ঢাকা ১২:১৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাজশাহীকে একই পরিবারের ৪ জনের লাশ উদ্ধার: চিরকুট উদ্বার

ছবি সংগৃহীত

রাজশাহীর পবা উপজেলার একটি বাড়ি থেকে একই পরিবারের চারজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মরদেহের পাশ থেকে হাতে লেখা একটি চিরকুটও উদ্ধার হয়েছে।আজ শুক্রবার (১৫ আগস্ট) সকালে বামুনশিকড় এলাকার ওই বাড়ির দুই ঘর থেকে তাদের মরদেহ ও চিরকুট উদ্ধার করা হয়।

নিহতরা হলেন- মিনারুল ইসলাম (৩০), স্ত্রী সাধিনা বেগম (২৮) এবং তাদের ছেলে মাহিম (১৩) ও দেড় বছরের মেয়ে মিথিলা। মিনারুল কৃষিকাজ করতেন। তার ছেলে মাহিম খড়খড়ি উচ্চবিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ত।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সকালে ওই বাড়ির একটি ঘরে সাধিনা বেগম ও মিথিলার মরদেহ পাওয়া যায়। আরেকটি ঘরে মিনারুল ও মাহিমের মরদেহ ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে ছিল। মরদেহের পাশে হাতে লেখা একটি চিরকুটও ছিল।

এতে লেখা রয়েছে, ‘আমি মিনারুল প্রথমে আমার স্ত্রীকে মেরেছি। তারপর আমার মাহিমকে (ছেলে) মেরেছি। তারপর আমার মিথিলাকে (মেয়ে) মেরেছি। তারপর আমি নিজে গলায় ফাঁস দিয়ে মরেছি।

চিরকুটের আরেক পাতায় লেখা আছে, আমি নিজ হাতে সবাইকে মারলাম, কারণ আমি একা যদি মরে যাই তাহলে, আমার স্ত্রী-সন্তানরা কার আশায় বেঁচে থাকবে? কষ্ট আর দুঃখ ছাড়া কিছুই পাবে না।

আমরা মরে গেলাম ঋণের দায়ে আর খাওয়ার অভাবে। এত কষ্ট আর মেনে নিতে পারছি না। তাই আমারা বেঁচে থাকার চেয়ে মরে গেলাম সেই ভাল হলো। কারও কাছে কিছু চাইতে হবে না। আমার জন্যে কাউকে মানুষের কাছে ছোট হতে হবে না।

আমার বাবা আমার জন্য অনেক মানুষের কাছে ছোট হয়েছে, আর হতে হবে না। চিরদিনের জন্য চলে গেলাম। আমি চাই সবাই ভালো থাকবেন। ধন্যবাদ।’

এদিকে চারজনের মরদেহ উদ্ধার ও চিরকুটের বিষয়ে মতিহার থানার ওসি আব্দুল মালেক জানান, চারজনের লাশ উদ্ধারের খরব পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেছে। তদন্ত করে পরে বিস্তারিত জানানো হবে। এএসআই কালাম জানান, পুলিশ ঘটনা তদন্ত শুরু করেছে এবং মৃত্যুর কারণ নির্ধারণের জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মরদেহের পাশে পাওয়া চিরকুটটি মিনারুলের হাতে লেখা কিনা সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত করেনি পুলিশ।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Gojnobi biplob

Popular Post

মাহিন হত্যা মামলায় আরো এক আসামি গ্রেফতার হলো ফটিকছড়িতে

রাজশাহীকে একই পরিবারের ৪ জনের লাশ উদ্ধার: চিরকুট উদ্বার

প্রকাশের সময় : ০৮:০৯:২৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৫

ছবি সংগৃহীত

রাজশাহীর পবা উপজেলার একটি বাড়ি থেকে একই পরিবারের চারজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মরদেহের পাশ থেকে হাতে লেখা একটি চিরকুটও উদ্ধার হয়েছে।আজ শুক্রবার (১৫ আগস্ট) সকালে বামুনশিকড় এলাকার ওই বাড়ির দুই ঘর থেকে তাদের মরদেহ ও চিরকুট উদ্ধার করা হয়।

নিহতরা হলেন- মিনারুল ইসলাম (৩০), স্ত্রী সাধিনা বেগম (২৮) এবং তাদের ছেলে মাহিম (১৩) ও দেড় বছরের মেয়ে মিথিলা। মিনারুল কৃষিকাজ করতেন। তার ছেলে মাহিম খড়খড়ি উচ্চবিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ত।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সকালে ওই বাড়ির একটি ঘরে সাধিনা বেগম ও মিথিলার মরদেহ পাওয়া যায়। আরেকটি ঘরে মিনারুল ও মাহিমের মরদেহ ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে ছিল। মরদেহের পাশে হাতে লেখা একটি চিরকুটও ছিল।

এতে লেখা রয়েছে, ‘আমি মিনারুল প্রথমে আমার স্ত্রীকে মেরেছি। তারপর আমার মাহিমকে (ছেলে) মেরেছি। তারপর আমার মিথিলাকে (মেয়ে) মেরেছি। তারপর আমি নিজে গলায় ফাঁস দিয়ে মরেছি।

চিরকুটের আরেক পাতায় লেখা আছে, আমি নিজ হাতে সবাইকে মারলাম, কারণ আমি একা যদি মরে যাই তাহলে, আমার স্ত্রী-সন্তানরা কার আশায় বেঁচে থাকবে? কষ্ট আর দুঃখ ছাড়া কিছুই পাবে না।

আমরা মরে গেলাম ঋণের দায়ে আর খাওয়ার অভাবে। এত কষ্ট আর মেনে নিতে পারছি না। তাই আমারা বেঁচে থাকার চেয়ে মরে গেলাম সেই ভাল হলো। কারও কাছে কিছু চাইতে হবে না। আমার জন্যে কাউকে মানুষের কাছে ছোট হতে হবে না।

আমার বাবা আমার জন্য অনেক মানুষের কাছে ছোট হয়েছে, আর হতে হবে না। চিরদিনের জন্য চলে গেলাম। আমি চাই সবাই ভালো থাকবেন। ধন্যবাদ।’

এদিকে চারজনের মরদেহ উদ্ধার ও চিরকুটের বিষয়ে মতিহার থানার ওসি আব্দুল মালেক জানান, চারজনের লাশ উদ্ধারের খরব পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেছে। তদন্ত করে পরে বিস্তারিত জানানো হবে। এএসআই কালাম জানান, পুলিশ ঘটনা তদন্ত শুরু করেছে এবং মৃত্যুর কারণ নির্ধারণের জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মরদেহের পাশে পাওয়া চিরকুটটি মিনারুলের হাতে লেখা কিনা সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত করেনি পুলিশ।