গত কাল ২০ জুন শুক্রবার কেন্দুয়া পৌরসভার বাদে আঠারো বাড়ি এলাকায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে বাদে আঠারো বাড়ি গ্রামের আব্দুর রাশেদের ছেলে কেন্দুয়া পৌর বিএনপির সভাপতি, মেসার্স নাহার ট্রেডার্স এর প্রোপাইটর মোঃ খোকন আহাম্মেদ(৫০),এর গোডাইন থেকে ১৫টন ২০০ কেজি সরকারি চাল জব্দ করেছে যৌথ বাহিনী।
নাহার ট্রেডারর্সের গোডাউনে অবৈধভাবে সরকারি চাল মজুদ করা আছে। এ তথ্যের ভিত্তিতে মদন আর্মি ক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডার বিএ-১২৩৬৯ লেঃ জামিউল ইসলাম সাকিব ৬৩ ইষ্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী ও কেন্দুয়া থানা পুলিশের সমন্বয়ে টানা ৭ ঘন্টা ব্যাপি একটি অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান পরিচালনা করাকালিন সময়ে সংবাদ পাওয়া যায় যে কেন্দুয়া পৌর বিএনপির সভাপতি ও মেসার্স নাহার ট্রেডার্স এর প্রোপাইটর মোঃ খোকন আহাম্মেদ অভিযানের সংবাদ পেয়ে দ্রুততম সময়ে গাড়িতে (হ্যান্ডট্রলী) তে করে সরকারী চালের বস্তা সরিয়ে ফেলতেছে।
চাল বোঝাই কৃত হ্যান্ডট্রলি কেন্দুয়া পৌরসভা থেকে বের হয়ে সান্দিকোনা ইউনিয়নের বঙ্গানিয়া মোর পর্যন্ত চলে গেলে সেনাবাহিনীর অভিযানিক দল ট্রলীর পিছন পিছন গিয়ে সরকারী চাল ভর্তি হ্যান্ডট্রলীটি আটক করেন এবং আটককৃত হ্যান্ডট্রলীটি পূনরায় কেন্দুয়া পৌর বিএনপির সভাপতি ও মেসার্স নাহার ট্রেডার্স এর প্রোপাইটর মোঃ খোকন আহাম্মেদ এর গোডাউনের সামনে নিয়ে আসেন।
অভিযান পরিচালনা করা কালে মেসার্স নাহার ট্রেডার্স এর গোডাউন ও গোডাউন থেকে সরিয়ে ফেলার উদ্দেশ্যে বের করে দেওয়া আটককৃত হ্যান্ডট্রলী থেকে ৫০ কেজি ওজনের মোট ৩০৪ বস্তা ১৫শত ২০০ কেজি অবৈধভাবে মজুদকৃত সরকারী চাল আটক মূলে জব্দ করা হয়।
অভিযান পরিচালনা করা কালে মেসার্স নাহার ট্রেডার্স এর প্রোপাইটর ও কেন্দুয়া পৌর বিএনপির সভাপতি মোঃ খোকন আহাম্মেদকে বারবার মোবাইল ফোন ও বিভিন্ন মাধ্যমে উপস্থিত হওয়ার জন্য বলা হলেও তিনি উপস্থিত হন নাই। এ জন্য তাকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
কেন্দুয়া পৌর বিএনপির সভাপতি ও মেসার্স নাহার ট্রেডার্স এর প্রোপাইটর মোঃ খোকন আহাম্মেদ এর গোডাউন থেকে জব্দকৃত চালের বিবরণঃ নীল প্লাস্টিকের বস্তা=১৪ টি। সাদা প্লাস্টিকের বস্তা=৫০টি। হলুদ রংয়ের বস্তা=২০টি। খাদ্য অধিদপ্তরের বস্তা=১৩৬ টি। প্লাস্টিকের সাদা বস্তা= ৫৬ টি। খাদ্য অধিদপ্তরের পাটের বস্তা =৪৯ টি। সাদা প্লাস্টিকের বস্তা=০৭ টি। টিসিবি প্লাস্টিকের বস্তা=১৯ টি। সাদা প্লাস্টিকের বস্তা=২৮ টি। প্লাস্টিকের বস্তা=১৭ টি প্লাস্টিকের নীল বস্তা=০৫ টি। যার মূল্যঃ (বর্তমান বাজার ৪২ টাকা অনুযায়ী) ৬ লক্ষ ৩৮ হাজার ৪০০ টাকা মাত্র।
যৌথবাহিনী ৩০৪ বস্তা চাল কেন্দুয়া উপজেলা প্রশাসনের নিকট হস্তান্তর করে। এ ছাড়াও অভিযানে অভিযুক্ত কেন্দুয়া পৌর বিএনপির সভাপতি মোঃ খোকন আহাম্মেদ এর নামে এখন পর্যন্ত কোন প্রকার মামলা রুজু হয় নাই।
কেন্দুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান জানান, “এই ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার দেখানো হয়নি কেউ বাদি হয়ে এখনো কোনো মামলা দায়ের করেনি। প্রাথমিক ভাবে তিনজনকে আটক করা হলেও পরিবারের জিম্মায় তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
কেন্দুয়া উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, জব্দকৃত চাউলগুলো ছিল ডিলার রেশন (ডি.আর) কর্মসূচির আওতাভুক্ত, যা বিধি লঙ্ঘন করে একত্রে মজুদ রাখা হয়েছিল বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
নাহার এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী কেন্দুয়া পৌর বিএনপির সভাপতি খোকন আহম্মেদের কাছে এ বিষয়ে তার বক্তব্য জানতে একাধিকবার মোঠোফুনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ক্ষমতার দাপটে দীর্ঘদিন ধরেই ওই গোডাউনে সরকারি চাল মজুদের আড়ালে অনিয়ম চলছিল। প্রশাসনের এই অভিযানের ফলে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিএনপি নেতা জানায়, খোকন ডিলার প্রভাবশালী এক নেতার ঘনিষ্ট লোক । অনিয়ম হাতেনাতে প্রমাণ পাওয়ার পরেও তার প্রভাবে এখনো কোন মামলা রুজু হয়নি। ঘটনাস্থল থেকে তিনজনকে আটক করা হলেও থানা পুলিশ তাদের নামে কোন মামলা না নিয়ে জিম্মায় ছেড়ে দিয়েছে।ওসি সাহেব পুলিশ প্রশাসনকে প্রশ্নবিদ্ব করেছেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক:- গজনবী বিপ্লব
নেত্রকোণা অফিস:- গজনবী ভিলা, সাতবেরিকান্দা, নেত্রকোণা সদর, নেত্রকোণা