ধর্মপাশা - মধ্যনগর (সুনামগঞ্জ)প্রতিনিধি
সুনামগঞ্জের নবগঠিত মধ্যনগর উপজেলায় এসিল্যান্ড (সহকারী কমিশনার ভূমি) পদ সৃজন ও পদায়ন না হওয়ায় তীব্র ভোগান্তিতে রয়েছেন সাধারণ মানুষ। ভূমি সংক্রান্ত নানান কাজে প্রতিদিন শত শত মানুষকে এখনো ২০ থেকে ৩০কিলোমিটার দূরে ধর্মপাশা উপজেলা ভূমি অফিসে যেতে হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা হওয়ার আগেই মধ্যনগর সদর ইউনিয়নে একটি ভূমি অফিস চালু ছিল। তবে সেটি শুধু খাজনা আদায়ের কাজ করত। নামজারি, রেকর্ড সংশোধন কিংবা অন্যান্য জটিল কাজের জন্য তখনও লোকজনকে ধর্মপাশা উপজেলা ভূমি অফিসে যেতে হতো।
বর্তমানে মধ্যনগর উপজেলায় চারটি ইউনিয়নের জন্য দুইটি ভূমি অফিস চালু রয়েছে। এর মধ্যে মধ্যনগর সদর ও চামরদানি ইউনিয়নের খাজনা গ্রহণ করা হয় সদর ভূমি অফিসে। আর বংশীকুন্ডা উত্তর ও দক্ষিণ ইউনিয়নের খাজনা সংগ্রহের জন্য মহিষখলা বাজারে নতুন একটি ভূমি অফিস খোলা হয়েছে।
এসব অফিসে একজন তহশিলদার দায়িত্ব পালন করছেন। উপজেলা সদরসহ আশপাশের ইউনিয়নের সাধারণ মানুষের অভিযোগ— নামজারি, রেকর্ড সংশোধন, জমির ওয়ারিশ সনদ কিংবা এনামপত্র সংগ্রহ করতে গেলে পুরো দিন নষ্ট হয়ে যায়। শুধু তাই নয়, যাতায়াত ভাড়া, খাওয়ার খরচ, ফাইল তৈরির অতিরিক্ত ঝামেলাও বহন করতে হয়। এতে বিশেষ করে বয়স্ক মানুষ, নারী ও দরিদ্র কৃষকেরা সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়ছেন।
স্থানীয় কৃষক হাবিবুর রহমান বলেন, সারাদিন কাজকর্ম বাদ দিয়ে ধর্মপাশায় যেতে হয় নামজারি বা অন্য কোনো কাজের জন্য। অনেক সময় আবার কাগজপত্র ঠিক না থাকায় কয়েকবার যেতে হয়। এতে আমাদের সময়, অর্থ আর শ্রম সব নষ্ট হচ্ছে। প্রশাসনিকভাবে ২০২১ সালে মধ্যনগরকে উপজেলা ঘোষণা করা হয়।
এরপর উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা নির্বাচন অফিস, সমবায় অফিস, শিক্ষা অফিসসহ বিভিন্ন দপ্তরের কার্যক্রম চালু হলেও ভূমি প্রশাসনের মূল দায়িত্বপ্রাপ্ত এসিল্যান্ডের (সহকারী কমিশনার ভূমি) পদ এখনো সৃজন হয়নি। স্থানীয়রা বলছেন, উপজেলার মধ্যে যদি পূর্ণাঙ্গ ভূমি অফিস চালু হয় তবে তাদের সময় ও অর্থ সাশ্রয় হবে।
একদিকে সরকারের রাজস্ব আদায় বাড়বে, অন্যদিকে ভূমি সংক্রান্ত জটিলতা ও দালালচক্রের দৌরাত্ম্যও কমবে। মধ্যনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) উজ্জ্বল রায় জানান, এসিল্যান্ড পদ সৃজন ও পূর্ণাঙ্গ ভূমি অফিস চালুর জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বারবার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। আশা করি শিগগিরই অনুমোদন আসবে।
নবগঠিত উপজেলা হিসেবে মধ্যনগরের মানুষ প্রশাসনিক সেবা পেলেও এসিল্যান্ডের অনুপস্থিতিতে ভূমি সংক্রান্ত পুরোনো দুর্ভোগ বয়ে বেড়াচ্ছেন। স্থানীয়দের দাবি, দ্রুত এসিল্যান্ড পদ সৃষ্টি ও পদায়নের মাধ্যমে স্থায়ী ভূমি অফিস স্থাপন করলে এ ভোগান্তি দূর হবে।