রেন নির্ধারিত সময় ছেড়েছিল রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন থেকে। এরপর নন্দনগাছি স্টেশনে এলাকায় এসে থেমে যায়। ট্রেন থেকে নিচে এসে দেখি, রেললাইনে একটি লাল পতাকা টানিয়ে অবরোধ করছে এলাকাবাসী। এই অবরোধের ফলে দীর্ঘ এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে ট্রেন থেমে আছে। এতে করে ট্রেনের যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েছেন।

সাইফুল ইসলাম নামে আরেক যাত্রী বলেন, এই ট্রেন রাজশাহী-খুলনা রুটে চলাচল করে। ট্রেনের বেশিরভাগ যাত্রী চিকিৎসা কাজে রাজশাহীতে আসেন। বগিগুলোতে অনেক অসুস্থ যাত্রী এবং নারী, শিশুরা রয়েছে। তারা গরমে কষ্ট পাচ্ছে। আমাদের দাবি দ্রুত রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ একটি ব্যবস্থা নিক।এর আগে, গেল ১ মে আন্তঃনগর এক্সপ্রেসের স্টপেজের দাবিতে ট্রেন থামিয়ে বিক্ষোভ করেছে রাজশাহীর চারঘাট ও বাঘা উপজেলার হাজারও মানুষ। এ সময় রাজশাহী ও চিলাহাটির মধ্যে চলাচল করা বরেন্দ্র এক্সপ্রেস ও লোকাল মেল ট্রেন থামিয়ে বিক্ষোভ করা হয়। এতে কিছু সময়ের জন্য ট্রেনটি নন্দনগাছি স্টেশনে থেমে ছিল।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ২০ বছর ধরে বন্ধ এই স্টেশনের কোনো কার্যক্রম নেই। লোকাল ও আন্তঃনগর ট্রেন থামে না। পুরো স্টেশনের প্লাটফর্মে ছাউনি আছে। তবে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকে। স্টপেজ না থাকলেও অনেক সময় ক্রসিংয়ের জন্য দাঁড়ায় ট্রেন।

এ বিষয়ে সাগরদাঁড়ি ট্রেনের গার্ড মজিবুদ দৌল্লা বলেন, এ বিষয় কিছু জানা ছিল না। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।পাকশী জিআরপি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউর রহমান বলেন, একটি ট্রেন থেমে আছে স্টেশন এলাকায়। কোনো ধরনের অপ্রীতিকার ঘটনা না ঘটে সেজন্য আমরা এখানে রয়েছি।