ঢাকা ১২:৩৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কেন্দুয়ায় শালিশ দরবার উপেক্ষা করে জমি দখলের চেষ্টা, দুই পক্ষের উত্তেজনা চরমে

 নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়নের আটাশিয়া মাইজকান্দি গ্রামে পৈত্রিক জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত সাতজন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে গুরুতর অবস্থায় চারজনকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

ঘটনাটি ঘটে মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে। সংঘর্ষে আহতরা হলেন: মো. সবুজ মিয়ার ছেলে মামুন (৩৫), এমদাদুল (২০), এনামুল (৩০) এবং মৃত মুসলিম উদ্দিনের সন্তান জাহাঙ্গীর (৩৮), আলমগীর (৩৫), জুয়েল (৩০) ও কন্যা হাওয়া (২৫)। শেষোক্ত চারজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ পাঠানো হয়েছে।

ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য মোছাঃ জোৎস্না আক্তার (৫০) বলেন, “আমি পৈত্রিক সূত্রে এ জমির মালিক। এ নিয়ে একাধিকবার দরবার হয়েছে এবং সিদ্ধান্ত আমার পক্ষে এসেছে। কিন্তু মুসলিম উদ্দিনের সন্তানরা তা অমান্য করে বারবার জমি দখলের চেষ্টা করছে। মঙ্গলবার সকালে তারা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে জমিতে ঢোকে। বাধা দিলে সংঘর্ষ শুরু হয়।” স্থানীয় বাসিন্দা ও সাবেক ইউপি সদস্য হারিফ উদ্দিন হানিফ বলেন, “এটি পুরাতন বিরোধ।

জোৎস্না আক্তার বৈধ ওয়ারিশ। দরবারেও সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এরপরও মুসলিম উদ্দিনের ছেলেরা জোরপূর্বক জমি দখল করতে গিয়ে এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্ম দিয়েছে।” ঘটনার পর পরই মো. সবুজ মিয়া ও তার স্ত্রী মোছাঃ জোৎস্না আক্তার কেন্দুয়া থানায় পৃথক দুটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, বিবাদীরা ভয়ভীতি, হামলা, জমি দখল ও মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দিয়ে আসছে।

জমির খতিয়ান, দাগ ও দলিলসহ প্রাপ্ত সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ৪৬ শতাংশ। এ বিষয়ে কেন্দুয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. হারুনুর রশিদ বলেন, “ঘটনাস্থলে গিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের প্রমাণ পেয়েছি। এখন পর্যন্ত কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি বলেছিলেন, তবে পরে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে।

এদিকে স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন, এ জমি বিরোধ দ্রুত নিষ্পত্তি না হলে ভবিষ্যতে বড় ধরনের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Gojnobi biplob

Popular Post

মাহিন হত্যা মামলায় আরো এক আসামি গ্রেফতার হলো ফটিকছড়িতে

কেন্দুয়ায় শালিশ দরবার উপেক্ষা করে জমি দখলের চেষ্টা, দুই পক্ষের উত্তেজনা চরমে

প্রকাশের সময় : ১১:১৮:৫৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫

 নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়নের আটাশিয়া মাইজকান্দি গ্রামে পৈত্রিক জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত সাতজন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে গুরুতর অবস্থায় চারজনকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

ঘটনাটি ঘটে মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে। সংঘর্ষে আহতরা হলেন: মো. সবুজ মিয়ার ছেলে মামুন (৩৫), এমদাদুল (২০), এনামুল (৩০) এবং মৃত মুসলিম উদ্দিনের সন্তান জাহাঙ্গীর (৩৮), আলমগীর (৩৫), জুয়েল (৩০) ও কন্যা হাওয়া (২৫)। শেষোক্ত চারজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ পাঠানো হয়েছে।

ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য মোছাঃ জোৎস্না আক্তার (৫০) বলেন, “আমি পৈত্রিক সূত্রে এ জমির মালিক। এ নিয়ে একাধিকবার দরবার হয়েছে এবং সিদ্ধান্ত আমার পক্ষে এসেছে। কিন্তু মুসলিম উদ্দিনের সন্তানরা তা অমান্য করে বারবার জমি দখলের চেষ্টা করছে। মঙ্গলবার সকালে তারা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে জমিতে ঢোকে। বাধা দিলে সংঘর্ষ শুরু হয়।” স্থানীয় বাসিন্দা ও সাবেক ইউপি সদস্য হারিফ উদ্দিন হানিফ বলেন, “এটি পুরাতন বিরোধ।

জোৎস্না আক্তার বৈধ ওয়ারিশ। দরবারেও সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এরপরও মুসলিম উদ্দিনের ছেলেরা জোরপূর্বক জমি দখল করতে গিয়ে এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্ম দিয়েছে।” ঘটনার পর পরই মো. সবুজ মিয়া ও তার স্ত্রী মোছাঃ জোৎস্না আক্তার কেন্দুয়া থানায় পৃথক দুটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, বিবাদীরা ভয়ভীতি, হামলা, জমি দখল ও মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দিয়ে আসছে।

জমির খতিয়ান, দাগ ও দলিলসহ প্রাপ্ত সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ৪৬ শতাংশ। এ বিষয়ে কেন্দুয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. হারুনুর রশিদ বলেন, “ঘটনাস্থলে গিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের প্রমাণ পেয়েছি। এখন পর্যন্ত কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি বলেছিলেন, তবে পরে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে।

এদিকে স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন, এ জমি বিরোধ দ্রুত নিষ্পত্তি না হলে ভবিষ্যতে বড় ধরনের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে।