নেত্রকোণা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার ০৪নং গড়াডোবা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৭, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য মোসাঃ মঞ্জুরা আক্তারকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের ইউপি-১ শাখা থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়। প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে, মঞ্জুরা আক্তার ইউপি প্রশাসক, প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও অন্যান্য সদস্যদের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ভুঁইফোঁড় পত্রিকায় কুরুচিপূর্ণ ও অশ্লীল ভাষায় বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করেছেন।
এর ফলে সংশ্লিষ্ট সবার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে এবং সরকারকেও বিতর্কিত করার অপচেষ্টা চালানো হয়েছে। অভিযোগের বিষয়ে জেলা প্রশাসক, নেত্রকোণা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগে সুপারিশ করেন।
পরে বিষয়টি খতিয়ে দেখে স্থানীয় সরকার বিভাগ মনে করে, তার দ্বারা ইউপি কার্যক্রম পরিচালনা প্রশাসনিক দৃষ্টিকোণে সমীচীন নয়। ফলে স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯ এর ৩৪(৪)(খ) ও (ঘ) ধারার আলোকে তার কার্যক্রম জনস্বার্থবিরোধী বিবেচিত হওয়ায় পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। উপসচিব মো: নূরে আলম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, এই আদেশ যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে জনস্বার্থে জারি করা হয়েছে এবং তা অবিলম্বে কার্যকর হবে।
এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনের অনুলিপি স্থানীয় সরকার বিভাগের মাননীয় উপদেষ্টার একান্ত সচিব, জেলা প্রশাসক নেত্রকোণা, সচিবের একান্ত সচিব, উপজেলা নির্বাহী অফিসার কেন্দুয়া এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে। বরখাস্তকৃত সদস্য মঞ্জুরা আক্তারের নিকটও একটি কপি প্রেরণ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি হালিম উদ্দিন বলেন, “ইউনিয়ন পরিষদের মর্যাদা রক্ষায় সরকারের এ সিদ্ধান্ত সঠিক সময়ে নেয়া হয়েছে। এতে পরিষদের কাজের পরিবেশ স্বাভাবিক থাকবে।” অন্যদিকে, এলাকাবাসীর একাংশ মনে করছে, শুধুমাত্র অভিযোগের ভিত্তিতে কঠোর সিদ্ধান্ত নেয়ায় এটি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার সুযোগ করে দিতে পারে।
এক গ্রামবাসী বলেন, “আমরা চাই, ঘটনার সঠিক তদন্ত হোক। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে স্থায়ী ব্যবস্থা নেয়া হোক।” অপরদিকে, সাময়িক বরখাস্ত হওয়া সদস্য মঞ্জুরা আক্তার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
আমি কোনো অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করিনি। আমি শুধু ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে জনগণের সামনে কথা বলেছি বলেই আমাকে টার্গেট করা হয়েছে।” প্রশাসনিক মহল অবশ্য মনে করছে, নির্বাচিত প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি রক্ষা ও জনস্বার্থ নিশ্চিত করতেই এ ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া জরুরি হয়ে পড়েছিল।