ঢাকা ১২:১৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সাড়ে দশটায় আসেন শিক্ষক সময়মতো বিদ্যালয়ে না আসায় পাঠদান কার্যক্রম চরমভাবে ব্যাহত

ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার ৩৭ নং মধ্য গোপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকের অনুপস্থিতি, সময়মতো বিদ্যালয়ে না আসা এবং দপ্তরির দায়িত্বে গাফিলতির কারণে শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

গতকাল  ২৬ জুন  বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গিয়ে দেখা যায়, ৪ জন শিক্ষকের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কেবল সহকারী শিক্ষিকা মোসাঃ সালমা আক্তার। তিনি প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের একত্র করে এককভাবে পাঠদান করছিলেন। বাকি দুই শিক্ষক ছুটিতে থাকলেও আরেকজন সহকারী শিক্ষিকা মোসাঃ মুন্নী আক্তার (নাসরীন) তখনও বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত ছিলেন।

বিজ্ঞাপন

সংবাদকর্মীদের উপস্থিতি টের পেয়ে তড়িঘড়ি করে বিদ্যালয়ে হাজির হন ওই শিক্ষিকা। অসুস্থতার কথা জানালেও তিনি ছুটি নিয়েছেন কি না—এমন প্রশ্নের কোনো স্পষ্ট উত্তর দেননি।

বিদ্যালয়ের দপ্তরি মো. রিয়াজ হোসেন স্কুলের দরজা খুলে বাজারে চলে গেছেন বলে জানান সহকারী শিক্ষিকা সালমা আক্তার। এ সময় ওয়াশ ব্লকের কেচিগেইট তালাবদ্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা শৌচাগার ব্যবহার করতে না পেরে সমস্যায় পড়ে। পরে শিক্ষার্থীরাই তালা খুলে সেটি ব্যবহার উপযোগী করে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, দপ্তরি রিয়াজ হোসেন নিয়মিতভাবে দায়িত্বে অবহেলা করেন। এমনকি শিক্ষার্থীদের দিয়ে নিজের ব্যক্তিগত কাজ করিয়ে থাকেন বলেও অভিযোগ আছে।

অভিভাবকরা বলেন, শিক্ষকরা নিয়মিত বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকেন না। অনেকে শুধুমাত্র হাজিরা দিয়ে বাড়ির কাজে চলে যান। ফলে শিক্ষার মান দিন দিন অবনতি হচ্ছে এবং বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে। কোমলমতি শিশুদের ভবিষ্যৎ নিয়ে তারা চরমভাবে উদ্বিগ্ন।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শাহিনা বেগম বলেন, “আমি বর্তমানে ছুটিতে রয়েছি। একজন শিক্ষিকার ছুটির বিষয়টি জানি। অন্যজন কেন অনুপস্থিত ছিলেন এবং দপ্তরি কেন দায়িত্ব পালন করেননি, তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তবে তিনি অনুরোধ করেন, বিষয়টি যেন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ না করা হয় এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও না জানানো হয়।

এ বিষয়ে ক্লাস্টারভুক্ত সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, “বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা হবে। দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

বিজ্ঞাপন

নলছিটি উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (চলতি দায়িত্ব) শিরিন আকতার আজকের পত্রিকাকে বলেন, “বিষয়টি আপনার মাধ্যমেই জানলাম। তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Gojnobi biplob

Popular Post

মাহিন হত্যা মামলায় আরো এক আসামি গ্রেফতার হলো ফটিকছড়িতে

সাড়ে দশটায় আসেন শিক্ষক সময়মতো বিদ্যালয়ে না আসায় পাঠদান কার্যক্রম চরমভাবে ব্যাহত

প্রকাশের সময় : ১১:০১:৩৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫

ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার ৩৭ নং মধ্য গোপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকের অনুপস্থিতি, সময়মতো বিদ্যালয়ে না আসা এবং দপ্তরির দায়িত্বে গাফিলতির কারণে শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

গতকাল  ২৬ জুন  বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গিয়ে দেখা যায়, ৪ জন শিক্ষকের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কেবল সহকারী শিক্ষিকা মোসাঃ সালমা আক্তার। তিনি প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের একত্র করে এককভাবে পাঠদান করছিলেন। বাকি দুই শিক্ষক ছুটিতে থাকলেও আরেকজন সহকারী শিক্ষিকা মোসাঃ মুন্নী আক্তার (নাসরীন) তখনও বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত ছিলেন।

বিজ্ঞাপন

সংবাদকর্মীদের উপস্থিতি টের পেয়ে তড়িঘড়ি করে বিদ্যালয়ে হাজির হন ওই শিক্ষিকা। অসুস্থতার কথা জানালেও তিনি ছুটি নিয়েছেন কি না—এমন প্রশ্নের কোনো স্পষ্ট উত্তর দেননি।

বিদ্যালয়ের দপ্তরি মো. রিয়াজ হোসেন স্কুলের দরজা খুলে বাজারে চলে গেছেন বলে জানান সহকারী শিক্ষিকা সালমা আক্তার। এ সময় ওয়াশ ব্লকের কেচিগেইট তালাবদ্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা শৌচাগার ব্যবহার করতে না পেরে সমস্যায় পড়ে। পরে শিক্ষার্থীরাই তালা খুলে সেটি ব্যবহার উপযোগী করে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, দপ্তরি রিয়াজ হোসেন নিয়মিতভাবে দায়িত্বে অবহেলা করেন। এমনকি শিক্ষার্থীদের দিয়ে নিজের ব্যক্তিগত কাজ করিয়ে থাকেন বলেও অভিযোগ আছে।

অভিভাবকরা বলেন, শিক্ষকরা নিয়মিত বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকেন না। অনেকে শুধুমাত্র হাজিরা দিয়ে বাড়ির কাজে চলে যান। ফলে শিক্ষার মান দিন দিন অবনতি হচ্ছে এবং বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে। কোমলমতি শিশুদের ভবিষ্যৎ নিয়ে তারা চরমভাবে উদ্বিগ্ন।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শাহিনা বেগম বলেন, “আমি বর্তমানে ছুটিতে রয়েছি। একজন শিক্ষিকার ছুটির বিষয়টি জানি। অন্যজন কেন অনুপস্থিত ছিলেন এবং দপ্তরি কেন দায়িত্ব পালন করেননি, তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তবে তিনি অনুরোধ করেন, বিষয়টি যেন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ না করা হয় এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও না জানানো হয়।

এ বিষয়ে ক্লাস্টারভুক্ত সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, “বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা হবে। দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

বিজ্ঞাপন

নলছিটি উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (চলতি দায়িত্ব) শিরিন আকতার আজকের পত্রিকাকে বলেন, “বিষয়টি আপনার মাধ্যমেই জানলাম। তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”