ঢাকা ১২:১৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নাটোরে সরকারি গাড়িতে কোরবানির গরু নিলেন ইউএনও

সরকারি গাড়িতে করে নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হা-মীম তাবাসসুম প্রভা রাজশাহী থেকে কোরবানির গরু বহন করে নাটোরে নিয়ে গেছেন। বৃহস্পতিবার (০৫ জুন) বিকেলে রাজশাহীর সিটি হাট থেকে গরু কিনে এটি তিনি তার সরকারি গাড়িতে করে নিয়ে যান।

জানা গেছে, সভায় যোগ দিতে সরকারি গাড়িতেই রাজশাহী এসেছিলেন নাটোরের বাগাতিপাড়ার ইউএনও। সভা শেষ করে সোজা হাটে গিয়ে তিনি কোরবানির গরু কিনেছেন। তারপর সেই সরকারি গাড়িতেই তুলে নিয়ে গেছেন গরু। এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা দেখা দিয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী অঞ্চলে আমের কেনাবেচার সময় আড়তদারদের বাড়তি ওজন নেওয়া নিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে একটি সভা ছিল। এ সভায় এসেছিলেন বাগাতিপাড়ার ইউএনও হা-মীম তাবাসসুম প্রভা। তিনি এখন বাগাতিপাড়া উপজেলার সহকারী কমিশনারেরও (ভূমি) অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন।

তাই উপজেলার সহকারী কমিশনারের (ভূমি) ডাবল কেবিন পিকআপ নিয়েই তিনি সভায় আসেন। সভা শেষ হয় দুপুরে। এরপর বিকেলে রাজশাহীর সিটি হাটে গিয়ে তিনি কোরবানির জন্য একটি গরু কেনেন। সেই গরু তিনি গাড়ির পেছনের কেবিনে তুলে নেন। আর সামনের কেবিনে বসেন ইউএনও। এভাবে তিনি সরকারি গাড়িতে রাজশাহী থেকে গরু নাটোর নিয়ে যান।

জানতে চাইলে গাড়ির চালক সুমন আলী বলেন, ‘মিটিং শেষ করে স্যার হাটে যান গরু কিনতে। তারপর গাড়িতে করেই গরু বাগাতিপাড়ায় নিয়ে এসেছি। স্যার সঙ্গেই ছিলেন। তার অনুমতি পেয়েই আমি গাড়িতে গরু তুলেছি। এ বিষয়ে কোনো কথা থাকলে ওনাকে বলবেন।’

জানতে চাইলে ইউএনও হা-মীম তাবাসসুম প্রভা কালবেলাকে বলেন, ‘আমার বাগাতিপাড়া উপজেলায় কোনো পশুহাট নেই। সরকারি ছুটি চলছে, তারপরও আমি মাঠে কাজ করছি। এটা আমার দায়িত্ব। সঙ্গত কারণেই আমাকে বাগাতিপাড়াতেই ঈদ করতে হচ্ছে। তবে একটা কোরবানি তো দিতে হবে। কিন্তু এত ব্যস্ত ছিলাম যে, একটা কোরবানির পশু কেনার সময় পাইনি। আশপাশে খোঁজ নিয়েও আমি গরু পাইনি। তাই মিটিং শেষ করে আসার সময় দুই থেকে আড়াই মণ ওজনের মাঝারি আকারের একটা গরু রাজশাহী থেকেই কিনে এনেছি।’

সরকারি গাড়িতে গরু ওঠানো ঠিক হয়েছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি তো গাড়িতে অবৈধ কিছু তুলিনি। একটা গরু, গাড়ির পেছনের কেবিনে জায়গা ছিল তাই তুলে নিয়েছি। আমরা তো ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সময় অনেক কিছুই জব্দ করে গাড়ির ওই জায়গাটাতে তুলে আনি। কিন্তু গরু আনার কারণে নানা কথা শুরু হয়েছে।’

তবে গাড়িতে গরু পরিবহনের কাজটি ঠিক হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান। তিনি বলেন, ‘এটা ঠিক না, এটা নিন্দনীয়। এটা আমরা আশা করি না। এ বিষয়ে একটু খোঁজখবর নেব। ভবিষ্যতে কেউ যাতে এমন না করেন।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Gojnobi biplob

