ঢাকা ১২:০৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কুষ্টিয়া অস্ত্রসহ চরমপন্থি নেতা লিপটন গ্রেপ্তার

কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের তালিকাভুক্ত চরমপন্থি নেতা জাহাঙ্গীর কবির লিপটনকে (৪৮) তিন সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করেছে সেনাবাহিনী। এসময় ৬টি বিদেশি পিস্তল, একটি শটগান, ম্যাগজিন, গুলি ও দেশি ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।

শুক্রবার (৬ জুন) সকাল ৮টায় সদর উপজেলার উজানগ্রাম ইউনিয়নের দুর্বাচারা গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।এর আগে শুক্রবার ভোর ৪টায় থেকে তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করে সেনাবাহিনী। লিপটন বর্তমানে সেনাবাহিনীর কুষ্টিয়া ক্যাম্প হেফাজতে রয়েছে। দুপুর ১২টায় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে সেনাবাহিনীর কুষ্টিয়া ক্যাম্প।

গ্রেপ্তারকৃত জাহাঙ্গীর কবির লিপটনের অপর তিন সহযোগীরা হলেন- দুর্বাচারা গ্রামের রফিকুল ইসলাম এল্টুর ছেলে মো. রাকিব (৩৬), একই গ্রামের জহির ইসলামের ছেলে মো. লিটন (২৬) এবং আব্দুল মজিদ মো. সনেট হাসান (৩৫)। অভিযানে জব্দকৃত অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে ৬টি বিদেশি পিস্তল, ১০টি পিস্তলের ম্যাগাজিন, ২১ রাউন্ড খালি কার্তুজ বল, ১০টি দেশীয় ধারালো অস্ত্র, ৩৩ রাউন্ড ৯ এমএম পিস্তলের গুলি, ৫০ রাউন্ড ৭.৬২ এমএম এর গুলি, জার্মানির তৈরি ১টি এসএলএফ ইম্পারেটর মডেলের লং ব্যারেল বন্দুক, ১২ বোরের ৩৬ রাউন্ড গুলি, ৩টি ক্লিনিং কিট, ১টি পিস্তল কভার, ৮টি বেতের ঢাল, ৬টি দেশীয় ধারালো বল্লম।

সংবাদ সম্মেলনে কুষ্টিয়া সেনা ক্যাম্পের টু-আইসি মেজর মোস্তফা জামান জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের নামে বিভিন্ন থানায় অভিযোগ রয়েছে। তারা পেশিশক্তি প্রদর্শনের পাশাপাশি মারামারি ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল।

তিনি আরও বলেন, সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যেও ভিত্তিতে ভোর ৪টায় কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার আইলচারা ইউনিয়নের দুর্বাচারা গ্রামে জাহাঙ্গীর কবির লিপটনের বসতবাড়িতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। তবে অভিযানে ক্ষয়ক্ষতি ও নাশকতা ছাড়া অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়।

স্থানীয়রা জানায়, জাহাঙ্গীর কবির লিপটন ওই এলাকার আজিজুর রহমানের ছেলে। তার বিরুদ্ধে হত্যাসহ বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সোর্স পরিচয় দেওয়ার পাশাপাশি চরমপন্থি সংগঠন গণমুক্তিফৌজের এক সময়ের শীর্ষ নেতা ছিলেন লিপটন। ২০১২ সালের ডিএসবির তালিকায় শীর্ষ চরমপন্থি হিসেবে তার নাম রয়েছে। পরে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফের হাত ধরে প্রকাশ্যে আসেন তিনি।

লিপটনের গ্রেপ্তারের খবর ছড়িয়ে পড়লে তার নিজ এলাকায় আনন্দ মিছিল বের করে সাধারণ মানুষ। এসময় তারা লিপটনের বিচারের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Gojnobi biplob

