ঢাকা ১২:৪৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

স্বৈরাচারী হাসিনার মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তৃতীয় দিনের যুক্তিতর্ক চলছে

ছবি সংগৃহিত

চব্বিশের জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার ওপর দমন-পীড়নের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে তৃতীয় দিনের মতো যুক্তিতর্ক (আর্গুমেন্ট) উপস্থাপন চলছে। এই যুক্তিতর্ক বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হচ্ছে।

মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১–এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে দ্বিতীয় দিনের যুক্তিতর্ক চলমান রয়েছে। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন— বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

এর আগে, রবিবার মামলার প্রথম দিনের যুক্তিতর্ক শুরু হয়। পরদিন সোমবার দ্বিতীয় দিনের যুক্তিতর্কও বিভিন্ন গণমাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।

গত ৮ অক্টোবর ট্রাইব্যুনাল-১–এ মামলার ৫৪তম ও শেষ সাক্ষী, তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের জেরা শেষ হয়।

এই ঐতিহাসিক মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন গণ-অভ্যুত্থানে নিহত শহীদ আবু সাঈদের পিতা এবং অন্যান্য ভুক্তভোগী পরিবার। এছাড়া, তারকা সাক্ষী হিসেবে ছিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক ও জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতা নাহিদ ইসলাম ও দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। সাক্ষ্য দিয়েছেন মোট ৫৪ জন সাক্ষী।

প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি পরিচালনা করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও গাজী এস এইচ তামীম। অন্য প্রসিকিউটররাও শুনানিতে উপস্থিত রয়েছেন।

পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করছেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন। মামলায় গ্রেফতার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে শুনানি করছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।

গত ১০ জুলাই শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান কামাল ও আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১। একপর্যায়ে দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা প্রকাশে রাজসাক্ষী হতে আবেদন করেন আবদুল্লাহ আল-মামুন, যা ট্রাইব্যুনাল মঞ্জুর করেন। এরপর ৩ আগস্ট থেকে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়ে ৮ অক্টোবর শেষ হয়।

মামলার প্রাথমিক তদন্ত করেন তদন্ত সংস্থার উপ-পরিচালক মো. জানে আলম খান। পরে তদন্তের দায়িত্ব পান উপ-পরিচালক মো. আলমগীর। তাকে সহযোগিতা করেন বিশেষ তদন্ত কর্মকর্তা তানভীর হাসান জোহা। গত ১২ মে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা আলমগীর। এরপর ৩১ মে দেওয়া হয় সম্পূরক অভিযোগ এবং ১ জুন আনুষ্ঠানিক অভিযোগ উপস্থাপন করা হয়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Gojnobi biplob

Popular Post

মাহিন হত্যা মামলায় আরো এক আসামি গ্রেফতার হলো ফটিকছড়িতে

স্বৈরাচারী হাসিনার মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তৃতীয় দিনের যুক্তিতর্ক চলছে

প্রকাশের সময় : ০৪:০৫:৩০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫

ছবি সংগৃহিত

চব্বিশের জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার ওপর দমন-পীড়নের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে তৃতীয় দিনের মতো যুক্তিতর্ক (আর্গুমেন্ট) উপস্থাপন চলছে। এই যুক্তিতর্ক বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হচ্ছে।

মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১–এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে দ্বিতীয় দিনের যুক্তিতর্ক চলমান রয়েছে। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন— বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

এর আগে, রবিবার মামলার প্রথম দিনের যুক্তিতর্ক শুরু হয়। পরদিন সোমবার দ্বিতীয় দিনের যুক্তিতর্কও বিভিন্ন গণমাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।

গত ৮ অক্টোবর ট্রাইব্যুনাল-১–এ মামলার ৫৪তম ও শেষ সাক্ষী, তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের জেরা শেষ হয়।

এই ঐতিহাসিক মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন গণ-অভ্যুত্থানে নিহত শহীদ আবু সাঈদের পিতা এবং অন্যান্য ভুক্তভোগী পরিবার। এছাড়া, তারকা সাক্ষী হিসেবে ছিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক ও জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতা নাহিদ ইসলাম ও দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। সাক্ষ্য দিয়েছেন মোট ৫৪ জন সাক্ষী।

প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি পরিচালনা করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও গাজী এস এইচ তামীম। অন্য প্রসিকিউটররাও শুনানিতে উপস্থিত রয়েছেন।

পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করছেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন। মামলায় গ্রেফতার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে শুনানি করছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।

গত ১০ জুলাই শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান কামাল ও আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১। একপর্যায়ে দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা প্রকাশে রাজসাক্ষী হতে আবেদন করেন আবদুল্লাহ আল-মামুন, যা ট্রাইব্যুনাল মঞ্জুর করেন। এরপর ৩ আগস্ট থেকে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়ে ৮ অক্টোবর শেষ হয়।

মামলার প্রাথমিক তদন্ত করেন তদন্ত সংস্থার উপ-পরিচালক মো. জানে আলম খান। পরে তদন্তের দায়িত্ব পান উপ-পরিচালক মো. আলমগীর। তাকে সহযোগিতা করেন বিশেষ তদন্ত কর্মকর্তা তানভীর হাসান জোহা। গত ১২ মে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা আলমগীর। এরপর ৩১ মে দেওয়া হয় সম্পূরক অভিযোগ এবং ১ জুন আনুষ্ঠানিক অভিযোগ উপস্থাপন করা হয়।