নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার নোয়াদিয়া গ্রামে পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত জমি দখল ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় স্থানীয় শান্ত মিয়া (৩৮) নামের এক ব্যক্তি গত ১ অক্টোবর কেন্দুয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, লস্করপুর মৌজার দাগ নং–১২২৬ (নতুন) ও ১১৫৮ (পুরাতন) খতিয়ানে মোট ৫ শতাংশ জমি শান্ত মিয়া তার পূর্বপুরুষদের থেকে ওয়ারিশসূত্রে প্রাপ্ত হন।
জমির দলিলপত্র সংগ্রহের পর বৈধ মালিকানা প্রমাণিত হলেও স্থানীয় মোহাম্মদ আলী (২২) ও তার মা মোছাঃ রেহানা আক্তার (৪৫) দীর্ঘদিন ধরে ওই জমি দখল করে ভোগ করছেন। বাদীর অভিযোগ, একাধিকবার স্থানীয় পর্যায়ে বিচার–সালিশের মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করা হলেও বিবাদীরা জমি ছাড়তে অস্বীকৃতি জানান। বরং তারা বাদী ও তার পরিবারের সদস্যদের ভয়ভীতি ও প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,এই বাড়ির মালিক ছিলেন শান্ত মিয়ার ফুফু আনেছা বেগম । শান্ত মিয়ারা দীর্ঘদিন ধরেই আনেছার বাড়ি তাদের পূর্বপুরুষের যায়গা দাবী করে আসছে ।
বেশ কিছুদিন পুর্বে পার্শ্ববর্তী বাড়িতে ঘটে যাওয়া একটি হত্যাকান্ডের মামলায় আনেছার ছেলেকে আসামি করা হয় এবং সেই হত্যামামলার আসামি হয়ে তার ছেলে এখন জেলে আছে ।এমতাবস্থায় মামলার খরচ চালাতে আনেছা তার আপন ভাইয়ের ছেলে শান্ত মিয়ার কাছে ২লক্ষ টাকার বিনিময়ে যায়গার মালিকানা বিক্রি করে। এলাকা ছেড়ে চলে যায়।
অন্যদিকে বাড়ির দখল নিতে গিয়ে শান্ত মিয় দেখেন রেহানা আগে থেকেই ইয়াসমিনের বাড়ি দখল করে রেখেছে। এ বিষয়ে মোছাঃ রেহানা আক্তার সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, “এই বাড়ির মালিকের কাছে আমার ১ লাখ ২০ হাজার টাকা পাওনা রয়েছে। মার্ডার মামলায় তার ছেলে আসামি হওয়ায় পর আমার থেকে মাসিক সুদে ১লক্ষ ৫ হাজার টাকা নেয় ধার ।
কিন্ত আমার টাকা না দিয়ে এখন সে বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে। আমি গরিব মানুষ, ভিক্ষা করে খাই। আমার টাকা না পাওয়া পর্যন্ত কোনোভাবেই আমি এই বাড়ি ছাড়ব না।” গত ১ অক্টোবর সকাল ১১টার দিকে শান্ত মিয়া জমি ছাড়ার দাবি করলে বিবাদীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। এসময় তারা প্রকাশ্যে জানান, জমি তারা ছাড়বেন না।
বাদী বা তার পরিবার জমিতে প্রবেশ করলে খুন–জখম করা হবে বলেও হুমকি দেন। অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, প্রয়োজনে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করে বাদীর পরিবারকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দেওয়ার হুমকিও দেন বিবাদীরা। শান্ত মিয়ার দাবি, বিবাদীগণ খারাপ প্রকৃতির লোক। তারা জোরপূর্বক জমি দখল করে রাখার পাশাপাশি এলাকায় অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করছে। এর ফলে তিনি ও তার পরিবার গুরুতর নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন।
অভিযোগপত্রে স্থানীয় কয়েকজনকে সাক্ষী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছেন—শিরিনা আক্তার (৩৫), আলাল মিয়া (৩৮), শফিকুল ইসলাম (২৫), সাইকুল ইসলাম (৩৮) ও মঞ্জুরা খাতুন (৬০)। এ বিষয়ে কেন্দুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, অভিযোগটি প্রাথমিকভাবে গ্রহণ করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।