
নেত্রকোণার কেন্দুয়ায় মানুষের একটি কঙ্কাল উদ্ধার করেছে পুলিশ। কঙ্কালটি প্রায় তিন মাস আগে নিখোঁজ হওয়া ছাত্রদল নেতা শামীমের বলে দাবি করছে তার পরিবার।পরে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসাপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) স্থানীয়দের খবরের ভিত্তিতে এ লাশ উদ্ধার করা হয়।কেন্দুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় লোকজন ও স্বজনদের ধারণা, লাশটি উপজেলার গন্ডা ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য শামীমের হতে পারে। গত ২ জুলাই রাত সাড়ে ১১টার দিকে ইউনিয়নের পাহাড়পুর এলাকা থেকে শামীম রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হন। তবে লাশটি পচে-গলিত থাকায় তাৎক্ষণিকভাবে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।
রফিকুল ইসলাম শামীমের স্ত্রী নাজমা আক্তার বলেন, ‘বিল থেকে যে কঙ্কাল উদ্ধার হইছে, এইটা আমার স্বামীর। মনকান্দা মাদ্রাসায় ঘুষ বানিজ্যের প্রতিবাদ করায় প্রতিপক্ষের লোকজন তারে খুন কইরা গুম কইরা রাখছিল। আমি আমার স্বামী হত্যার রহস্য উদ্ঘাটনসহ বিচার চাই।
এ ঘটনায় বিশ জনকে বিবাদী করে নেত্রকোণাে আমলী আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন শামীমের বড় ভাই সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমার ভাই নিখোঁজ হওয়ার পর প্রথমে আমি কেন্দুয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করি। পরবর্তীতে সাদ্রাসা শিক্ষক সাইফুলকে প্রধান বিবাদী করে কেন্দুয়া থানায় যখন অভিযোগ দায়ের করতে যাই তখনেই বাধেঁ বিপত্তি। অসি সাহেব বলেন, অভিযোগ থেকে প্রধান বিবাদী সাইফুলের নাম বাদ দিতে। সাইফুলের নাম বাদ না দিলে মামলাটি না নেওয়ার নির্দেশ রয়েছে। থানার বারান্দায় কয়েকদিন ঘুরাঘুরির পরও মামলা না নেওয়ায় সুবিচারের আশায় আদালতে মামলা করতে বাধ্য হই।
নিখোঁজ হওয়া শামিমের বাবা আক্কাছ আলী বলেন, আমার ছেলে নিখোঁজ হওয়ার পর উদ্বারের ব্যাপারে বার বার পুলিশের ধারস্থ হয়েছি, সার্কেল সাহেবের পা ধরে কান্নাকাটি করেছি কিন্তু পুলিশ কোন সহযোগীতা করে নাই। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও কেন্দুয়া সার্কেলের কাছে আমি অনেক মিনতি করেছি চেলেকে উদ্বারের ব্যাপারে। তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সার্কেল সাহেব আমার ছেলেকে উদ্বার না করে বলে যে, আপনারা আপনার ছেলের খোঁজ নিন। আর আপনার ছেলে আপনাদের চেয়ে ভাল আছে, খাইতেছে, পড়তেছে আমাকে মিত্যা আশ্বাস দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে রেখেছে। আজ প্রায় তিন মাস পর বিল থেকে আমার ছেলের মৃতদেহ উদ্বার করা হয়েছে।
আদালতে মামলা দায়েরের পরও কেন্দুয়া থানা পুলি আমাকে কোন ধরণের সাহায্য করেনি। প্রধান আসামীকে র্যাব গ্রেপ্তার করে তানার মাধ্যমে আদালতে পাঠলেও পুলিশ রিমান্ড মন্জুরে জুরালো কোন ভুমিকা রাখেন নি। নেত্রকোণা জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ও নেত্রকোণা -৩, বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী রফিকুল ইসলাম হিলালী আমার ভাইকে জীবিত অথবা মৃত উদ্বারের ব্যাপারে কোন ভুমিকা না রেখে আসামীদের সেল্টার দিয়েছে। যে কারণে আসামী সাইফুলের রিমান্ডে তাকে কেন্দুয়া থানা পুলিশ জামাই আদর করেছে। হিলালী সাহেব আমার ক্ষতি করেছে। হিলালীর প্রভাবের কারণে আমি থানায় মামলা করতে পারিনি। মাদ্রাসার ঘুষের পাচঁ লক্ষ টাকা হিলালী সাহেবের কাছে রক্ষিত আছে, এই টাকা হিলালী আত্নসাধ করেছে।
এ ব্যাপারে রফিকুল ইসলাম হিলালী বলেন, শামীম আমার দলের লোক। আমি তাকে উদ্বারের ব্যাপারে পুলিশকে বলেছি যে, নিখোাঁজ শামিমের উদ্বারের ব্যাপারে তারাতারি ব্যাবস্থা নিতে। যাদেরকে আসামী করা হয়েছে তারা অনেকেই আমার দলের লোক। যারা এই জগন্য কাজ ঘটিয়েছে তাদের চুড়ান্ত বিচার দাবি করছি। আর মাদ্রাসার কমিটির লোকজনেই দন্ব রিসনে আমার কাছে টাকা আমানত রেখেছে। দদ্ব নিরসন হয়ে গেলে কমিটি যখনেই চাইবে তখনেই আমি টাকা ফেরত দিয়ে দিব। নিখোাঁজ শামীম ও বিবাদীরা অনেকেই আমার খুব কাছের, আমি কোন পক্ষপাতিত্ব করিনি।
কেন্দুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে কেন্দুয়া থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। সঠিক পরিচয় নিশ্চিত করতে ডিএনএ পরীক্ষাসহ অন্যান্য প্রক্রিয়া গ্রহণের প্রস্ততি চলছে। শামিমের ভাইকে বার বার বলার পরেও আমার কাছে আসেনি। থানায় প্রতিদিন অনেক রকমের মামলা হইতেছে, শামিমের মামলা নিলে সমস্য কি। আমরা শামিমের ব্যাপারে যথেষ্ট আন্তরিক আছি।