Popular Post

মাহিন হত্যা মামলায় আরো এক আসামি গ্রেফতার হলো ফটিকছড়িতে

কুষ্টিয়া অস্ত্রসহ চরমপন্থি নেতা লিপটন গ্রেপ্তার

প্রকাশের সময় : ০৩:৪৭:৫৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৬ জুন ২০২৫

কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের তালিকাভুক্ত চরমপন্থি নেতা জাহাঙ্গীর কবির লিপটনকে (৪৮) তিন সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করেছে সেনাবাহিনী। এসময় ৬টি বিদেশি পিস্তল, একটি শটগান, ম্যাগজিন, গুলি ও দেশি ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।

শুক্রবার (৬ জুন) সকাল ৮টায় সদর উপজেলার উজানগ্রাম ইউনিয়নের দুর্বাচারা গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।এর আগে শুক্রবার ভোর ৪টায় থেকে তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করে সেনাবাহিনী। লিপটন বর্তমানে সেনাবাহিনীর কুষ্টিয়া ক্যাম্প হেফাজতে রয়েছে। দুপুর ১২টায় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে সেনাবাহিনীর কুষ্টিয়া ক্যাম্প।

গ্রেপ্তারকৃত জাহাঙ্গীর কবির লিপটনের অপর তিন সহযোগীরা হলেন- দুর্বাচারা গ্রামের রফিকুল ইসলাম এল্টুর ছেলে মো. রাকিব (৩৬), একই গ্রামের জহির ইসলামের ছেলে মো. লিটন (২৬) এবং আব্দুল মজিদ মো. সনেট হাসান (৩৫)। অভিযানে জব্দকৃত অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে ৬টি বিদেশি পিস্তল, ১০টি পিস্তলের ম্যাগাজিন, ২১ রাউন্ড খালি কার্তুজ বল, ১০টি দেশীয় ধারালো অস্ত্র, ৩৩ রাউন্ড ৯ এমএম পিস্তলের গুলি, ৫০ রাউন্ড ৭.৬২ এমএম এর গুলি, জার্মানির তৈরি ১টি এসএলএফ ইম্পারেটর মডেলের লং ব্যারেল বন্দুক, ১২ বোরের ৩৬ রাউন্ড গুলি, ৩টি ক্লিনিং কিট, ১টি পিস্তল কভার, ৮টি বেতের ঢাল, ৬টি দেশীয় ধারালো বল্লম।

সংবাদ সম্মেলনে কুষ্টিয়া সেনা ক্যাম্পের টু-আইসি মেজর মোস্তফা জামান জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের নামে বিভিন্ন থানায় অভিযোগ রয়েছে। তারা পেশিশক্তি প্রদর্শনের পাশাপাশি মারামারি ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল।

তিনি আরও বলেন, সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যেও ভিত্তিতে ভোর ৪টায় কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার আইলচারা ইউনিয়নের দুর্বাচারা গ্রামে জাহাঙ্গীর কবির লিপটনের বসতবাড়িতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। তবে অভিযানে ক্ষয়ক্ষতি ও নাশকতা ছাড়া অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়।

স্থানীয়রা জানায়, জাহাঙ্গীর কবির লিপটন ওই এলাকার আজিজুর রহমানের ছেলে। তার বিরুদ্ধে হত্যাসহ বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সোর্স পরিচয় দেওয়ার পাশাপাশি চরমপন্থি সংগঠন গণমুক্তিফৌজের এক সময়ের শীর্ষ নেতা ছিলেন লিপটন। ২০১২ সালের ডিএসবির তালিকায় শীর্ষ চরমপন্থি হিসেবে তার নাম রয়েছে। পরে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফের হাত ধরে প্রকাশ্যে আসেন তিনি।

লিপটনের গ্রেপ্তারের খবর ছড়িয়ে পড়লে তার নিজ এলাকায় আনন্দ মিছিল বের করে সাধারণ মানুষ। এসময় তারা লিপটনের বিচারের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকে।