ঢাকা ০৪:২২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

স্বামীর অধিকার সন্তানের স্বীকৃতির দাবিতে ৪ দিন ধরে অনশন করছেন এক নারী

 নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলায় সুখারী ইউনিয়নে দ্বিতীয় স্বামীর বাড়িতে স্ত্রীর দাবিতে ৪ দিন ধরে অনশনে বসেছেন মিতু আক্তার নামের দুই সন্তানের জননী।

দুই সন্তানের জন্য মিতু আক্তার (২৮) উপজেলা সুখারী ইউনিয়নের দেওশ্রী গ্রামের মৃত আব্দুল জব্বারের মেয়ে।। উপজেলার সুখারী ইউনিয়নের দেওশ্রী গ্রামের মৃত মোগল মিয়ার ছেলে আবুল কায়েস মিয়ার বাড়িতে অনশনে বসা নারী দুজনে একই গ্রামের বাসিন্দা। এর আগে ২০২৪ সালে ডিসেম্বরে মাসে মিতু আক্তার তার প্রথম স্বামী মিজানুর রহমানের কাছ থেকে পরকীয়া প্রেমিক কায়েস মিয়ার বাড়িতে সামির অধিকার চেয়ে অনশনে বসেন।

পরে এলাকাবাসীর সালিশের দরকার করে সাড়ে তিন লক্ষ টাকা দিয়ে দুই সন্তানের জননী কে মিতু আক্তার কে বিদায় করেন। এরপরও কায়েস হাল ছাড়েননি তার সাথে যোগাযোগ করে ঢাকায় গিয়ে দুইজন বাসা ভাড়া করে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাস করে এবং সাড়ে ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা দেন মোহর দিয়ে রেজিস্ট্রি কাবিন মূলে মিতু আক্তার কে গত ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে বিবাহ করেন দেওশ্রী গ্রামের মৃত মোগল মেয়ের ছেলে কায়েস।

মিতু ৪ মাসের অন্ত:সত্ত্বা হয়ে পড়লে স্ত্রীকে রেখে গোপনে গ্রামের বাড়িতে চলে আসে কায়েস মিয়া। মিতু স্বামীকে অনেক খোঁজা খুঁজি করে বাড়িতে আসলে কায়েস স্ত্রীকে দেখে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়। কায়েসের বসতঘরে তালা ঝুলিয়ে পরিবারের অন্য সদস্যরা ও অন্যত্র চলে যায়।

দুই সন্তানের জননী মিতু আক্তার বর্তমানে দ্বিতীয় স্বামী কায়েসের ঘরের বারান্দায় বসবাস করছেন। শনিবার (৪ অক্টোবর) দেওশ্রী গ্রামের বাড়িতে সরজমিন গেলে দ্বিতীয় স্বামী কায়েসকে পাওয়া যায়নি। তার বসতঘরটি তালা ঝুলিয়ে কায়েসের মা ও অন্যত্র চলে গেছেন। ভুক্ত ভুগী দুই সন্তানের জননী মিতু আক্তার বলেন, ‘কায়েসের বাড়ি ও আমার বাড়ি একই গ্রামে থাকায় আমার বিয়ের আগেই থেকেই তার সাথে পরিচয় ছিল।

আমার বিয়ে হওয়ার পর থেকেই সে আমার বাসায় আসা যাওয়া করত। একপর্যায়ে আমার স্বামী মিজানুরে সন্দেহ হয় এবং বাসা থেকে আমাকে বের করে দেয়। তিনি আরও বলেন, ‘নিরুপায় হয়ে দুই সন্তান রেখে বিয়ের স্বীকৃতির জন্য কায়েসের বাড়িতে গত ডিসেম্বরে ১০ দিন অনশনে ছিলাম।

পরে কায়েস আমার সাথে যোগাযোগ করে ঢাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে স্বামী স্ত্রীর পরিচয় বসবাস করি আমি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ি। তখন কায়স আমাকে চাপ সৃষ্টি করে সন্তান নষ্ট করে দেওয়ার জন্য আমি সন্তান নষ্ট করিনি পরে আমাকে রেজিস্ট্রি মূলে আমাকে বিয়ে করেন আমি এখন ৪ মাসের অন্ত:সত্ত্বা।

আমি আমার সন্তানের স্বীকৃতি এবং স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবিতে কায়েসের বাড়িতে আসলে তারা সবাই চলে যায়। এখন খেয়ে না খেয়ে তাদের বসত ঘরের বারান্দায় ৪ দিন ধরে বসবাস করছি। যতদিন পযর্ন্ত আমার সন্তানের পরিচয় এবং স্ত্রী স্বীকৃতি না পাই, ততদিন আমি কোথাও যাব না।’

প্রয়োজনে এখান থেকে আমার লাশ যাবে তবুও আমি আমার সিদ্ধান্ত থেকে এক চুলও নড়বো না। ঘটনায় আটপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মোঃ আশরাফুজ্জামান বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই যে তবে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ ব্যাপারে আটপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইউএনও মোঃ শাহনূর রহমান বলেন, উক্ত বিষয়ে আমি খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Gojnobi biplob