Popular Post

মাহিন হত্যা মামলায় আরো এক আসামি গ্রেফতার হলো ফটিকছড়িতে

নাটোরে সরকারি গাড়িতে কোরবানির গরু নিলেন ইউএনও

প্রকাশের সময় : ০৪:০৩:৩৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৬ জুন ২০২৫

সরকারি গাড়িতে করে নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হা-মীম তাবাসসুম প্রভা রাজশাহী থেকে কোরবানির গরু বহন করে নাটোরে নিয়ে গেছেন। বৃহস্পতিবার (০৫ জুন) বিকেলে রাজশাহীর সিটি হাট থেকে গরু কিনে এটি তিনি তার সরকারি গাড়িতে করে নিয়ে যান।

জানা গেছে, সভায় যোগ দিতে সরকারি গাড়িতেই রাজশাহী এসেছিলেন নাটোরের বাগাতিপাড়ার ইউএনও। সভা শেষ করে সোজা হাটে গিয়ে তিনি কোরবানির গরু কিনেছেন। তারপর সেই সরকারি গাড়িতেই তুলে নিয়ে গেছেন গরু। এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা দেখা দিয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী অঞ্চলে আমের কেনাবেচার সময় আড়তদারদের বাড়তি ওজন নেওয়া নিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে একটি সভা ছিল। এ সভায় এসেছিলেন বাগাতিপাড়ার ইউএনও হা-মীম তাবাসসুম প্রভা। তিনি এখন বাগাতিপাড়া উপজেলার সহকারী কমিশনারেরও (ভূমি) অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন।

তাই উপজেলার সহকারী কমিশনারের (ভূমি) ডাবল কেবিন পিকআপ নিয়েই তিনি সভায় আসেন। সভা শেষ হয় দুপুরে। এরপর বিকেলে রাজশাহীর সিটি হাটে গিয়ে তিনি কোরবানির জন্য একটি গরু কেনেন। সেই গরু তিনি গাড়ির পেছনের কেবিনে তুলে নেন। আর সামনের কেবিনে বসেন ইউএনও। এভাবে তিনি সরকারি গাড়িতে রাজশাহী থেকে গরু নাটোর নিয়ে যান।

জানতে চাইলে গাড়ির চালক সুমন আলী বলেন, ‘মিটিং শেষ করে স্যার হাটে যান গরু কিনতে। তারপর গাড়িতে করেই গরু বাগাতিপাড়ায় নিয়ে এসেছি। স্যার সঙ্গেই ছিলেন। তার অনুমতি পেয়েই আমি গাড়িতে গরু তুলেছি। এ বিষয়ে কোনো কথা থাকলে ওনাকে বলবেন।’

জানতে চাইলে ইউএনও হা-মীম তাবাসসুম প্রভা কালবেলাকে বলেন, ‘আমার বাগাতিপাড়া উপজেলায় কোনো পশুহাট নেই। সরকারি ছুটি চলছে, তারপরও আমি মাঠে কাজ করছি। এটা আমার দায়িত্ব। সঙ্গত কারণেই আমাকে বাগাতিপাড়াতেই ঈদ করতে হচ্ছে। তবে একটা কোরবানি তো দিতে হবে। কিন্তু এত ব্যস্ত ছিলাম যে, একটা কোরবানির পশু কেনার সময় পাইনি। আশপাশে খোঁজ নিয়েও আমি গরু পাইনি। তাই মিটিং শেষ করে আসার সময় দুই থেকে আড়াই মণ ওজনের মাঝারি আকারের একটা গরু রাজশাহী থেকেই কিনে এনেছি।’

সরকারি গাড়িতে গরু ওঠানো ঠিক হয়েছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি তো গাড়িতে অবৈধ কিছু তুলিনি। একটা গরু, গাড়ির পেছনের কেবিনে জায়গা ছিল তাই তুলে নিয়েছি। আমরা তো ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সময় অনেক কিছুই জব্দ করে গাড়ির ওই জায়গাটাতে তুলে আনি। কিন্তু গরু আনার কারণে নানা কথা শুরু হয়েছে।’

তবে গাড়িতে গরু পরিবহনের কাজটি ঠিক হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান। তিনি বলেন, ‘এটা ঠিক না, এটা নিন্দনীয়। এটা আমরা আশা করি না। এ বিষয়ে একটু খোঁজখবর নেব। ভবিষ্যতে কেউ যাতে এমন না করেন।’