ঢাকা ০৪:৩৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জুলাই সনদের আগে নির্বাচন দিলে সংস্কার ব্যাহত হতে পারে: নাহিদ

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ৫ আগস্টের আগেই জুলাই মাসে যেন জুলাই সনদ রচিত হয়। জুলাই সনদের মাধ্যমে দেশের মানুষ ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের রূপরেখা এবং শাসন কাঠামো দেখতে চায়। জুলাই সনদ হওয়ার আগে যেন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা না করা হয়। এতে সংস্কার প্রক্রিয়া ব্যাহত হতে পারে

সোমবার (২ জুন) সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

নাহিদ ইসলাম বলেন, আগামী ৫ আগস্ট আমাদের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পূর্ণ হবে। এটি আমরা উদযাপন করতে চাই।

তিনি বলেন, যেসব রাজনৈতিক দল দ্রুত নির্বাচন চাচ্ছে আমরা তাদের প্রতি এবং সরকারের প্রতি আহ্বান রেখেছি। ১৬ বছর অপেক্ষা করেছি, ১০ মাস অপেক্ষা করেছি, আরও দুই মাস যেন অপেক্ষা করি। আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকি এবং সরকারকে সময় দেই। এ দুই মাসের মধ্যে আমরা জুলাই সনদ রচনা করে ফেলি।

তিনি আরও বলেন, জুলাই সনদের পরই সরকার যেন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে। জুলাই ঘোষণাপত্রের জন্য ৩০ কার্যদিবস ছিল, সেটা অনেক কার্যদিবস হয়ে গেছে। কিন্তু আমরা কোনো ধরনের পদক্ষেপ দেখছি না। আমরা আহ্বান জানিয়েছি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যেন জুলাই ঘোষণাপত্র বাস্তবায়িত হয়। নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার, নির্বাচন কমিশন আইন সংস্কার এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করা উচিত।

অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংস্কার নিয়ে মতবিরোধের বিষয়ে তিনি বলেন, জাতীয় স্বার্থে, দেশের স্বার্থে ছাড় দেওয়া যেতে পারে। তবে দলীয় স্বার্থে সরকার যেন কোনো সিদ্ধান্ত না নেয় সেজন্য আমরা আহ্বান জানিয়েছি। যদি দেশের স্বার্থ চিন্তা করি তাহলে আমরা অবশ্যই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে পারবো।

এর আগে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় দফায় বৈঠকে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও দুটি জোটের নেতারা অংশ নেন। প্রথমে বিভিন্ন দল ও দুটি জোটকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও শেষপর্যায়ে জমিয়তে উলামায়ে বাংলাদেশ ও ইসলামী ঐক্যজোটকে আমন্ত্রণ জানানো হয়।

বৈঠকে বিএনপির প্রতিনিধিদলে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ, নির্বাহী কমিটির সদস্য রুহুল কুদ্দুস কাজল; জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধিদলে নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান ও হামিদুর রহমান আজাদ; এনসিপির প্রতিনিধিদলে আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্যসচিব আখতার হোসেন ও যুগ্ম আহ্বায়ক সরোয়ার তুষার; এলডিপির চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী; গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি; লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান; খেলাফত মজলিসের ড. আহমদ আব্দুল কাদের; বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক; গণঅধিকার পরিষদের নুরুল হক নুর; সিপিবির সাজেদুল হক রুবেল; বাসদের বজলুর রশিদ ফিরোজ; এবি পার্টির আসাদুজ্জামান ফুয়াদ; নাগরিক ঐক্যের সাকিব আনোয়ার প্রমুখ অংশ নিয়েছেন। এছাড়া ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজসহ অন্য সদস্যরা উপস্থিত রয়েছেন। কমিশনের প্রথম দফার আলোচনা ২০ মার্চ শুরু হয়ে ১৯ মে শেষ হয়। প্রথম দফায় মোট ৩৩টি রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে ৪৫টি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়।

 

 

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Gojnobi biplob

Popular Post

মাহিন হত্যা মামলায় আরো এক আসামি গ্রেফতার হলো ফটিকছড়িতে

জুলাই সনদের আগে নির্বাচন দিলে সংস্কার ব্যাহত হতে পারে: নাহিদ

প্রকাশের সময় : ০৯:২৮:২১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ জুন ২০২৫

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ৫ আগস্টের আগেই জুলাই মাসে যেন জুলাই সনদ রচিত হয়। জুলাই সনদের মাধ্যমে দেশের মানুষ ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের রূপরেখা এবং শাসন কাঠামো দেখতে চায়। জুলাই সনদ হওয়ার আগে যেন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা না করা হয়। এতে সংস্কার প্রক্রিয়া ব্যাহত হতে পারে

সোমবার (২ জুন) সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

নাহিদ ইসলাম বলেন, আগামী ৫ আগস্ট আমাদের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পূর্ণ হবে। এটি আমরা উদযাপন করতে চাই।

তিনি বলেন, যেসব রাজনৈতিক দল দ্রুত নির্বাচন চাচ্ছে আমরা তাদের প্রতি এবং সরকারের প্রতি আহ্বান রেখেছি। ১৬ বছর অপেক্ষা করেছি, ১০ মাস অপেক্ষা করেছি, আরও দুই মাস যেন অপেক্ষা করি। আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকি এবং সরকারকে সময় দেই। এ দুই মাসের মধ্যে আমরা জুলাই সনদ রচনা করে ফেলি।

তিনি আরও বলেন, জুলাই সনদের পরই সরকার যেন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে। জুলাই ঘোষণাপত্রের জন্য ৩০ কার্যদিবস ছিল, সেটা অনেক কার্যদিবস হয়ে গেছে। কিন্তু আমরা কোনো ধরনের পদক্ষেপ দেখছি না। আমরা আহ্বান জানিয়েছি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যেন জুলাই ঘোষণাপত্র বাস্তবায়িত হয়। নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার, নির্বাচন কমিশন আইন সংস্কার এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করা উচিত।

অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংস্কার নিয়ে মতবিরোধের বিষয়ে তিনি বলেন, জাতীয় স্বার্থে, দেশের স্বার্থে ছাড় দেওয়া যেতে পারে। তবে দলীয় স্বার্থে সরকার যেন কোনো সিদ্ধান্ত না নেয় সেজন্য আমরা আহ্বান জানিয়েছি। যদি দেশের স্বার্থ চিন্তা করি তাহলে আমরা অবশ্যই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে পারবো।

এর আগে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় দফায় বৈঠকে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও দুটি জোটের নেতারা অংশ নেন। প্রথমে বিভিন্ন দল ও দুটি জোটকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও শেষপর্যায়ে জমিয়তে উলামায়ে বাংলাদেশ ও ইসলামী ঐক্যজোটকে আমন্ত্রণ জানানো হয়।

বৈঠকে বিএনপির প্রতিনিধিদলে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ, নির্বাহী কমিটির সদস্য রুহুল কুদ্দুস কাজল; জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধিদলে নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান ও হামিদুর রহমান আজাদ; এনসিপির প্রতিনিধিদলে আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্যসচিব আখতার হোসেন ও যুগ্ম আহ্বায়ক সরোয়ার তুষার; এলডিপির চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী; গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি; লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান; খেলাফত মজলিসের ড. আহমদ আব্দুল কাদের; বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক; গণঅধিকার পরিষদের নুরুল হক নুর; সিপিবির সাজেদুল হক রুবেল; বাসদের বজলুর রশিদ ফিরোজ; এবি পার্টির আসাদুজ্জামান ফুয়াদ; নাগরিক ঐক্যের সাকিব আনোয়ার প্রমুখ অংশ নিয়েছেন। এছাড়া ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজসহ অন্য সদস্যরা উপস্থিত রয়েছেন। কমিশনের প্রথম দফার আলোচনা ২০ মার্চ শুরু হয়ে ১৯ মে শেষ হয়। প্রথম দফায় মোট ৩৩টি রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে ৪৫টি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়।