ঢাকা ০৫:১৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বরগুনার পৌর শহরের গার্মেন্টস পট্টিতে মন্বয়ক পরিচয়ে ব্যবসায়ীকে মারধর, দোকানপাট বন্ধের ঘোষণা

ছবি সংগৃহীতঃ

বরগুনার পৌর শহরের গার্মেন্টস পট্টি এলাকায় এক ব্যবসায়ীকে মারধরের ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। শনিবার (২ আগস্ট) রাত ১০টার দিকে ঘটে যাওয়া এ ঘটনার পর আতঙ্কে আশপাশের দোকানপাট বন্ধ করে দেন স্থানীয় বস্ত্র ব্যবসায়ীরা। ঘটনায় জড়িতদের উপযুক্ত শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন ব্যবসায়ী নেতারা।

প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগীদের বরাতে জানা গেছে, জসিম নামের এক ব্যবসায়ী তার শিশু সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে দোকান থেকে বের হয়ে খাবার কিনতে যাচ্ছিলেন। পথে ইয়াসমিন তানিয়া নামে এক নারী পথচারীর সঙ্গে ধাক্কা লাগলে শিশুটি পড়ে যায়। এরপর জসিম ও ওই নারীর মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। বাজারের বস্ত্র ব্যবসায়ী ও ব্যবসায়ী সমিতির নেতারা তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে গিয়ে উভয় পক্ষকে ডেকে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করেন।

কিন্তু সমাধান প্রক্রিয়ার মাঝপথে ইয়াসমিন তানিয়ার ছেলে এবং নিজেকে সমন্বয়ক পরিচয় দেওয়া সিনহা রহমান কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে উপস্থিত হন এবং উত্তেজিত হয়ে জসিমকে প্রকাশ্যে মারধর করেন। এ ঘটনার পরপরই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে, আশপাশের দোকানপাট বন্ধ করে দেন ব্যবসায়ীরা।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী মো. জসিম অভিযোগ করে বলেন, সন্তানকে নিয়ে খাবার কিনতে বের হই। পথে ইয়াসমিন তানিয়া নামে এক নারীর সঙ্গে আমার সন্তানের ধাক্কা লাগে। এতে সে পড়ে যায়। কিন্তু উল্টো ওই নারী আমার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। বিষয়টি শেষ হলেও কিছুক্ষণ পর ব্যবসায়ী সমিতির নেতারা আমাকে মীমাংসার কথা বলে ডাকেন। সেখানে গেলে ওই নারীর ছেলে সিনহা রহমান কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে এসে আমাকে প্রকাশ্যে মারধর করেন। আমি এ ঘটনা বিচার চাই।

ঘটনার বিষয়ে পৌর বস্ত্র ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হারুন-অর-রশীদ বলেন, ‘আমার দোকানে উভয় পক্ষকে ডেকে বসা হয়। কথা বলার একপর্যায়ে ওই নারীর ছেলে ও তার সঙ্গী দোকানে উঠে এসে জসিমকে মারধর শুরু করে। পরে আমরা মিলে তাদের থামাই। এরপর ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং তারা দোকান বন্ধ করে দেয়। বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

অভিযুক্ত সিনহা রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে তার মা ইয়াসমিন তানিয়া ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘একটা ঘটনা নিয়ে বসা হয়েছিল। সেখানে আমার ছেলে ভুল করেছে। সবাই মিলে বসে এর সমাধান করা দরকার।’

ঘটনার বিষয়ে বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইয়াকুব হোসাইন জানান, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। এখন পর্যন্ত কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Gojnobi biplob

Popular Post

মাহিন হত্যা মামলায় আরো এক আসামি গ্রেফতার হলো ফটিকছড়িতে

বরগুনার পৌর শহরের গার্মেন্টস পট্টিতে মন্বয়ক পরিচয়ে ব্যবসায়ীকে মারধর, দোকানপাট বন্ধের ঘোষণা

প্রকাশের সময় : ০১:১৮:৩৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৫

ছবি সংগৃহীতঃ

বরগুনার পৌর শহরের গার্মেন্টস পট্টি এলাকায় এক ব্যবসায়ীকে মারধরের ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। শনিবার (২ আগস্ট) রাত ১০টার দিকে ঘটে যাওয়া এ ঘটনার পর আতঙ্কে আশপাশের দোকানপাট বন্ধ করে দেন স্থানীয় বস্ত্র ব্যবসায়ীরা। ঘটনায় জড়িতদের উপযুক্ত শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন ব্যবসায়ী নেতারা।

প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগীদের বরাতে জানা গেছে, জসিম নামের এক ব্যবসায়ী তার শিশু সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে দোকান থেকে বের হয়ে খাবার কিনতে যাচ্ছিলেন। পথে ইয়াসমিন তানিয়া নামে এক নারী পথচারীর সঙ্গে ধাক্কা লাগলে শিশুটি পড়ে যায়। এরপর জসিম ও ওই নারীর মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। বাজারের বস্ত্র ব্যবসায়ী ও ব্যবসায়ী সমিতির নেতারা তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে গিয়ে উভয় পক্ষকে ডেকে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করেন।

কিন্তু সমাধান প্রক্রিয়ার মাঝপথে ইয়াসমিন তানিয়ার ছেলে এবং নিজেকে সমন্বয়ক পরিচয় দেওয়া সিনহা রহমান কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে উপস্থিত হন এবং উত্তেজিত হয়ে জসিমকে প্রকাশ্যে মারধর করেন। এ ঘটনার পরপরই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে, আশপাশের দোকানপাট বন্ধ করে দেন ব্যবসায়ীরা।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী মো. জসিম অভিযোগ করে বলেন, সন্তানকে নিয়ে খাবার কিনতে বের হই। পথে ইয়াসমিন তানিয়া নামে এক নারীর সঙ্গে আমার সন্তানের ধাক্কা লাগে। এতে সে পড়ে যায়। কিন্তু উল্টো ওই নারী আমার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। বিষয়টি শেষ হলেও কিছুক্ষণ পর ব্যবসায়ী সমিতির নেতারা আমাকে মীমাংসার কথা বলে ডাকেন। সেখানে গেলে ওই নারীর ছেলে সিনহা রহমান কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে এসে আমাকে প্রকাশ্যে মারধর করেন। আমি এ ঘটনা বিচার চাই।

ঘটনার বিষয়ে পৌর বস্ত্র ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হারুন-অর-রশীদ বলেন, ‘আমার দোকানে উভয় পক্ষকে ডেকে বসা হয়। কথা বলার একপর্যায়ে ওই নারীর ছেলে ও তার সঙ্গী দোকানে উঠে এসে জসিমকে মারধর শুরু করে। পরে আমরা মিলে তাদের থামাই। এরপর ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং তারা দোকান বন্ধ করে দেয়। বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

অভিযুক্ত সিনহা রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে তার মা ইয়াসমিন তানিয়া ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘একটা ঘটনা নিয়ে বসা হয়েছিল। সেখানে আমার ছেলে ভুল করেছে। সবাই মিলে বসে এর সমাধান করা দরকার।’

ঘটনার বিষয়ে বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইয়াকুব হোসাইন জানান, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। এখন পর্যন্ত কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।