Popular Post

মাহিন হত্যা মামলায় আরো এক আসামি গ্রেফতার হলো ফটিকছড়িতে

স্বামীর অধিকার সন্তানের স্বীকৃতির দাবিতে ৪ দিন ধরে অনশন করছেন এক নারী

প্রকাশের সময় : ১০:৫৩:৪৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ অক্টোবর ২০২৫

 নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলায় সুখারী ইউনিয়নে দ্বিতীয় স্বামীর বাড়িতে স্ত্রীর দাবিতে ৪ দিন ধরে অনশনে বসেছেন মিতু আক্তার নামের দুই সন্তানের জননী।

দুই সন্তানের জন্য মিতু আক্তার (২৮) উপজেলা সুখারী ইউনিয়নের দেওশ্রী গ্রামের মৃত আব্দুল জব্বারের মেয়ে।। উপজেলার সুখারী ইউনিয়নের দেওশ্রী গ্রামের মৃত মোগল মিয়ার ছেলে আবুল কায়েস মিয়ার বাড়িতে অনশনে বসা নারী দুজনে একই গ্রামের বাসিন্দা। এর আগে ২০২৪ সালে ডিসেম্বরে মাসে মিতু আক্তার তার প্রথম স্বামী মিজানুর রহমানের কাছ থেকে পরকীয়া প্রেমিক কায়েস মিয়ার বাড়িতে সামির অধিকার চেয়ে অনশনে বসেন।

পরে এলাকাবাসীর সালিশের দরকার করে সাড়ে তিন লক্ষ টাকা দিয়ে দুই সন্তানের জননী কে মিতু আক্তার কে বিদায় করেন। এরপরও কায়েস হাল ছাড়েননি তার সাথে যোগাযোগ করে ঢাকায় গিয়ে দুইজন বাসা ভাড়া করে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাস করে এবং সাড়ে ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা দেন মোহর দিয়ে রেজিস্ট্রি কাবিন মূলে মিতু আক্তার কে গত ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে বিবাহ করেন দেওশ্রী গ্রামের মৃত মোগল মেয়ের ছেলে কায়েস।

মিতু ৪ মাসের অন্ত:সত্ত্বা হয়ে পড়লে স্ত্রীকে রেখে গোপনে গ্রামের বাড়িতে চলে আসে কায়েস মিয়া। মিতু স্বামীকে অনেক খোঁজা খুঁজি করে বাড়িতে আসলে কায়েস স্ত্রীকে দেখে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়। কায়েসের বসতঘরে তালা ঝুলিয়ে পরিবারের অন্য সদস্যরা ও অন্যত্র চলে যায়।

দুই সন্তানের জননী মিতু আক্তার বর্তমানে দ্বিতীয় স্বামী কায়েসের ঘরের বারান্দায় বসবাস করছেন। শনিবার (৪ অক্টোবর) দেওশ্রী গ্রামের বাড়িতে সরজমিন গেলে দ্বিতীয় স্বামী কায়েসকে পাওয়া যায়নি। তার বসতঘরটি তালা ঝুলিয়ে কায়েসের মা ও অন্যত্র চলে গেছেন। ভুক্ত ভুগী দুই সন্তানের জননী মিতু আক্তার বলেন, ‘কায়েসের বাড়ি ও আমার বাড়ি একই গ্রামে থাকায় আমার বিয়ের আগেই থেকেই তার সাথে পরিচয় ছিল।

আমার বিয়ে হওয়ার পর থেকেই সে আমার বাসায় আসা যাওয়া করত। একপর্যায়ে আমার স্বামী মিজানুরে সন্দেহ হয় এবং বাসা থেকে আমাকে বের করে দেয়। তিনি আরও বলেন, ‘নিরুপায় হয়ে দুই সন্তান রেখে বিয়ের স্বীকৃতির জন্য কায়েসের বাড়িতে গত ডিসেম্বরে ১০ দিন অনশনে ছিলাম।

পরে কায়েস আমার সাথে যোগাযোগ করে ঢাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে স্বামী স্ত্রীর পরিচয় বসবাস করি আমি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ি। তখন কায়স আমাকে চাপ সৃষ্টি করে সন্তান নষ্ট করে দেওয়ার জন্য আমি সন্তান নষ্ট করিনি পরে আমাকে রেজিস্ট্রি মূলে আমাকে বিয়ে করেন আমি এখন ৪ মাসের অন্ত:সত্ত্বা।

আমি আমার সন্তানের স্বীকৃতি এবং স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবিতে কায়েসের বাড়িতে আসলে তারা সবাই চলে যায়। এখন খেয়ে না খেয়ে তাদের বসত ঘরের বারান্দায় ৪ দিন ধরে বসবাস করছি। যতদিন পযর্ন্ত আমার সন্তানের পরিচয় এবং স্ত্রী স্বীকৃতি না পাই, ততদিন আমি কোথাও যাব না।’

প্রয়োজনে এখান থেকে আমার লাশ যাবে তবুও আমি আমার সিদ্ধান্ত থেকে এক চুলও নড়বো না। ঘটনায় আটপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মোঃ আশরাফুজ্জামান বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই যে তবে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ ব্যাপারে আটপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইউএনও মোঃ শাহনূর রহমান বলেন, উক্ত বিষয়ে আমি খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।